বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
১৬ মাঘ ১৪৩১
অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের গ্রেপ্তার চলছে-
সাবেক এমপি বাহার-সাবেক মেয়র সূচি এখন কি করবেন?
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:০৮ এএম আপডেট: ০৭.০৯.২০২৪ ১:৫৫ এএম |

সাবেক এমপি বাহার-সাবেক মেয়র সূচি এখন কি করবেন?বাংলাদেশ থেকে ভারতে আত্মগোপনে যাওয়া অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা এখন আছেন নতুন আতঙ্কে। স্থানীয় পুলিশ এখন এই অবৈধ প্রবেশকারীদের গ্রেপ্তার করছে। গত কয়েকদিনে গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত দুই ডজন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশী। এদিকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে ভারতে আত্মগোপনে থাকা সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মেয়র, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী নেতারা এখন ভারতেও গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তারা স্থান পরিবর্তন করছেন এবং সেখানকার আধার কার্ড বানানোর চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের কথা চিন্তা করছেন। 
সূত্র জানায়, কুমিল্লার স্থলবন্দরের মাধ্যমে ভিসা দিয়ে বৈধভাবে যাওয়ার সময় আঙ্গুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) ও চোখের রঙিন পর্দার ছবি (আইরিশ) নেওয়ার পর পাসপোর্টে সিল দেওয়া হয়। শুধু কুমিল্লা নয়, ভারত ও বাংলাদেশের সব স্থলবন্দর দিয়ে যাওয়ার সময় ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও আইরিশ নেওয়া হয়। কুমিল্লার বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে যাওয়ার সময় শুধুমাত্র ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হয়। কেন না আইরিশ মেশিন আসলেও এখনও চালু হয়নি। তবে শ্রীমন্তপুরে ভারতীয় স্থলবন্দরে তা চালু আছে। ফলে বৈধভাবে যে কেউ যে কোন সীমান্ত দিয়েই যান না কেন, তার সব তথ্য সব সীমান্তের ডাটাবেজে থাকবে।
সূত্র জানায়, যারা অবৈধভাবে ভারতে গেছেন তাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট, আইরিশ ও পাসপোর্টে সিল নেই। তারা চাইলে গোপনে অর্থের বিনিময়ে তা করতে পারবেন- এমন সুযোগও নেই। ফলে তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে থেকে যাবেন এবং গ্রেপ্তার হলে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযুক্ত হবেন অথবা ভারত সরকার চাইলে বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে ফেরত পাঠাতে পারবেন। ফলে বাংলাদেশ থেকে আত্মগোপনে গিয়ে খানিক স্বস্তিতে থাকলেও বড় অস্বস্তি এখন গ্রেপ্তার আতঙ্ক। এই গ্রেপ্তার আতঙ্ক এড়াতে এখন রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই অনেকের। আর এ জন্য আবেদন করতে হবে দিল্লিতে।
সূত্র জানায়, কুমিল্লা থেকে অবৈধ পথে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে অপসারিত মেয়র তাহসীন বাহার সূচনা এখন গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন। তারা এখন আর চলাফেরাও করতে পারছেন না। সাবেক এমপি বাহারের কাছে কূটনৈতিক পাসপোর্ট থাকলেও তা ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে। ফলে তিনি বৈধভাবে আরো কিছুদিন ভারতে থাকতে পারলেও অন্য কোন দেশে যেতে পারবেন না। তাছাড়া কথা হলো- তিনি ভারতে কিভাবে প্রবেশ করেছেন? তিনি ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেছেন কি না? সেটি এখন বড় প্রশ্ন। অন্যদিকে তার মেয়ে অপসারিত মেয়র সূচির সাধারণ পাসপোর্টে ভারতে যাওয়ার কোনো সীল নেই। ইমিগ্রেশনও সম্পন্ন করেননি। ফলে তিনি প্রবেশের পরপরই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আছেন। ভারতের কোলকাতায় তারা দুইজনই অবস্থান করার খবর পাওয়া গেলেও কেউই বৈধভাবে আর অন্য কোনো দেশে যেতে পারবেন না। সাবেক এমপি বাহারের কূটনৈতিক পাসপোর্টে কানাডার ভিসা ও মেয়ে সূচির সাধারণ পাসপোর্টে কানাডার ভিসা রয়েছে। সূচির ইউকে’র ভিসার মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন তারা চাইলেও ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে বৈধভাবে কানাডায় উড়াল দিতে পারবেন না। ভারতের বিমানবন্দরে তাদেরকে আটকে দেওয়া হতে পারে, ভারতে প্রবেশের বৈধতা দেখাতে না পারলে। ফলে এখন তারা কি করবেন সেটিই বড় প্রশ্ন। তাদের সামনে এখন একটি পথ খোলা আছে আর সেটি হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম)। 
