বিশ্বময়
এক সংকটের কথা অতীতেও অনেকবার শোনা গেছে, আজও শোনা যাচ্ছে। তবু আজকের
কথাটা অতীতের পুনরাবৃত্তি নয়। বিংশ শতকের শেষে এসে সংকট সম্বন্ধে বোধ ও
বিশ্লেষণে বড়ো রকমের পরিবর্তন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। গত পঞ্চাশ বছরে বিজ্ঞান ও
যন্ত্রের ব্যবহারে মানুষ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। অথচ সংকট বেড়েই চলেছে। এ
নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করা ছাড়া উপায় নেই।
সভ্যতাকে বিপন্মুক্ত করার জন্য
বিকল্প শক্তির উৎসের অন্বেষণ চলছে। সৌর শক্তি এমনই এক বিকল্প। বায়ু ও
জলপ্রবাহ থেকে যে শক্তি আহরণ করা যায়, অতীতে দীর্ঘকাল ধরে মানুষ তাকে কাজে
লাগিয়েছে। আবার সেদিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। আধুনিক সভ্যতায় যে পরিমাণ
শক্তির প্রয়োজন তার সামান্য ভাগই এইসব বিকল্প উৎস থেকে আমরা আজ পাচ্ছি।
কিন্তু এখন নতুন করে চিন্তা চলছে। একটা কথা এখানে মনে রাখতে হবে। শক্তির
বিকল্প উৎস মানেই বিকল্প প্রযুক্তি। আর বিকল্প প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার
মানেই ভিন্ন এক সমাজ সংগঠন, অন্য এক জীবনচর্চা ও জীবনদর্শন।
এইমাত্র
একটি শব্দ ব্যবহার করা হলো, জীবনদর্শন। তারই সূত্র ধরে এবার আরও কিছু কথা
বলা প্রয়োজন। মানুষ কেন মানুষের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়, বৃহৎ বিশ্বের সঙ্গে
যুক্ত হতে চায়, এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখি যে, খানিকটা উত্তর পাওয়া যায়
দেহাশ্রয়ী প্রয়োজনের মধ্যে, আবার খানিকটা ওই সবের বাইরে। দেহের প্রয়োজন
মেটাতে নানা রকমের উপরকণ চাই। সেইসব এমন মানুষের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব নয়,
সেজন্য নানা মানুষের সহযোগিতা দরকার। অর্থাৎ, নিতান্ত দেহাশ্রয়ী ও
ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বার্থ থেকেও যুক্তিশীল মানুষ অন্য মানুষের সঙ্গে যোগ
চাইবে। কিন্তু এটাই সব নয়।
কল্পনা করা যাক একটি মানুষকে, যাকে নিঃসঙ্গ
কারাবাসের দণ্ড দেওয়া গেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, মানুষটির খাদ্য,
বস্ত্র ও বাসস্থানের কোনো অভাবই রাখা হবে না। শুধু অন্য মানুষের সঙ্গ থেকে
তাকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হবে। অধিকাংশ সুস্থ- স্বাভাবিক মানুষের পক্ষেই এই
ব্যবস্থা কিছুদেিনর মধ্যেই অসহনীয় মনে হবে, এমনকি আত্মহত্যাও তার কাছে
অপেক্ষাকৃত বাঞ্ছনীয় মনে হতে পারে। মানুষ মানুষের সঙ্গ চায় শুধু দেহের
প্রযোজন মেটাতে নয়, যোগের ভিতর দিয়ে মুক্তির আস্বাদ তার মনের সুস্থতার জন্য
নিতান্ত আবশ্যক।
প্রকৃতির সঙ্গেও মানুষের এইরকম একটা সম্পর্ক আছে।
