স্টাফ রিপোর্টার।। লন্ডন
পালানোর চেষ্টা করছেন পালিয়ে আত্মগোপনে যাওয়া সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন
বাহার ও তার মেয়ে অপসারিত মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা। সেই সাথে লন্ডনে
পালানোর চেষ্টা করছেন বাহারের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা বাহারও। বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র-জনতার গণঅভূ্যূত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরই সীমান্ত পথে তারা
ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু বাহারের ছোট দুই
মেয়ে আয়মান বাহার সোনালী ও আজিজা বাহার ঢাকাতেই রয়েছেন।
জানা গেছে,
সাবেক এমপি বাহারের কাছে কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া আর অন্য কোনো পাসপোর্ট
নেই। ফলে ভারতে যদি পালিয়ে গিয়েও থাকেন তাহলেও লন্ডনে সহজেই যেতে পারছেন না
এই সাবেক এমপি। অন্তবর্তীকালীন সরকার ইতিমধ্যেই বাহার ও তার স্ত্রী
মেহেরুন্নেসার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। ফলে তাদের কূটনৈতিক
পাসপোর্টে লন্ডন ও কানাডার ভিসা থাকলেও তা আর কার্যকর নেই। তারা চাইলেও
বৈধভাবে লন্ডন যেতে পারবেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিতর্কিত
ট্রলের শিকার হওয়া মেয়ে সূচনার সাধারন পাসপোর্টে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত
লন্ডনের ভিসা রয়েছে। ফলে তিনি কোনভাবে লন্ডনে গিয়ে শরনার্থী হওয়ার আবেদন
করতে পারবেন। লন্ডনে ফোন করে বাহার ইতিমধ্যে বাসা ভাড়া নেওয়ার জন্য তার
ঘনিষ্ঠদের সাথে যোগাযোগও করেছেন।
তবে হতাশার কথা বিভিন্ন সূত্রে জানা
গেছে যে, শরনার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে তার নিজ দেশ থেকে সরাসরি
লন্ডনে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে সেই পথও অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে সূচনার জন্য।
পালিয়ে
যাওয়া সাবেক এমপি বাহার, তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা ও মেয়ে সূচনা যদি ভারতে
পালিয়ে থাকেন তাহলে তারা ভারতে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটিয়ে ফেলেছেন। এই
অবস্থায় তাঁদের ভারতে অবস্থানের সময় নিয়ে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ জন্য
সাবেক এই এমপির পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা চলছে।
উল্লেখ্য,
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি শেখ হাসিনা, তাঁর
উপদেষ্টামণ্ডলী, সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সব
সদস্যের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। একই সঙ্গে তাঁদের স্ত্রী ও
সন্তানদের কূটনৈতিক পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এ
দিকে ভারতের সরকারি সূত্র বলছে, ভারতের ভিসা নীতি অনুযায়ী, বাংলাদেশি
কূটনীতিক বা কর্মকর্তাদের সরকারি পাসপোর্ট থাকলে তাঁরা ভিসা ছাড়াই ভারতে
আসতে পারেন। তাঁরা চাইলে টানা ৪৫ দিন ভারতে থাকতে পারেন। কূটনৈতিক পাসপোর্ট
বাতিল এবং এই পাসপোর্টের কারণে সাবেক এমপি বাহারের পাওয়া ভিসাসুবিধা
ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে এবং এটি তাঁকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের মতো ঝুঁকিতেও
ফেলতে পারে। ইতিমধ্যে কুমিল্লা ও ঢাকায় তাঁর বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে,
যার মধ্যে ৩টি হত্যা মামলা।
অপর দিকে বাহারের অনুসারীদের অনেকে অবৈধভাবে
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। তারা নিজেদের মধ্যে
যোগাযোগ করলে বাহারের রাজনীতিকে সমর্থন করা নেতাকর্মীরা আছেন বিপদে। কেউ
তাদের সাথে যোগাযোগও করছে না এবং খবর নিচ্ছে না। ফলে তারা বাহারের এই
কাণ্ডে চরমভাবে ক্ষুব্ধ। আত্মগোপনে দুর্ভোগের মধ্যে থেকে অনেকেই তার
দৃষ্টান্তমূলক বিচারের জন্য প্রার্থনা করছেন।