এমতাবস্থায় আলোচনায় আছে রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম)। কী এই ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’? কী ভাবে পাওয়া যায় তা? কারা রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে পারেন? কোন পরিস্থিতিতে চাওয়া যাবে রাজনৈতিক আশ্রয়? ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার ১৪(ক) অনুচ্ছেদ বলা হয়েছে, নিজ রাষ্ট্রে রাজনৈতিক বা আদর্শগত কারণে কেউ যদি বিপন্ন বোধ করেন, তা হলে নিপীড়ন, প্রাণসংশয় কিংবা গ্রেফতারি এড়াতে অন্য রাষ্ট্রে আশ্রয়ের আবেদন জানাতে পারেন তিনি। শরণার্থী বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তর্জাতিক চুক্তির অন্তর্ভুক্ত সব দেশই রাজনৈতিক আশ্রয়প্রদানের সব ন্যায্য দাবি মেনে নিতে বাধ্য। তবে সেই আশ্রয়ের দাবিটি আদৌ বৈধ কি না, তা যাচাই করার অধিকার দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের হাতেই। নিজের দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা গুপ্তচরবৃত্তির মতো অভিযোগ থাকলে সেই ব্যক্তির আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সহজে বললে, রাজনৈতিক আশ্রয় হল আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত একটি অধিকার। কোনও দেশ চাইলে ভিন্ন দেশের নাগরিককে নিজের দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে। এই নিয়ম অনুযায়ী, কেউ যদি রাজনৈতিক মতাদর্শগত কিংবা ধর্মীয় কারণে নিজের দেশ থেকে বিতাড়িত হন, তা হলে অনুমতি সাপেক্ষে অন্য দেশে সুরক্ষামূলক আশ্রয় নিতে পারেন, পেতে পারেন সাময়িকভাবে সে দেশে প্রবেশ ও বসবাসের অনুমতি।
উদাহরণ দিয়ে বলতে গেলে, ধরা যাক জনৈক ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিক নিজের দেশে নিরাপদ বোধ করছেন না। তিনি যদি ভারতের কাছে আশ্রয় চান এবং নয়াদিল্লি তা অনুমোদন করলে ওই ধরনের আশ্রয়কে বলা হবে রাজনৈতিক আশ্রয়। তবে এ ক্ষেত্রে রয়েছে বেশ কিছু জটিলতাও। মনে রাখা দরকার, কোনও দেশ কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে বাধ্য নয়। নিজের স্বার্থ বিবেচনা করে এ ধরনের যে কোনও আবেদন প্রত্যাখ্যানেরও অধিকার রয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশেরই হাতে।
রাজনৈতিক আশ্রয় দু’প্রকার। দেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় এবং কূটনৈতিক আশ্রয়। অতীতেও ভিন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। যেমন রুশ শাসক জোসেফ স্টালিনের কন্যা স্বেতলানা আলিলুয়েভা ১৯৬৬ সালে ভারতে আশ্রয় না পাওয়ার পর শেষমেশ রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন আমেরিকায়। ইরানের শাসক ‘শাহ’ মহম্মদ রেজা পাহলভি ১৯৭৯ সালে ইরান বিপ্লবের পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে একাধিকবার বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়ে শেষে থিতু হন মিশরে। ২০১৩ সালে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন আমেরিকান সাইবার গোয়েন্দা আধিকারিক এডওয়ার্ড জোসেফ স্নোডেন।
এদিকে ২ সেপ্টেম্বর ভারতের আগরতলা থেকে অবৈধভাবে প্রবেশকারী হিসেবে তিন বাংলাদেশীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে আগরতলার আর এস এস চৌমুহনী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- তাসলিম, ইমরান ও জাসিফ। তাদের বাড়ি কক্সবাজার। তাদেরদকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আগরতলার খবর এখন টিভি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।  পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার কলকলিয়া বিওপি এলাকা থেকে এক অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বিএসএফ জওয়ানরা। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দা।












সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লায় দুদকের গণশুনানী আজ
ট্রেন বন্ধের খবর জানতেন না কুমিল্লার অনেক যাত্রী
সমঝোতা হয়নি, কর্মবিরতিতে অনড় রেলকর্মীরা
দেশে ফেরেই গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাদ্দাম
মেঘনায় থামছেনা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় একদিনে ৩ মরদেহ উদ্ধার
নতুন চাষ পদ্ধতিতে লাভের সম্ভাবনা দেখছেন মেঘনার চরের কৃষকরা
কুমিল্লায় তথ্য মেলার উদ্ধোধন
হেফাজতে ইসলাম, কুমিল্লা জেলা ও মহানগরের প্রতিনিধি সম্মেলন
লালমাই পাহাড় ধ্বংসের বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২