প্রকৃতি থেকে আমরা আহার্য সংগ্রহ করি; আবার প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা আমরা
নানাভাবে আক্রান্ত হই, আবশ্যক হয় আত্মরক্ষার জন্য সতর্কতা। সহায়তা ও
সতর্কতায় মিলে এইভাবে মানুষের সঙ্গে বিশ্বের একটা ব্যবহারিক সম্পর্ক গড়ে
ওঠে। কিন্তু তার বাইরেও আছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত একটা অহৈতুকী শুদ্ধ
আত্মীয়তার সম্পর্ক। বন্দি মানুষও চায় তার নিঃসঙ্গ কক্ষে একটি বাতায়ন, এক
টুকরো আকাশের সঙ্গে সে যাতে আত্মীয়তা স্থাপন করতে পারে। মানুষের ভিতর যে
কবি সে চাইছে বিশ্বপ্রকৃতির মধ্যে চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে, এতেই তার মুক্তি, তা
ছাড়া মুক্তি নেই। একদিকে প্রয়োজনের নিয়মে বাঁধা সংসারের দ্বন্দ্ব, অন্য
দিকে তাকে অতিক্রম করে শুদ্ধ সংগীতের মতো এক মগ্নতা। দ্বৈত বিধৃত এই ঐক্যের
এষণাকে বাদ দিয়ে মানুষ সম্বন্ধে কোনো দর্শনই সম্পূর্ণ হয় না। জড়বাদ ও
ভাববাদের মধ্যে পাশ্চাত্য দার্শনিক ঐতিহ্যে বহুকারের যেদ্বন্দ্ব সেটা আসলে
বহু পরিমাণে মানুষের অন্তঃপ্রকৃতির দ্বৈতেরই প্রতিফলন। এর কোনো একতরফা
নিষ্পত্তিতেই বিশ্বের সঙ্গে মানুষের সম্পূর্ণ সম্পর্কটা ধরা পড়ে না। মনে
করা হয়েছে যে, হয় জড়বাদ সত্য, নয় অধ্যাত্মবাদ। কিন্তু এই ধারণাটাই কি ভুল
নয়? জড়বাদ ও অধ্যাত্মবাদের মধ্যে সম্পর্কটা গভীরতর অর্থে দ্বান্দ্বিক।
বিচ্ছিন্নভাবে দুটোই অসম্পূর্ণ, যুক্তভাবে দুইই গ্রাহ্য। কিন্তু এই তর্ক
থাক। আপাতত আমাদের আলোচনার বিষয় ভোগবাদ।
এ যুগের ভোগবাদের জন্য অনেকে
বাণিজ্যিক প্রচারকে দায়ী করেন। কিন্তু আধুনিক যুগমানসের সঙ্গে ওই প্রচারের
কোথাও মিল আছে, তাই প্রচারের এত সাফল্য। ফলিত বিজ্ঞান ও প্রাগ্রসর
প্রযুক্তি প্রকৃতির ওপর মানুষের কর্তৃত্ব বাড়িয়েছে। প্রকৃতিকে মানুষ তার
প্রয়োজনের দাস হিসেবে ভাবতে শিখেছে। সেই সঙ্গে সুখের উপায় সম্বন্ধে একটা
বিশেষ ধারণা আমাদের বুদ্ধির সমর্থন পেয়েছে। তারই পরিণতি আধুনিক ভোগবাদে।
ভাষান্তরে বলা যায়, ভোগবাদের মূল এ যুগের নগরকেন্দ্রিক সংস্কৃতিতে। প্রকৃতি
সেখানে আমাদের আত্মার বিকাশের ক্ষেত্র নয়, ততটা ভালোবাসার পাত্র নয় যতটা
সে আমাদের ভোগের সামগ্রী। অপর মানুষকেও তখন আমরা সেই দৃষ্টিতে দেখি। তাকেই
বলি বাস্তববুদ্ধি। অস্বীকার করে লাভ নেই, এই শতকের সমাজন্ত্রও একই
যুগচেতনায় আক্রান্ত।
ভোগবাদ একদিকে মানুষকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করেছে,
অন্যদিকে মানুষের স্বভাবের সঙ্গে কোথাও তার গভীর ও মৌলিক বিরোধ আছে।
প্রকৃতি ও মানুষকে যখন আমরা কেবলই প্রয়োজন মেটানোর উপকরণ হিসেবে দেখি আর
সেটাকেই বিজ্ঞানবুদ্ধি বলে ভ্রম করি, তখন আমাদের ভিতর বিশ্বের সঙ্গে শুদ্ধ
মিলনের শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। ক্রমে আমরা সংসারের ভিতর থেকেও এক নিঃসঙ্গ
