পঞ্চম পর্ব
বাবার আদেশ বা নির্দেশ।
১. তোমার থেকে কোনো ব্যক্তি যদি একদিনের জন্য বয়সে জ্যেষ্ঠ বা বড় হন, তাঁকে সম্মান করবে।
২.
শ্রদ্ধান্বিত ব্যক্তিকে বয়স দিয়ে বিবেচনা করবে না, শ্রদ্ধা পাওয়ার যোগ্য
মনে করলে অবশ্যই শ্রদ্ধা জানাবে, কারণ, শ্রদ্ধা অর্জন করতে হয়।
৩.
পিতা-মাতা, শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু এবং সদ্ গুরু সম্পর্কে কখনো নেতিবাচক
হিসেবে ভাববে না, তাঁদেরকে লঘুভাবে পরিমাপ করবে না। তাঁরা নিত্য-পবিত্র
গুরুজন। আর মা হলেন নিত্যগঙ্গা।
এরূপ আরও কিছু সৎ মৌলিক ধারণা আমার ছোট বয়সে দিয়ে ছিলেন। সবটুকু যে অশতিপর বয়সে রক্ষা করতে পেরেছি তা দাবি করি না।
আমার
বাবা শিক্ষক ছিলেন। আমার বড় মেশোমশায় আমার স্কুলজীবনের প্রধান শিক্ষক ও
আদর্শিক মান্যজন ছিলেন। অপর মেশোমশায়ও শিক্ষক ছিলেন। বাড়িতে বাবা-জেঠা-কাকা
মিলে দু’পুরুষের সাতজন শিক্ষক ছিলেন। তাই লেখাপড়া শেষ করে সোজাসুজি
দ্বিধাহীন শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করি। একটানা ৩৫ বছর কলেজ শিক্ষক ছিলাম।
শিক্ষকতা চাকরির কারণে অনেক স্বনামধন্য জ্ঞানী শিক্ষক-গবেষক-সাহিত্যিকের
সান্নিধ্য লাভ করেছি। প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আমি যুবরাজ। এ ধারায় সর্বশেষ যে
শিক্ষাগুরুকে হারালাম, তিনি শ্রদ্ধাভাজন প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরী। তিনি ১৯
সেপ্টেম্বর ১১-৪৫ মি: না ফেরার দেশে চলে গেছেন। শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন
আমার জীবনের শেষ প্রদীপ। প্রদীপটি ধরাধামে ৮৭+ বছর প্রোজ্জ্বলিত ছিলেন
আলোকিত দীপশিখার মতো। সুতরাং শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ আমি নিজেই নিবু নিবু
একটি সলতে ভেজা বাতাসতাড়িত কুপি (বাতি)।
প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরী
স্যারের কাছে তিন বছর বাংলা অনার্স পড়েছি। ভিক্টোরিয়া কলেজে সহকর্মী হিসেবে
১১ বছর চাকরি করেছি, যোগাযোগ আমৃত্যু। তিনি এম,এ পাশের পর প্রথমে চাঁদপুর
কলেজে, ১৯৬৪ সালের প্রথম দিকে ভিক্টোরিয়া কলেজে ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা
বিশ^বিদ্যালয়ের অধীন বাংলা অনার্স কোর্স চালু হওয়ার পর একসাথে পাঁচজন
শিক্ষক যোগদান করেন। তাঁরা হলেন- অমরকৃষ্ণ পাল, বদরুল হাসান, ফজলুল হক,
আমীর আলী চৌধুরী ও শমসের উদ্দিন আহমদ স্যারেরা। অমরকৃষ্ণ পাল স্যার
টাঙ্গাইলের করটিয়া কলেজ থেকে, বদরুল হাসান স্যার ঢাকা বেতার থেকে, ফজলুল হক
স্যার মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে, আমীর আলী চৌধুরী স্যার চাঁদপুর
কলেজ থেকে এবং শমসের উদ্দিন আহমদ স্যার কক্সবাজার কলেজ থেকে এসে যোগদান
করেন। একথা বলার অর্থ হলো- তাঁরা শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা নিয়েই কুমিল্লা
ভিক্টোরিয়া কলেজের মতো ঐতিহ্যবাহী কলেজে যোগ্যতার আলোকে চাকরিটা লাভ
