কুমিল্লায়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে মামলায় আওয়ামী লীগের মৃত তিন
নেতাকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মৃত তিন আসামী
হলেন– সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হাজী
আবদুল মমিন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ কামাল উদ্দিন মজুমদার এবং সদস্য
ওয়াহিদুর রহমান ফরিদ।
গত বুধবার (২ অক্টোবর) সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম
মুস্তফা কামালের ছোট ভাই ও সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান
গোলাম সারওয়ার এবং সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই বাবলুসহ ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলাটি করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের
ছাত্র ও আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. এমরান।
মামলার ৩৩ নম্বর আসামি আব্দুল
মোমেনের স্বজনরা জানান, আবদুল মমিন গত ২৪ জুন ভোরে হাঁটতে বেরিয়ে ট্রেনে
কাটা পড়ে মারা যান। অথচ মামলায় তাঁর (৩৩ নম্বর আসামি) বিরুদ্ধে ৪ আগস্ট
আন্দোলনে হামলার ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
মৃতের ছেলে আবু সাঈদ বলেন, তিনি তো জুনে মারা গেছেন। তাহলে কীভাবে ৪ আগস্ট হামলায় অংশ নিলেন?
২৭
নম্বর আসামী কামাল উদ্দিন মজুমদারের প্রতিবেশী আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০২৩
সালের ১১ জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিকে আসামী
করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে কারও
আপত্তির কিছু থাকবে না।
৫৫ নম্বর আসামি ফরিদের বড় ছেলে মো. ফরহাদ বলেন,
‘কিডনিজনিত সমস্যায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাবা মারা যান। এক বছর পরের
ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। মৃত মানুষ কী করে হামলা করবেন, আসামি হবেন?
এটি চরম অন্যায়।’
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক
সম্পাদক মোঃ বিল্লাল হোসেন বলেন, শুধু তিন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা নয়,
কানাডা ও যুক্তরাজ্য অবস্থানরতসহ বয়সের ভাড়ে নুয়ে পড়া দেশের অনেক অসুস্থ
ব্যক্তিদেরও এই মামলার আসামী করা হয়েছে।
বাদী এমরান সাংবাদিকদের বলেন,
অভিযোগ ঠিক আছে। তবে শুরুতে আসামিদের নাম শনাক্তে ভুল আছে কিনা, তা নিশ্চিত
হতে পারিনি। বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখব।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার
ওসি মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, এফআইআর মামলার প্রাথমিক পদক্ষেপ। বিষয়টি
তদন্ত করা হবে। মৃত ব্যক্তির নাম থাকলে বাদ দিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।