বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫
২ মাঘ ১৪৩১
তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যা
প্রকাশ: সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:১৭ এএম |

তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যা
বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বহু অমীমাংসিত সমস্যা রয়ে গেছে। এর মধ্যে যে সমস্যাটি দীর্ঘ আলোচনার পরও অমীমাংসিত আছে, তা হলো তিস্তার পানিবণ্টন। তিস্তা থেকে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল আজ মরতে বসেছে। সেখানে এরই মধ্যে মরুকরণ প্রক্রিয়া স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
তিস্তার পানি এখন দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য জীবন-মরণ সমস্যা হিসেবেই দেখা দিয়েছে।
তিস্তার অনেক কিছুই আজ কেবল স্মৃতি। বড় বড় স্টিমার চলাচল করত এই নদীতে। নদীকেন্দ্রিক বাণিজ্যের কারণে উত্তরবঙ্গের অনেক বন্দর ছিল জমজমাট।
এখন বছরের বেশির ভাগ সময় নদীটি শুকিয়ে থাকে। নৌকাও চলতে পারে না। নদীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মরছে নদীকেন্দ্রিক বাংলাদেশও। উত্তরবঙ্গে শুরু হয়েছে মরুকরণ প্রক্রিয়া।
শস্য উৎপাদনে পড়ছে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নামছে। শুষ্ক মৌসুমে গভীর নলকূপেও ঠিকমতো পানি ওঠে না। ভারতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসা বাংলাদেশের অর্ধশতাধিক নদীরই আজ এমন দুরবস্থা। শীতকালে বেশির ভাগ নদীতেই পানির প্রবাহ থাকে না।
ফলে দক্ষিণবঙ্গে সমুদ্রের নোনা পানি ক্রমেই দেশের অভ্যন্তরে বিস্তৃত হচ্ছে। সেখানেও কৃষি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ফলে এটি আজ অবধারিত সত্য যে অভিন্ন নদীগুলোর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা না গেলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব ক্রমেই হুমকির মুখে পড়বে। অথচ দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে দীর্ঘকাল ধরে আলাপ-আলোচনা চললেও বাংলাদেশের জন্য কোনো সুখবর এখনো তৈরি হয়নি। তিস্তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির ওপর। তিস্তাপারের হাজার হাজার হেক্টর জমি বোরো মৌসুমে পতিত থাকে।
এ অবস্থায় বাংলাদেশকে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের কথাও ভাবতে হবে। উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও অর্থনীতি শুধু নয়, প্রকৃতি-পরিবেশের ওপরও তিস্তার প্রভাব রয়েছে। কাজেই একটি এলাকার ভূ-প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই।
২০১১ সালে ঢাকায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময় তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষর অনেকটা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এই চুক্তিকে অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে আর চুক্তি হয়নি। সম্প্রতি ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য দূর করার উপায় নিয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকার আলোচনা করবে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টনের বিষয়টি অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হতে হবে উল্লেখ করেছেন ড. ইউনূস। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর অধিকার সমুন্নত রাখার সুনির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি মেনে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রয়েছে এবং আমরা সেই অধিকার চাই।’
অভিন্ন নদীগুলোর পানি সমস্যা, বিশেষ করে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে ভারত আমাদের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও তা রক্ষা করেনি। একের পর এক নানা অজুহাতে তারা কেবল সময়ক্ষেপণ করছে। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের মরুকরণ প্রক্রিয়া এবং দক্ষিণবঙ্গে নোনা পানির বিস্তৃতি ক্রমেই বাংলাদেশের প্রকৃতি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। এ সমস্যা ১৬ কোটি মানুষের বাঁচা-মরার সমস্যা। এ নিয়ে কালক্ষেপণের কোনো সুযোগ নেই। তাই দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলকেও এর সঙ্গে সংযুক্ত করা আজ জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার সঠিক পদক্ষেপ নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।













সর্বশেষ সংবাদ
পদত্যাগ করলেন টিউলিপ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
দুটি পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রসহ দুই সন্ত্রাসী আটক
কুমিল্লায় দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুমিল্লা মেডিকেল ছেড়ে কোথায় গেলো শিশুটি?
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে পুলিশে সোপর্দ
প্লাস্টিক জমা দিন গাছের চারা নিন
কুমিল্লায় ‘প্রেমিকের’ সাথে দেখা করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার দুই নারী
অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার অভিযোগ
কুমিল্লার দুর্ধর্ষ কিশোর গ্যাং ‘রতন গ্রুপের’অন্যতম সদস্য মাইনুদ্দিন আটক
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২