কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনের রাস্তাটি খানা খন্দে ভরা। ফুটপাত গুলো
দখল করে আছে ছোট ছোট দোকানিরা। এই হাসপাতালের দুই ফটকের মূল ফটক সকাল থেকে
দুপুর পর্যন্ত বন্ধ থাকে। অটোরিক্সা চালকরা মূল ফটকটিকে অটোস্ট্যান্ড
বানিয়ে রেখেছে। শুধুমাত্র নতুন ফটকটি ব্যবহার করতে পারে রোগী ও রোগীর
স্বজনরা। মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে বিরম্বনায় পরতে হয়। হন ভোগান্তির
শিকার।
গতকাল বুধবার (৩০ অক্টোবর) কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এ দৃশ্য চোখে পরে।
এ
বিষয়ে কুমেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, হাসপাতালের বাহিরে রাস্তার পাশে
খানাখন্দ আর ফুটপাত দখলের বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহীর সাথে কথা
হয়েছে। তিনি বলেছেন এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।
জানা যায়, কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি এখন আগের চেয়ে সেবার দিক দিয়ে অনেক উন্নত। উন্নত
এমআরআই মেশিন, ডিজিটাল এক্সরে মেশিন, উন্নত প্যাথলজি বিভাগ, আল্ট্রাসাউন্ড,
ইসিজিসহ সকল প্রকার পরীক্ষা নিরিক্ষিা এখন হাসপাতালের ভেতরেই করা যায়। যে
কোন পরীক্ষার জন্য আগের মত এখন আর বাহিরে যেতে হয়না। এখানে সার্বক্ষনিক
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পাওয়া যায় এই আশায় সাধারণ মানুষ স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা
নিতে আসেন। কুমিল্লা জেলার ১৬টি উপজেলাসহ আশে পাশের জেলাগুলোর বাসিন্দারাও
এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি
থাকে হাজারের অধিক। তাছাড়া বহি: বিভাগে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা দেড় হাজারের
অধিক। একজন রোগীর সাথে আসেন চার থেকে পাঁচজন রোগীর স্বজন । সব মিলিয়ে
প্রতিদিন প্রায় আট থেকে দশ হাজারের অধিক রোগী ও রোগীর স্বজন এই হাসপাতাল
চত্ত্বরে যাতায়াত করে। কিন্তু এই ব্যক্তিরা হাসপাতাল চত্ত্বরে চলাফেরা করতে
গিয়ে পরেন বিড়ম্বনায়, হচ্ছেন হয়রানির শিকার। রোগী নিয়ে হাসপাতাল চত্ত্বরে
প্রবেশ করতে চাইলে মূল ফটকে অনেকক্ষন অপেক্ষা করতে হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ
হাসপাতালের সামনে অধিকাংশ সময় যানজট লেগে থাকে। হাসপাতালের মূল ফটকটি বন্ধ
থাকায় হাসপাতালের ফটকজুড়ে থাকে সাড়ি সাড়ি অটোরিক্সা। তাছাড়া ময়লা আবর্জনার
কারণে হাসপাতালে প্রবেশের সময় উৎকঠ গন্ধের কারণে নি:শ^াস নিতে কষ্ট হয়।
বিশ^স্ত
সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি কুমিল্লা সিটি
কর্পোরেশনের আওতার বাহিরে হলেও সিটি কর্পোরেশন হাসপাতালটিকে নানা কাজে
সহযোগীতা করে থাকে। পূর্বের কুমিল্লা পৌরসভা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ
পৌরসভাকে নিয়ে ২০১১সালে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন পায়। সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচনের পূর্বে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি সিটি
কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত করার সুপারিশ করা হলেও উদ্যেগের অভাবে এটি আর করা
সম্ভব হয়নি। যার কারণে কুমিল্লা জেলার এই টারসিয়ারি হাসপাতালটি এখনো সিটি
কর্পোরেশনের আওতার বাহিরে রয়ে গিয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী
প্রকৌশলী মো: আবু সায়েম ভূইয়া মুঠোফোনে কুমিল্লার কাগজের এই প্রতিবেদককে
জানান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের আওতার
বাহিরে। হাসপাতালের সামনের রাস্তাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় এবং বাংলাদেশ
সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। এই হাসপাতালটি সিটি কর্পোরেশনের আওতার বাহিরে
হলেও আমরা হাসপাতালের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে আসছি।
হাসপাতালটি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার জন্য একটি মাস্টার প্লান
করা আছে। মাস্টার প্লানটি স্থানীয় সরকার বিভাগে দাখিল করা আছে। মাস্টার
প্লান অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের ১৫০ফুটে এলাকা গুলো সিটি কর্পোরেশনের
আওতায় আনা হবে। তিনি আরো যোগ করেন পূর্বে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি
সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনা হয়নি উদ্যোগের অভাবে। সকলে সমন্বিতভাবে
উদ্যোগ নিলে জেলা পর্যায়ের এই হাসপাতালটি সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনা
সম্ভব।