অসংখ্য সুযোগ
হারিয়ে ড্র করতে বসেছিল পর্তুগাল। স্কটল্যান্ড গোলরক্ষক এঙ্গাস গানের
নৈপুণ্েয ক্রমেই বাড়ছিল হতাশা। তবে শেষ সময়ে ব্যবধান গড়ে দিলেন
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। টানা দুই জয়ে দলকে নিয়ে গেলেন লিগ ওয়ানের ১ নম্বর
গ্রুপের চূড়ায়।
ঘরের মাঠে রোববার রাতে নেশন্স লিগের ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে পর্তুগাল।
প্রথমার্ধে
স্কট ম্যাকটোমিনের গোলে স্কটল্যান্ড এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে ব্রুনো
ফের্নান্দেস সমতা ফেরানোর পর দলকে ৩ পয়েন্ট এনে দেন রোনালদো। টানা দুই
ম্যাচে গোল করেন পর্তুগিজ মহাতারকা।
প্রথম ভালো সুযোগে এগিয়ে যায়
স্কটল্যান্ড! সপ্তম মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে কেনি ম্যাকলেইন চমৎকার ক্রস
বাড়ান ডি বক্সে। ছুটে গিয়ে দারুণ হেডে জাল খুঁজে নেন ম্যাকটোমিনে।
শুরু
থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা পর্তুগাল এরপর ভীষণভাবে চেপে ধরে স্কটিশদের।
একের পর এক সুযোগ এলেও সেগুলো কাজে লাগাতে পারেননি রাফায়েল লেয়াও, দিয়োগো
জটারা।
ত্রয়োদশ মিনিটে লেয়াওয়ের শট বেরিয়ে যায় কাছের পোস্ট ঘেঁষে। গতি ও
পায়ের কারিকুরিতে প্রতিপক্ষের দারুণ পরীক্ষা নেওয়া এসি মিলান উইঙ্গার সাত
মিনিট পর গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন। অসাধারণ রিফ্লেক্সে ঝাঁপিয়ে কর্নারের
বিনিময়ে রক্ষা করেন স্কটল্যান্ড গোলরক্ষক গান।
২০তম মিনিটে লেয়াওয়ের শট
ঝাপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। তিন মিনিট পর লেয়াওয়ের কাছ থেকে
বল পেয়ে ক্রসবারের উপর দিয়ে মারেন জটা।
৩১তম মিনিটে আবার সুযোগ আসে
লিভারপুল ফরোয়ার্ডের সামনে। ফের্নান্দেসের ক্রসে জটার হেড ফেরান গান। ছয়
মিনিট পর দূর পাল্লার শট লক্ষ্েয রাখতে পারেননি নুনো মেন্দেস।
৪৪তম মিনিটে লেয়াওয়ের শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। পর্তগালের আক্রমণের অসংখ্য ঢেউ সামলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্কটল্যান্ড।
প্রথমার্ধে প্রায় ৬৮ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ১৬টি শট নেয় পর্তুগাল। এর কেবল তিনটি ছিল লক্ষ্েয।
বিরতির পর মাঠে নামেন পর্তুগালের অধিনায়ক ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের রেকর্ড গোলদাতা রোনালদো। আক্রমণে ধার বাড়ে স্বাগতিকদের।
গোলের
জন্য এবার বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৫৪তম মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান
ফের্নান্দেস। লেয়াওয়ের কাছ থেকে ডি বক্সের বাইরে বল পেয়ে জাল খুঁজে নেন
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মিডফিল্ডার।
৬৬তম মিনিটে বল ক্লিয়ার করতে
রোনালদোর দ্বিধার সুযোগ নিয়ে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে যান ম্যাকটোমিনে। তার
বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দেন পর্তুগাল গোলরক্ষক। সপ্তম মিনিটের গোলের পর এটাই
গোলের জন্য সফরকারীদের প্রথম শট ছিল।
১০ মিনিট পর এগিয়ে যেতে পারত
পর্তুগাল। রোনালদোর দুর্দান্ত ব্যাকহিলে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে যান জোয়াও
ফেলিক্স। তার শট বাম পা বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন গান।
৮২তম মিনিটে পাগলাটে
একটা সময়ে চারবার গোলের দুয়ার থেকে ঘুরে আসে পর্তুগাল! ফেলিক্সের ডাইভিং
হেড ঠেকিয়ে দেন গান। ফিরতি বলে রোনালদোর শট ফেরে ডান দিকের পোস্টের লেগে।
আক্রমণ
তখনও শেষ হয়নি। সতীর্থের পা ঘুরে বল পান ফের্নান্দেস। তার ক্রসে রোনালদোর
হেড ব্যর্থ হয় বাম দিকের পোস্টে লেগে। ফিরতি বলে ছুটে গিয়ে হেড করতে
চেয়েছিলেন ফেলিক্স, সেটি ঠেকিয়ে দেন গান।
৮৬তম মিনিটে রুবেন নেভেসের হেড
থামিয়ে পর্তুগালের হতাশা বাড়ান স্কটল্যান্ড গোলরক্ষক। তবে দুই মিনিট পরেই
তার প্রতিরোধ ভেঙে দলকে এগিয়ে নেন রোনালদো।
মেন্দেসের ক্রসে ছুটে গিয়ে
পা বাড়িয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এই প্রথম গোল
করলেন রোনালদো। সব মিলিয়ে ৪৯ দলের বিপক্ষে জালে বল পাঠালেন তিনি।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আগের ম্যাচে ছুঁয়েছিলেন নয়শ গোলের সীমানা। ৩৯ বছর বয়সী মহাতারকার গোল হলো ৯০১টি।
টানা
২ জয়ে ৬ পয়েন্ট গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে পর্তুগাল। লুকা মদ্রিচের একমাত্র
গোলে পোল্যান্ডকে হারিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে ক্রোয়েশিয়া। একটি করে জয়ে
এই দুটি দলের পয়েন্ট ৩ করে।
টানা দুই হারে এখনও পয়েন্টের খাতাই খুলতে পারেনি স্কটল্যান্ড।