করেছিলেন। তখন বাংলা বিভাগে তিনজন শিক্ষক ছিলেন- অধ্যাপক কাজী নুরুল ইসলাম,
অধ্যাপক মোবাশে^র আলী ও অধ্যাপক জমির উদ্দিন আহমদ। তাঁরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে
দিকপাল ছিলেন। উল্লেখ্য বিভাগীয় প্রধান ছিলেন পুথিবিশারদ অধ্যাপক আলী আহমদ
স্যার। তিনি দু’মাস আগে ঢাকা বাংলা কেন্দ্রিয় উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি নিয়ে
চলে যান।
যে পাঁচজন নতুন শিক্ষক বাংলা বিভাগে যোগদান করেন, তন্মধ্যে
অধ্যাপক আমীর আরী চৌধুরী স্যারের নিজস্ব বাড়ি শহরের মৌলভীপাড়া। তিনি
বিখ্যাত জমিদার চৌধুরী পরিবারের সন্তান। তাঁর পিতামহ মরহুম জানে আলম
চৌধুরী, পিতা সুলতান আহমদ চৌধুরী। স্যার জ্যেষ্ঠ সন্তান, মাতৃকুলের বাড়ি
সুনামগঞ্জের কোনো এক জমিদার বাড়ি। দুঃখের বিষয় বাল্যকালে স্যার মাতৃহারা
হন। আরও দুঃখের বিষয় ছিল- স্যারের জন্ম তারিখ মাতৃবিয়োগের তারিখ এক। এজন্য
স্যার কোনোদিন জন্মদিন পালন করতেন না। ৮০ বছর পূর্ণ হওয়ায় স্যারের ছাত্র ও
শুভানুধ্যায়ীরা প্রথম জন্মদিন ঘটা করে পালনের ব্যবস্থা করেন। তারপর সম্ভবত
৮৪ বছর পূর্তিও উদ্যাপিত হয়।
আমার সঙ্গে স্যারের দীর্ঘদিনের পথ চলা।
রীতিমত একটি বই লিখতে পারি। আমি ছাত্র, আমি সহকর্মী, আমি স্যারের অধীনে
উচ্চমাধ্যমিক-ডিগ্রি-অনার্স-মাস্টার্স- এর পরীক্ষক, নিরীক্ষক। সামাজিকভাবে
বহু সংগঠনের সহযোগী সদস্য। বিষয়টা এমন পর্যায় ঠেকেছিল- যেখানে আমীর আলী
স্যার- সেখানে আমি শান্তিরঞ্জন ভৌমিক। এ ইতিহাস খুবই দীর্ঘ। এছাড়া স্যারের
পরিচিতি-যোগ্যতা-অর্জন-ব্যক্তিত্ব ও জনপ্রিয়তার জন্য বহু প্রতিষ্ঠানের
সঙ্গে মৃত্যুর পূর্বক্ষণ পর্যন্ত জড়িত ছিলেন। রীতিমত অহংকারের শীর্ষস্থানে
সমকালে কুমিল্লায় তিনি ছিলেন অবধারিত আইকন। তার প্রধান কারণ হলো এমন একজন
বিশ^াসযোগ্য অভিভাবকতুল্য ব্যক্তিত্ব বিতর্কহীন সহজগম্য দ্বিতীয় কেউ ছিলেন
না। আমার স্যার আমীর আলী চৌধুরীকে হারালাম। আজ ভাবি-আমি ব্যক্তিগতভাবে কী
হারালাম-একটু পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।
কীভাবে আরম্ভ করব, তা-ই ভাবছি। কারণ, নিজের কথা চলে আসবে অতিমাত্রায়। যেমন-
১. স্যার পরীক্ষক-উচ্চমাধ্যমিক-ডিগ্রি-অনার্স ও মাস্টার্স পরীক্ষার। কোনোদিন কি তিনি কোনো উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেছেন ?
২. স্যার অনেক পরীক্ষার প্রধান পরীক্ষক। তিনি কি কোনো দিন জেনেছেন কত উত্তর পত্র এবং কোন পত্রের প্রধান পরীক্ষণ ?
৩. পরীক্ষার নম্বরফর্দ কখন কীভাবে পাঠানো হয়েছে, তার খবর তিনি কি রাখতেন ?
৪.
বিভাগের ভাইবা পরীক্ষা, বহি:পরীক্ষার আগমন, থাকার ব্যবস্থা, খাওয়ার
ব্যবস্থা, পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি সম্পর্কে কি তিনি জানতেন ?
জানতেন অর্থাৎ জানানো হতো।
৫. বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা, টিউটরিয়েল নেয়া, ফরমপূরণ থেকে যাবতীয় কাজ কি করে হচ্ছে, তা কি তিনি জানতেন ?
৬.
