বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
২ মাঘ ১৪৩১
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকায় ৯০ হত্যা মামলা
প্রকাশ: সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪, ১২:০০ এএম |


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চারজনকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও চারটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ একাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসব মামলা করা হয়।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে প্রথম মামলা করা হয়। আদালত মোহাম্মদপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
গত ১৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার নামে ৯০টি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৫৫টি ও ঢাকার নিম্ন আদালতে ৩৫টি হত্যা মামলা হয়েছে বলে প্রসিকিউশন বিভাগ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে। এসব মামলায় সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
সাভারে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছ থেকে গুলি করে মিলিটারি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ইয়ামিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে এ মামলা করেন নিহতের মামা আব্দুল্লাহ আল কাবির। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সাভার থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষে মামলা দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান মারুফ ও সাকিল আহমাদ।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, পুলিশের সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) আসাদুজ্জামান।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয় যে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছে নিয়ে দুপুর ১ টাকা ৩০ মিনিটে বুকের বামপাশে গুলি করে। বন্দুকের গুলিতে ইয়ামিনের বুকের বামপাশে অসংখ্য গুলির স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে মারা যান।
বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীর শনিরআখড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রেতা মো. ইউসুফ সানোয়ারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে যাত্রাবাড়ী থানা-পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে নিহতের শ্যালক মামুনুর রশীদ মামলাটি করেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোহাব্বত আলী।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, গত ২০ জুলাই দুর্ঘটনায় ইউসুফ সানোয়ারের ছোট ভাইয়ের হাত কেটে যায়। তিনি তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা শেষে ১১টার দিকে শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ডে আসেন। সেখানে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী ও লাকসাম থানা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মীরা তাকে ধাওয়া করে। তারা এসময় ইউসুফকে বিএনপির সদস্য জানিয়ে পুলিশকে গুলি করতে প্ররোচিত করে। এরপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হন ইউসুফ। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকা-ে কারা অভ্যন্তরে বিডিআরের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুর রহিমের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান (হত্যাকা-ের সময় বিজিবি প্রধান) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি নথিভুক্তের আদেশ দেন।
রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে বাদী হয়ে মামলার জন্য এ আবেদন করেন ভুক্তভোগী ডিএডি আব্দুর রহিমের ছেলে অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ।
মামলার বাদী আব্দুল আজিজ বলেন, পিলখানা হত্যাকা-ে কারা অভ্যন্তরে বিডিআরের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) আব্দুর রহিমের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেনাপ্রধান (হত্যাকা-ের সময় বিজিবি প্রধান) জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি নথিভুক্তের আদেশ দেন।
বর্তমান সরকারের সময় পিলখানা হত্যাকা- নিয়ে প্রথম মামলা হচ্ছে এটি। এ মামলায় জেনারেল আজিজ আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আর দ্বিতীয় আসামি হলেন-বিডিআর বিদ্রোহের মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মোশাররফ হোসেন কাজল, আসামির তালিকায় শেখ হাসিনা রয়েছেন চতুর্থ স্থানে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে তাদের বিদেশি এজেন্ট দ্বারা ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ রাইফেলসের মেধাবী অফিসারদের হত্যা করে। ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাকা-ে ৫৭ জন সেনা অফিসারসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকা-ের রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য ভুক্তোভোগীকে বিভিন্ন লোভনীয় অফার দেওয়া হচ্ছিল। তবে তিনি অন্যায় ও মিথ্যা রাজসাক্ষী দিতে চাননি। তাই বাদীর পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডিএডি আব্দুর রহিমকে ২০১০ সালের ২৯ জুলাই ঢাকা কেন্দ্রীয় করাগারে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। পরে কারাগারে ডাক্তাররা স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে সার্টিফিকেট দেন। আব্দুর রহিমের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে এ মামলা করা হয়।
অটোরিকশাচালক বাবু মোল্লাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতের ভগ্নিপতি মাসুদ রানা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে এ মামলার আবেদনটি হাতিরঝিল থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী আরাফাত এ রহমান, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. ওয়াকিল উদ্দিন।
এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই মামলার ভুক্তভোগী বাবু মোল্লা তার ভগ্নিপতি মাসুদ রানার সঙ্গে জুমার নামাজ পড়তে যান। পরে নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার পথে আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে গুলিবিদ্ধ হয়ে হত্যাকা-ের শিকার হন।















সর্বশেষ সংবাদ
পদত্যাগ করলেন টিউলিপ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
দুটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসী আটক
কুমিল্লায় দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লা মেডিকেল ছেড়ে কোথায় গেলো শিশুটি?
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে পুলিশে সোপর্দ
প্লাস্টিক জমা দিন গাছের চারা নিন
কুমিল্লায় ‘প্রেমিকের’ সাথে দেখা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার দুই নারী
অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২