স্টাফ রিপোর্টার।। আত্মগোপনে থাকা কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে খুশি করতে কুমিল্লার সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় ও সদস্যদের পছন্দের পত্রিকা দৈনিক কুমিল্লার কাগজ কুমিল্লা ক্লাবে রাখা বন্ধ করেছিল তার অনুগত কমিটির সদস্যরা। কুমিল্লার বিশিষ্ট নাগরিকদের এ ক্লাবের সদস্যদের দাবির মুখে রবিবার (৮সেপ্টেম্বর) থেকে কুমিল্লা ক্লাবে রাখা হচ্ছে দৈনিক কুমিল্লার কাগজ। সেই সাথে রাখা হচ্ছে জাতীয় তিনটি পত্রিকাও। সাবেক সংসদ সদস্য বাহারের কৌশলী নিয়ন্ত্রণে থাকা এ ক্লাবে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাসহ নানা আয়োজন রেখেছিল অনুগত তল্পিবাহকরা। তাকে খুশি করতে রুম বরাদ্দসহ যা যা করা দরকার তাই করতেন তারা। সাবেক এমপি বাহার পছন্দ করেন না এমন লোকজন ও সদস্যদেরও ক্লাব সহজভাবে গ্রহণ করতো না।
আর এ কারনেই ঐতিহ্যবাহী এ ক্লাবটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের দিন বিকালে জনরোষের শিকার হয় বলে জানান ক্লাবের কয়েকজন সদস্য।
জানা গেছে, গত বছর ১৪ অক্টোবর কুমিল্লা ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির ৯ম সভা সহসভাপতি মহিবুস সামাদ মহির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে এক সহসভাপতির প্রস্তাব ও আরেক সহসভাপতির জোরালো সমর্থনে এবং দুই কার্যকরী সদস্য ও এক সম্পাদকের সমর্থনের পর বিস্তারিত আলোচনা করে কুমিল্লা ক্লাবে কুমিল্লার মানুষের প্রাণের পত্রিকা দৈনিক কুমিল্লার কাগজ না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ক্লাবের সহসভাপতি মহিবুস সামাদ মহি ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশারের সাক্ষরিত কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের দেওয়া মামলার আসামী হয়ে এই প্রস্তাবক ও সমর্থকরা এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। ক্লাব সদস্যদের রোষানলে আছেন সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশারও। কমিটির সদস্যদের অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে ফুসে উঠেছেন ক্লাবের সদস্যরা। ক্লাবে চলছে বিশেষ সাধারণ সভা আহবানের প্রক্রিয়া। সেই সাথে ক্লাবে দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে সদস্যদের অর্থের অপব্যবহার ও অনিয়ম খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে কুমিল্লা ক্লাবের বেশিরভাগ সদস্যের দাবির প্রেক্ষিতে কুমিল্লা ক্লাবে রবিবার থেকে কুমিল্লার পাঠকপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক কুমিল্লার কাগজ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং সে দিন থেকেই ক্লাবে কুমিল্লার কাগজ রাখা হচ্ছে।
কুমিল্লা ক্লাবের সদস্যরা জানান, কুমিল্লা ক্লাবটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। শুধুমাত্র সাবেক সংসদ সদস্য বাহারের অনুগত-পদলেহীদের কারনে। এতোদিন ক্লাবে যে মতপ্রকাশের কোন স্বাধীনতা ছিল না তার প্রমাণ দৈনিক কুমিল্লার কাগজ না রাখার সিদ্ধান্ত। কোন ব্যক্তি বিশেষকে খুশি করতে সদস্যদের পছন্দের তোয়াক্কা না করে পত্রিকাটি না রাখার সিদ্ধান্ত একটি অন্যায়। আমরা এ জন্য ক্লাবে অফিসকে বলেছি আর কোন পত্রিকা থাকুক বা না থাকুক রবিবার (৮সেপ্টেম্বর) থেকে যেন অবশ্যই দৈনিক কুমিল্লার কাগজ রাখা হয়। সে অনুযায়ী পত্রিকাটি রাখা হচ্ছে।