তিনি বিভাগের দায়িত্বে বহুবছর ছিলেন, দায়িত্ব নিয়েই বলছি- আমরা বিভাগে সকল
শিক্ষক কমবেশি দায়িত্ব বন্টন করে কাজগুলো করতাম। আমরা বিভাগে প্রয়োজনীয়
সংখ্যক শিক্ষক ছিলাম না, কিন্তু ক্লাশ নেয়া থেকে যে কোনো কাজ থেমে থাকেনি।
আমরা আপন দায়িত্বে কাজগুলো করেছি-
‘দশে মিলে করি কাজ’- এ ছিল আমাদের
টিমওয়ার্ক। স্যারকে কোনো কাজেই জড়াইনি। শুধু জানিয়ে রেখেছি। ফলে যখনই
একাডেমিক মিটিং-এ বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদান করার সময় আমাদের কারও না
কারও সহযোগিতার জন্য সঙ্গে রাখতেন। আমরা সপ্তাহে ২৮-৩০টি ক্লাশ নিতাম।
স্যারকে নিজের পছন্দ মতো ক্লাশ দিতাম। অনেক কথা বলার ছিল, প্রসঙ্গটা নিজের
উপর চলে আসবে, তাই সংযম ধারণ করলাম। স্যার যেন আমাদের ছাড়া, বলতে দ্বিধা
নেই, অচল ছিলেন।
প্রফেসর আমীর আলী চৌধুরী স্যার কেমন শিক্ষক ছিলেন ? কে
তা মূল্যায়ন করবে ? সহকহর্মীরা করবেন না। কারণ, তাঁরা তো অনেকেই ছাত্র
ছিলেন না। একমাত্র মূল্যায়ন করবেন তাঁর ছাত্ররাই। কথাটা এরূপ- পিতার বিচার
করবে পুত্র। বলে রাখি, তিনি চাঁদপুর ও ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাড়াও চাকরির
বদলিজনিত কারণে সিলেট এমসি কলেজ ও ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে বেশ কিছু বছর
শিক্ষকতা করেছেন। এম সি কলেজে প্রায় ৮ বছর ছিলেন, সেজন্য সিলেটে তাঁর অনেক
ছাত্র রয়েছেন। তিনি কোনো মহিলা কলেজে চাকরি করেননি। ব্যতিক্রম ও অহংকারের
বিষয় হলো তিনি ভিক্টোরিয়া কলেজেই বহু বছর চাকরি করেছেন- চাকরির পরিক্রমা
হলো এ কলেজে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক, বাংলা
বিভাগের প্রধান, উপাধ্যক্ষ এবং সর্বশেষ ১৪ মাস অধ্যক্ষের পদ অলংকারিত করে
১৯৯৫ সালে অবসর গ্রহণ করেছেন।
আমীর আলী স্যার মূলত সাহিত্যের অধ্যাপক।
বাংলা বিভাগে চাকরি করলেই শুধু সাহিত্যের অধ্যাপক হওয়া যায়। তাঁকে বাংলা
বিভাগের এমন সব পাঠক্রমের বিষয়বস্তু আছে, তাকে সে অর্থে সাহিত্য না বলে
‘সাহিত্যের নির্মাণ কলাকৈবল্য’ বলা যেতে পারে। যেমন-
ব্যাকরণ-ছন্দ-অলংকার-সাহিত্যতত্ত্ব-সাহিত্যবিচার-ভাষাতত্ত্ব-ভাষার
ইতিহাস-ধ্বনিবিজ্ঞান ইত্যাদি পাঠ্যক্রমের মৌলিক ভিত্তি। এ বিষয়গুলো
পাঠ্যক্রমে থাকলেও দেখেছি-অনেক বাংলা শিক্ষক শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে
ডিগ্রি অর্জন করেছেন, অধ্যাপনা করতে গিয়ে পাঠদানের ক্ষেত্রে তার ধারেকাছেও
বিচরণ করেন না। অজানিত ভয় বা অনীহা অথবা রসকষহীন মনে করে এড়িয়ে যেতেন। আমার
স্যার ছিলেন সে অঙ্গনের প্রতিভূ। কোনোদিন এ বিষয়গুলো পড়াতে আগ্রহবোধ করতেন
না। গল্প-উপন্যাস-নাটক-কবিতা এ দিকের প্রতি স্যারের একধরনের প্রেম ছিল।
আমার সঙ্গে হয়ত কোনো কোনো ছাত্র দ্বিমত পোষণ করতে পারে বা পারেন, কিন্তু
স্যারের শেষ বয়সে নানাভাবেই তো আমি সঙ্গী ছিলাম। প্রাক্তন ছাত্র স্যারকে
দেখলেই আদাব-সালাম জানিয়ে বলতেন- ‘স্যার, আপনি যে শ্রীকান্ত পড়িয়েছিলেন,
রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তী, মেঘনাদবধ কাব্যের ষষ্ঠ সর্গ ইত্যাদি আজও মনে আছে।’
কিন্তু কাউকে বলতে শুনিনি- ব্যাকরণ, ভাষাতত্ত্ব, সাহিত্যতত্ত্ব
ধ্বনিবিজ্ঞান পড়ানোর কথা উল্লেখ করতে, তাহলে কি স্যার তা এড়িয়ে যেতেন ?
