বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪
৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের বাঁশে সাবলম্বী হাজারো পরিবার
জহির শান্ত
প্রকাশ: শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪, ১:১০ এএম |

 কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের বাঁশে সাবলম্বী হাজারো পরিবার

কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে নানা প্রজাতির বাঁশের। এতে জীবিকা নির্বাহ হয় পাহাড়ের দুই হাজারের বেশি পরিবারের। পাহাড়ের ময়নামতি থেকে চন্ডিমুড়া পর্যন্ত অংশে চাষ হওয়া এসব বাঁশ থেকে বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার বাণিজ্য হয় বলে জানা গেছে। গৃহস্থালি সামগ্রী থেকে বসতঘর, ফসলের ক্ষেতের মাচা থেকে নির্মাণ সামগ্রী, এমনকি মাছ ধরার ফাঁদ, নানান শিল্পে বাণিজ্যিকভাবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই বাঁশ চাষে আগের তুলনায় অধিক ঝোঁক বেড়েছে চাষীদের। প্রায় ৪শ' বছর ধরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে গুণগত মানের বিভিন্ন জাতের বাঁশচাষ হচ্ছে। আর কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিরা লাভবান হওয়ায় লালমাই পাহাড়ে প্রতি বছর বাড়ছে চাষের জমির পরিমাণ।
জানা গেছে, বাঁশের কুলা, খাঁচা, ওরা, ঝুঁড়ি, ডালা এবং মাছ ধরার নানান ফাঁদ তৈরি করছেন নারীরা। কুমিল্লার শহরতলীর নমশূদ্র পল্লীর প্রায় পনেরশ পরিবারের পেশা এ বাঁশ শিল্প ঘিরে। তাদের তৈরিকৃত প্রতিটি পণ্য মানভেদে বাজাওে পঞ্চাশ থেকে দুই'শ টাকায় বিক্রি করতে পারেন শিল্পীরা। তা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া, ঋণ পরিশোধ এবং আনুষাঙ্গিক খরচ মেটান তারা ।নমশূদ্র পল্লী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য উদ্যোক্তা। যাদের কাঁচামাল হিসেবে লালমাই পাহাড়ের বাঁশেই নির্ভরতা।
জানা গেছে, কুমিল্লার ময়নামতি থেকে চন্ডিমুড়া পর্যন্ত পাহাড়ের অন্তত একশো একর ভূমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাঁশ চাষ হচ্ছে। সমতল থেকে পাহাড়ের চূড়া। চোখে পড়বে সারি সারি বাঁশ বাগান। এখানে রয়েছে তল্লা, মুলি, বরাক, কাটা বরাক, হিল বরাক, বোম, কনক, বারি ও পেঁচাসহ নানান জাতের বাঁশ। তবে সবথেকে বেশি বাঁশঝাড় চোখে পড়ে মধ্যম বিজয়পুর, ধনমুড়া, বড় ধর্মপুর, রাজারখলা, ভাঙ্গামুড়া, জামমুড়া, বৈষ্ণবমুড়া, লালমতি, গন্ধমতি ও সালমানপুরে। চাষে খরচের বিপরীতে বিক্রয় মূল্য বেশি হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষীদের মাঝে।

বাঁশ কাটলে সেখান থেকে প্রতিবছর নতুন বাঁশ জন্মায়। বাঁশ বিক্রি করে বাঁশ কাঁটার সাথে নিয়োজিত বদলিদের পরিবারও চলছে এই অর্থ দিয়ে।
 কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের বাঁশে সাবলম্বী হাজারো পরিবার গৃহস্থালি সামগ্রী ছাড়াও নির্মাণকাজ, বসতঘর তৈরি এবং জমিতে শাক সবজির মাচাতেও বাঁশের ব্যবহার বাড়ছে। স্থানীয় চাষীরা জানান, সরকারি সহায়তা পেলে বাঁশ চাষ বাড়ার পাশাপাশি বাড়বে রাজস্ব আয়ও।
লালমাই পাহাড়ের বাঁশ চাষিরা, লালমাই পাহাড়ের বাঁশের চাহিদা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকারী ক্রেতারা এখানে এসে বাঁশ কিনে নিয়ে যান। এছাড়া খুচরা বাঁশও বিক্রি হয় এখানে।
বাঁশের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, বড় আকারের প্রতি ১ শ বাঁশের দাম ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। মাঝারি বাঁশের দাম প্রতি পিস ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ছোট বাঁশের দাম প্রতি পিস ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। বাঁশের চাহিদা বাড়ায় এ অঞ্চলে বাঁশ চাষে আগ্রহ বাড়ছে জানিয়ে বলেন, অনেক কৃষক এখানে কাসাবারও চাষ করছেন।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির খান সাংবাদিকদের বলেন, এই পাহাড়ে যারা বাঁশ চাষ করছেন এবং বিক্রি করছেন তারা লাভবান হচ্ছেন। বাঁশ থেকে নানা ধরনের পণ্য তৈরি হচ্ছে যা কর্মসংস্থানের অনেক বড় একটি উৎস বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, চাষিরা লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর বাড়ছে চাষের জমির পরিমাণ। এই পাহাড়ের বাঁশ ও এর থেকে তৈরিকৃত পণ্য ঘিরে বছরে ৫০ লাখ টাকারও বেশি বাণিজ্য হয় কুমিল্লায়। প্রায় ৪শ বছর ধরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে গুণগত মানের বিভিন্ন জাতের বাঁশচাষ হচ্ছে, এছাড়া ভারি বর্ষণসহ নানা দুর্যোগে পাহাড়ের ক্ষয় রোধে ভূমিকা রাখে বাঁশের শিকড়। তাই বাঁশ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে চাষিরা।














সর্বশেষ সংবাদ
রংপুরে ভূমিকম্প অনুভূত
ড. ইউনূসের ৬ মামলা বাতিল
ব্যারিস্টার সুমন ২ দিনের রিমান্ডে
কমলাপুর থেকে ছাড়ছে না কোনো ট্রেন, যাত্রীদের ভোগান্তি
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা টাউন হলের সকল কমিটি বাতিল
কুমিল্লায় চার জনের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান করছে দুদক
২৪ সেনার দেহাবশেষ সরিয়ে নিচ্ছে জাপান
ইপিজেডের বর্জ্য শোধনাগার কার্যক্রমের বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়
বাখরাবাদ গ্যাসের কর্মচারি ইউনিয়নের সভাপতি বশির আহমেদ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২