প্রতি
বছর শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রায় এক/দেড় মাস আগ থেকেই পূজা মন্ডপের তালিকা
নির্ণয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে প্রশাসন। উপজেলা ভিত্তিক ওই তালিকা তৈরি করে জেলায়
সকল পূজামন্ডপের মোট সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া হয় সরকারের তরফ থেকে উপহার
এবং সেই তালিকা অনুযায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত করা হয়
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যাও।
বিভিন্ন সময় পূজা শুরুর এক/দুই
সপ্তাহ আগেও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন অনেক পূজা মন্ডপে। কখনও দেখা যায় পূজা
না করার পরিকল্পনা থেকে সরে এসে হঠাৎ পূজা করার সিদ্ধান্ত নেন, কখনও কখনও
দেখা যায় সব কিছু ঠিক করেও পূজা করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে যান। আবার কখনও
দেখা যায় শারদীয় দুর্গা দেবীর মুর্তি পূজার তালিকার সাথে ঘট পূজার তালিকা
এক সাথে যুক্ত করে তালিকা দীর্ঘ করে ফেলেন। যে কারণে শেষ মুহুর্তে এসে
পূজার মূল তালিকা নির্ণয়ে অনেকটা ঝামেলা ভোগ করতে হয়ে সর্ব মহলে।
জেলা
প্রশাসনের হিসাবে কুমিল্লার ৭৮৮টি পূজা মন্ডপে, জেলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
তথ্যমতে ৭৬২টি পূজা মন্ডপে ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে ৭৫৬টি পূজা
মন্ডপে শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে কুমিল্লা
মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলায় ৭৪৮টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দেবী দুর্গার প্রতীমা
(মুর্তি) পূজা ও ৩৪টি মন্ডপে দেবী দুর্গার ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শারদীয়
দুর্গোৎসবে দেবীর প্রতীমা পূজার মন্ডপগুলোতেই প্রয়োজন হয় নিরাপত্তা
নিশ্চিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি। দেবীর ঘট পূজা শুধুমাত্র অষ্টমী
তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে কোন প্রতীমা না থাকায় প্রশাসনিক নিরাপত্তা
বা পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক টিমেরও উপস্থিতির প্রয়োজন পরে না। দুই
উপায়ের পূজা একই তালিকায় থাকায় পূজা মন্ডপের মূল তালিকায় গড়মিল দেখা যায়
সর্বত্র।
তবে বুধবার (৯ অক্টোবর) জেলার প্রতিটি উপজেলার পূজা উদযাপন
পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে
জানা গেছে কুমিল্লায় সর্বমোট ৭৪৮টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দেবী
দুর্গার ‘প্রতীমা’ পূজা। আর ৩৪টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে ‘ঘট’ পূজা। ৩৪টি ঘট
পূজার মধ্যে শুধুমাত্র দাউদকান্দি উপজেলাই ১৪টি।
তারমধ্যে কুমিল্লা
মহানগরীতে ৬৬টি প্রতীমা পূজা ও ৩টি ঘট পূজা, আদর্শ সদর উপজেলায় ২৬টি
প্রতীমা পূজা ও ১টি ঘট পূজা, দেবীদ্বার উপজেলায় ৮২টি, হোমনা উপজেলায় ৪৮টি,
মুরাদনগর উপজেলায় ১৪৫টি, লাকসাম উপজেলায় ৩০টি প্রতীমা পূজা ও ৫টি ঘট পূজা,
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১১টি প্রতীমা পূজা ও ১টি ঘট পূজা, বুড়িচং উপজেলায়
৩৬টি প্রতীমা পূজা ও ১টি ঘট পূজা, দাউদকান্দি উপজেলায় ৪১টি প্রতীমা পূজা ও
১৪টি ঘট পূজা, চান্দিনা উপজেলায় ৬৫টি, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ২২টি, মনোহরগঞ্জ
উপজেলায় ১১টি প্রতীমা পূজা ও ১টি ঘট পূজা, লাইমাই উপজেলায় ১৬টি প্রতীমা
পূজা ও ১টি ঘট পূজা, বরুড়া উপজেলায় ৮৭টি প্রতীমা পূজা ও ৫টি ঘট পূজা,
নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১১টি, তিতাস উপজেলায় ১৪টি, মেঘনা উপজেলায় ৯টি, সদর
দক্ষিণ উপজেলায় ২৮টি প্রতীমা ও ২টি মন্ডপে ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জেলা
পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আবু বকর ছিদ্দিকী জানান,
আমাদের তথ্য অনুযায়ী ৭৬২টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জেলা
পূজা উদযাপন পরিষদ সহ-সভাপতি নির্মল চন্দ্র পাল জানান, আমাদের কাছে ৭৫৬টি
পূজা মন্ডপের তালিকা আছে। আর বাকিগুলো ঘট পূজা। তবে বেশির ভাগ উপজেলা থেকেই
সঠিক ভাবে তালিকা প্রকাশ করা হয় না। আগামীতে বিষয়টি আমরা গুরুত্বে সাথে
দেখবো।