স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন না বলেই জানি। আসলে স্যারের মধ্যে রসবোধ ছিল নির্মল ও
অনাবিল আনন্দ যাপনের অনুষঙ্গ।
স্যারের পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা জানি।
জমিদার পরিবারের সন্তান। মনটা ছিল উদার ও পরপোকারী, পরচর্চা করতেন না,
সংশোধন করতেন। ছাত্র অন্তপ্রাণ, শেষ বয়সে মনে করতেন সকলেই তাঁর ছাত্র।
অবশ্যই এ কথাটি ভাববার বিষয়। কুমিল্লা শহরের আমার জানা মতে ভিক্টোরিয়া
কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক অনেক আছেন, তাঁদের কথা বাদ দিলাম। কিন্তু অনেক
প্রাক্তন অধ্যক্ষ এ শহরে বাড়িঘর করে দাপটে বসবাস করছেন তাঁদেরকে কেউ কি
চিনে, জানে ? আমি তো দায়িত্ব নিয়েই বলতে পারি- সমকালে ভিক্টোরিয়া কলেজের
প্রাক্তন একমাত্র একজনই অধ্যক্ষ ছিলেন, তিনি আমার পিতৃপ্রতিম প্রফেসর আমীর
আলী চৌধুরী। অন্যদের তো আমি, আমরা চিনি না, দেখি না। এখানেই অধ্যক্ষ আমীর
আলী চৌধুরী একচ্ছত্র মহাজন। ‘হে মহাজন- তোমারে করি সালাম।’
স্যারের
ব্যক্তিগত জীবনের কথা উল্লেখ করব না। শুধু পারবারিকভাবে যতটুকু জানি
সুয়াগাজী জমিদার চৌধুরী বাড়ির জামাতা তিনি। এককন্যা ও দু’পুত্রের জনক।
একমাত্র ইতিহাসখ্যাত মরহুম জানে আলম চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ‘জানুমিঞা মসজিদ’-এর
মোতয়াল্লি ছিলেন। মৌলভীপাড়া চৌধুরী পরিবার একসময় কালান্তরে হারিয়ে গেলেও
‘জানু মিঞা মসজিদ’ টিই তাঁদের বংশধরদের বাঁচিয়ে রাখবে।
আমি স্যারের
অন্যতম প্রবীনতম ছাত্র। আজও বেঁচে আছি। স্যার নেই, অনন্তলোকে পাড়ি দিয়েছেন।
এ পথ আমাদের সম্পূর্ণ অজানা। তারপরও জীবিতাবস্থায় প্রতিটি মানুষ নিজস্ব
দিকনির্দেশ রচনা করে জীবনকে পরিচালিত করে। এ পরিক্রমায় সামষ্টিক যে
চিন্তাভাবনা, তা অনেকটাই সামাজিক প্রয়োজনে, এখানে ধর্মচর্চা বা ধর্মানুভূতি
একটি প্রচলিত ধারায় প্রবাহমান। এ নিয়ে কেউ বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায় না।
কারণ, এখানে যুক্তির কোনো স্থান নেই, আপস নেই যেমন স্যার হজ¦ব্রত পালন
করেছেন, সাধারণত এরূপ একটি পবিত্র কাজ পালন করে, অন্তর ও বাইর পরিচর্চায়
কারও কারও ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়। আমি স্যারকে বললাম- ‘স্যার,
এখন থেকে আপনার নামের আগে ‘হাজী’ অথবা ‘আলহাজ¦’ শব্দটি ব্যবহার করি ?’
স্যার বললেন, ‘প্রয়োজন বোধ করি না।’ বলি- ‘এখন থেকে দাড়ি রাখেন, মাথায় টুপি
ব্যবহার করেন ?’ আমাকে ধমক দিয়ে বললেন- ‘আমি কি তোমার মশকরার পর্যায়ের
ব্যক্তি বলে মনে কর।’ ‘তাহলে’? তিনি জানালেন- ‘পরিবর্তনটা আমার অন্তর্গত
জীবনে অতিগোপনীয় বিশ^াসের মণিকোঠায়। তা প্রকাশ করা ঠিক না। তুমি বেশি জানতে
চেয়ো না। আমি ঠিক আছি। আমি পরিপূর্ণ বিশ^াসের অমলিন স্থানেই আছি।’
এক্ষেত্রে আমার অনুরোধ আমার স্যারকে কেউ ভুলবুঝতে বিন্দুমাত্র চেষ্টা করবেন
না। স্যারের মতো ব্যক্তির হৃদয়বন্দরে বিচরণ করতে হলে অবশ্যই আকাশ হতে হবে,
প্রকৃতি হতে হবে, মানুষ হতে হবে।
স্যারের প্রতি প্রণাম। যেখানেই তিনি আছেন- তিনি অবশ্যই ভালো থাকবেন।