১
সেপ্টেম্বর ২০২৪ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা
বার্ষিকী। ১৯৭৮ সালের এই দিনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, মহান স্বাধীনতার ঘোষক
জেনারেল জিয়াউর রহমান বীরউত্তম এর নেতৃত্বে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী দেশের রাজনৈতিক
অস্থিতিশীলতা, দুর্ভিক্ষের হাত থেকে দেশকে রক্ষা, একদলীয় শাসন ব্যবস্থার
অবসান ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করে ১৯ দফা কর্মসূচী
নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অগ্রযাত্রা শুরু করে।
দীর্ঘ এই ৪৬
বৎসর বিএনপি’র পদ পরিক্রমায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর
রহমান এর শাহাদাৎ পরবর্তী তাঁর বিধবা পত্নি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার
হাত ধরে এই দলটি বাংলাদেশের এরশাদ বিরোধী স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বারবার অধিষ্ঠিত হয়। ১৯৯১ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা
জিয়া জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রকে
পুনরুজ্জীবিত করেন। একই ধারায় ২০০১ সালে পুনরায় বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়
অধিষ্ঠিত হলে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হলে ২০০৮
সাল হইতে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার সূচনা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী
স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগনের ভোটাধিকার হরণ করে দেশনেত্রী
বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবাস সহ উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রেখে দীর্ঘ ১৭
বৎসর গণতন্ত্রের নামে একদলীয় আওয়ামী শাসন ব্যবস্থা চলাকালীন গণতন্ত্র
পুনরুদ্ধারে বিএনপি’র ভূমিকা ছিল অপরিসীম। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা ও
বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সমন্বিত আন্দোলনের মুখে আওয়ামী
দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর নেতৃত্বে সকল রাজনৈতিক দলের
সমর্থনে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক, আওয়ামী দুর্নীতি সহ সকল
ক্ষেত্রে সংস্কারের অঙ্গীকার করে বর্তমানে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমুন্বত করণে এগিয়ে চলেছে।
৪৬ তম
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুড়িচং থানার মোকাম ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে
অদ্য দুপুর ১২ টায় পীরযাত্রাপুর ও রাজাপুর ইউনিয়নে বন্যার্তদের মাঝে প্রায় ৩
হাজার লোকের দুপুরের খাবারসহ সুপেয় পানি ও অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রি নিয়ে
রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ
কার্যক্রম শুরু হয়। উক্ত আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন রাজাপুর ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাকালীন
বিএনপি’র অন্যতম সংগঠক, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা,
কুমিল্লা জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি, জেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক
সম্পাদক, ৮০’র দশকের স্বৈরাচার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বৃহত্তর
কুমিল্লার ছাত্র-যুব সংগঠক, ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের
প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ড. শাহ্ মোঃ সেলিম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বুড়িচং
থানার সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা কবির হোসেন, বক্তব্য রাখেন- মোকাম ইউনিয়ন
বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন, রাজাপুর
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবাস ফেরত ইঞ্জিনিয়ার তাজুল ইসলাম, মোকাম
ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ সুয়া মিয়া মেম্বার, বুড়িচং
থানা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেম্বার আব্দুল খালেক, বুড়িচং থানা
সাবেক ছাত্র নেতা মোঃ খোরশেদ আলম সহ অন্যান্য থানা ও ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ও ব্রাহ্মণপাড়া থানা
বিএনপি’র সভাপতি জনাব মোঃ জসিম উদ্দিন ভার্চুয়ালী এই সভায় যোগদান করে মোকাম
ইউনিয়ন বিএনপি’র নেতৃবৃন্দসহ উপস্থিত সকলকে এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করায়
ধন্যবাদ জানান।
প্রধান অতিথির ভাষণে ড. শাহ্ মোঃ সেলিম বলেন, বিএনপি’র
৪৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে স্মরণ করে দলীয় ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে মোকাম ইউনিয়ন বিএনপি’র পক্ষ থেকে
বন্যার্তদের পাশে থাকার প্রয়াসে আজকের এই আয়োজন। তিনি কুমিল্লা ও নোয়াখালী
জেলার বিভিন্ন এলাকায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দল ও
সংস্থার মাধ্যমে বন্যার্তদের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করায় দেশনেত্রী
বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও
কৃতজ্ঞতা জানান। দেশের যেকোনো দুর্যোগে বিএনপি জনগনের পাশে থাকবে বলে
অঙ্গীকার করেন। তিনি বন্যা পরবর্তী ২২ আগস্ট হইতে ২টি মেডিকেল টিম বুড়িচং,
কসবা, লাকসাম সহ বন্যার্ত এলাকার জনগনের মাঝে ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল সেনাবাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় বিনামূল্যে ঔষধসহ চিকিৎসা সেবা
প্রদান করে আসছে মর্মে উল্লেখ করেন। ভবিষ্যতেও বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবার
আশ^াস প্রদান করেন। তিনি মোকাম ইউনিয়নের সকল নেতৃবৃন্দের এই আয়োজনে সন্তোষ ও
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।