নানা
দুর্নীতি, অনিয়ম, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, বিদেশে অর্থ
পাচারসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কুমিল্লা-৫
(বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের সাবেক এমপি এম এ জাহেরসহ সাবেক ১০ জন সংসদ
সদস্যের দুর্নীতির অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন
(দুদক)।দুদকের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার (২ অক্টোবর) এ
তথ্য জানিয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
এর
মধ্যে কুমিল্লা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ জাহেরের বিরুদ্ধে
চাঁদাবাজি, কোটি কোটি টাকার গ্যাস চুরিসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে
অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ
অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও
চট্টগ্রাম-১২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী
ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি দরে প্রাক্কলন তৈরি করে
টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদক চোরাকারবারিদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া,
তার এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিলের ওপর অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা
অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও
পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের
অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নীলফামারী ১-এর সাবেক সংসদ সদস্য
আফতাব উদ্দিন সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য,
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে টিআর, কাবিখা,
কাবিটাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের
সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব অভিযোগে তার অবৈধ
সম্পদের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রাজশাহী-১
আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার নিয়োগ
বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, মাদক চোরাকারবারিদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়াসহ
দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও
পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
নোয়াখালী-৪
আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী সিন্ডিকেট করে টেন্ডারবাজি,
চাঁদাবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন
প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখল, নিয়োগ
বাণিজ্য, দলীয় পদ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করে
হাজার হাজার কোটি বিদেশে পাচারসহ নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
রাঙ্গামাটির সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা
আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপঙ্কর তালুকদার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প
দেখিয়ে শত শত কোটি টাকা লোপাট করেছেন। এছাড়াও টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য,
বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন
প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। একইসঙ্গে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতুব্বর, সহ-সভাপতি বৃষকেতু চাকমা,
সহ-সভাপতি অংসিপ্রু চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক
রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সাবেক সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদারের সঙ্গে যোগসাজশে
বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
নেত্রকোনা-৩
আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইফতেখার উদ্দিন তালুকদারের বিরুদ্ধে ক্ষমতার
অপব্যবহার, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন
উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
ময়মনসিংহ-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য
ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল ক্ষমতার অপব্যবহার করে টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য,
অবৈধ বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন
প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত
আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
জামালপুর ও শেরপুর সংরক্ষিত মহিলা আসনের
সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন উন্নয়ন
প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজের নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে আমেরিকায়
বাড়ি কেনাসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
এসব অভিযোগের অনুসন্ধান করবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।