শুক্রবার ১৫ নভেম্বর ২০২৪
১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
বরুড়ায় সম্পর্কের জেরে পালিয়ে যাচ্ছে কিশোর কিশোরীরা
অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন ॥ একের পর এক জিডি
মোঃ ইলিয়াছ আহমদ/ বশিরুল ইসলাম
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১:৪৮ এএম |

  বরুড়ায় সম্পর্কের জেরে পালিয়ে যাচ্ছে কিশোর কিশোরীরা


গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হয় খুকী ও আক্তার নামে দুজন, ৭ নভেম্বর নিখোঁজ হয় সুমাইয়া (১৪) ওরাইয়ান (১৪) । তারা দুজনই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ১২ নভেম্বর  নিখোঁজ হয় দশম শ্রেণির সামিয়া আক্তার (১৬), ও সুমাইয়া আক্তার (১৮)। এ বিষয়ে তাদের পরিবারের সদস্যরা নিখোজের ডায়েরী করেছে বরুড়া থানায়।  এরকম সম্পর্কের জেরে বরুড়া উপজেলা থেকে পালিয়ে বিয়ে করছে শত শত  কিশোর কিশোরীরা। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। প্রতি মাসে প্রায় ৬০ থেকে ৭০জন কিশোরী ছেলেদের হাত ধরে পালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়াও প্রতিনিয়তই নিখোঁজের ডায়েরী জমা পড়ছে বরুড়া থানায় যারা  শিক্ষার্থী নন এমন কিশোর কিশোরীদের মাঝেও এ প্রবণতা দেখা গিয়েছে।  
জানা যায়, বরুড়া উপজেলায় পাঁচ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ৩শ ৩৩টি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই উপজেলাটিতে  ১টি পৌরসভা ও ১৫ ইউনিয়ন রয়েছে। এখানে বেশিরভাগ বাড়ির পুরুষরা প্রবাসে বসাবস করায় অধিকাংশ  বাড়ীগুলো অভিভাবক শূন্য। অনেকে মনে করছেন পরিবারে তদারকির শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ায় দেখা দিয়েছে এই সমস্যা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঘুরে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি মাসে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নবম,  দশম ও একাদশ  শ্রেণির মেয়ে শিক্ষার্থীরা সম্পর্ক জনিত কারণে  ছেলেদের সাথে পালিয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে অভিভাকগণ থানায় এই নিয়ে নিখোঁজ ডায়েরী করেন। মান সম্মানের ভয়ে কেউ কাউকে মুখ খুলে বলছেন না। কোন  কোন পরিবার মান সন্মানের ভয়ে স্বীকার করে না তার মেয়েটি পালিয়ে গিয়েছে কোন ছেলের  হাত ধরে। ফলে নিখোঁজ ডায়েরী নিয়ে হাজির হয় বরুড়া থানায়। এই উপজেলায় এমন কোন বাড়ি নেই যেই বাড়িতে প্রবাসী নেই। যার ফলে পুরুষ অভিভাবকের শূন্যতায় পরিবারের তদারকি শূন্যতা সৃষ্টি হওয়াকে দায়ী করছেন কেউ কেউ। থানা সূত্রে জানা গিয়েছে  নিখোঁজ ডায়েরী আবেদন কারীর অধিকাংশই শিক্ষার্থীদের  মা। 
বরুড়া থানায় প্রতিদিন নিখোঁজের ডায়েরী করতে এসে অনেক শিক্ষার্থীর মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। থানায় জিডি করে মেয়েকে উদ্ধারের অনুরোধ করছেন। গত ১৫দিনে ফাহিমা, নুরজাহান, শাহানারা, তপন্তী, রোকেয়া, খাদিজা, সেলিন, আয়শা, মেহেরুন নামে অনেকের নিখোজের ডায়েরী জমা হয়েছে বরুড়া থানায়। এই নিখোঁজ ডায়েরীর বাহিরে আছেন অনেকে যারা পালিয়ে গিয়েছেন কিন্তু থানায় তাদের  নিখোঁজের কোন ডায়েরী করা হয়নি। 
ওরাই আপনজন সামাজিক সংগঠন বরুড়া কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুকুল ইসলাম  বলেন, কিশোর কিশোরীরা যেন প্রেমে জড়াতে না পারে এবং পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করতে না পারে সে জন্য পরিবার থেকে তাদেরকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে আরো একটি বিষয়ে নজর দিতে হবে সেটি হলো কিশোর কিশোরীদের একাদশ শ্রেনীর আগ পর্যন্ত মোবাইল ফোন না দেওয়া। 
বরুড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ কাজী নাজমুল হক বলেন, প্রতিদিন ২/৩ টি নিখোঁজের আবেদন জমা হচ্ছে। অনুসন্ধান করলে জানা যায় অধিকাংশই প্রেম সংঘঠিত ঘটনা। পুলিশ  উদ্বার করে নিয়ে আসলে মেয়েরা বলে স্বেচ্ছায় চলে গিয়েছি এবং তাঁকে বিয়ে করতে চাই। 
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নু এমং মারমা মং বলেন গণ সচেতনতার বিকল্প নেই। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে পরিবার সমাজ সবাই এগিয়ে আসতে হবে।

















সর্বশেষ সংবাদ
সাড়ে ২১ হাজার আবেদনে ফল পরিবর্তন ৩৩১ জনের
হয়রানি করতে মামলা করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
কুবিতে পিএইচডি ও এমফিল চালুর সিদ্ধান্ত
বরুড়ায় সম্পর্কের জেরে পালিয়ে যাচ্ছে কিশোর কিশোরীরা
চৌদ্দগ্রামে বাস পুড়িয়ে ৮ যাত্রী হত্যা সাবেক রেলমন্ত্রীর ভাতিজা তোফায়েল গ্রেফতার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
তিতাসে কিশোর গ্যাংকে চাঁদা না দেয়ায় গণপিটুনি
ডায়াবেটিসের রোগীদের হাতের এবং পায়ের যত্ন জরুরী........ডা. মজিবুর রহমান
চাঁদাবাজির অভিযোগে হাতিসহ দুইজন আটক
সাবেক আইজিপি শহিদুল হকসহ ৩ জন ফের দুই দিনের রিমান্ডে
মনোহরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলন
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২