কারাগারে বন্দি হয়ে পড়ি, যার রুদ্ধ কক্ষে কোনো বাতায়ন নেই। আধুনিক মানুষ
নানা রকমের উত্তেজনাকে আশ্রয় করে, নেশাকগ্রস্ততায় ডুবে গিয়ে, সেই
নিঃসঙ্গতাকে ভরে তুলতে চায়। তাতে সমস্যার্টান ঘোষণা করা হয়, সমাধানে
পৌঁছনো যায় না।
পৃথিবীর সম্পদ সীমাব্ধ। কিন্তু সব মানুষকে ভোগের উচ্চ
শিখরে পৌঁছে দেওয়ার মতো সম্পদ যদি প্রকৃতির ভান্ডারে থাকত তাতেও এ যুগের
সংকট থেকে উদ্ধার পাওয়া যেত না। যে অভাববোধ আমাদের সভ্যতাকে ভিতর থেকে কুরে
খাচ্ছে, কোনো ভোগের দ্বারাই তাকে শান্ত করা সম্ভব নয়। একথাটা বাদ দিয়ে এ
যুগের সংকটের চিত্রটা সম্পূর্ণ হয় না। মানুষের সমাজ যদি অস্ত্রের দ্বারা
বিনষ্ট নাও হয়, পরিবেশ দূষণের বিষে জর্জরিত না হয়, তবু অন্য এক আন্তরিক
যন্ত্রণা সভ্যতাকে ঠেলে দিতে পারে আত্মহননের দিকে।
সংকটের বিবরণ দেওয়াই
আমার উদ্দেশ্য ছিল। সমাধানের পথ আমি জানি, এমন দাবি করা হবে ধৃষ্টতা। তবু
সংকটের বিবরণ থেকেই সমাধান সম্বন্ধেও একটা দিশাবোধ পাওয়া যায়। পথ চলতে চলতে
পথ তৈরি হয়, ভ্রম সংশোধন করতে করতে আমরা সত্যের দিকে অগ্রসর হই। পথের
সম্পূর্ণ পরিচয় আগে থেকে দেওয়া সম্ভব নয়। দিশাবোধটাই প্রথম প্রয়োজন।
অহিংসা, বিকেন্দ্রীকরণ, পরিবেশসচেতনতা, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক
নিয়ে পুনর্বিচার, এইসব থেকেই সেই দিশাবোধ আজ আশা করা যায়।
আমরা যে সমাজে
বাস করি তার পক্ষে ডিকটেটরশিপ গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থাই নয়। সংসদীয় গণতন্ত্র
তুলনায় ভালো। কিন্তু তারকাছেও বেশি কিছু প্রত্যাশা করা ভুল। সংসদে আইন পাশ
করে আদর্শ সমাজ সৃষ্টি করা যায় না। গঠনের কাজ শুরু হতে পারে তলা থেকে।
ভবিষ্যতের অভীষ্ট সমাজের ভিত্তিতে চাই সেইসব প্রতিবেশী সংঘ যেখানে ব্যক্তি
ব্যক্তির প্রতিদ্বন্দ্বীমাত্র নয়, স্বার্থসাধনের উপকরণ নয়, একে অপরের
সহযোগী বান্ধব ও পরস্পরের পরিপূরক, আত্মার প্রসারের জন্য যেখানে কিছুটা
উষ্ণ স্থান আছে। এখান থেকেই শুরু হতে পারে যথার্থ স্বায়ন্তশাসন ও
পল্লিউন্নয়নের কাজ। বলা বাহুল্য এটা মৌল মানবসমাজের একটা আদর্শরূপ মাত্র।
কিন্তু এর মূল্য আছে। শিক্ষা সম্বন্ধে কোনো সার্থক চিন্তাই আদর্শ থেকে
বিচ্ছিন্ন করে সম্ভব হয় না। জনমত গঠনের কাজে এর প্রয়োজন আছে। ভিত্তি থেকে
শুরু করে তবেই ওপরতলার কথাটা সুসংবদ্ধভাবে চিন্তা করা যায়। বিকেন্দ্রিুত
গঠনমূলক কাজের বিকল্প নেই। যে সংসদীয় গণতন্ত্র কিছু মানুষকে ক্ষমতার লোভে
প্রলুব্ধ আর অধিকাংশ মানুষকে নিষ্ক্রিয় করে তোলে তার সীমাবদ্ধতা সম্বন্ধে
আমাদের সচেতন হওয়া দরকার। দলীয় রাজনীতির কাছ থেকে কতটা কী আশা করা যায় সে
সম্বন্ধেই নতুনভাবে চিন্তা করা আবশ্যক। সমাজের ভিত্তিসংলগ্ন মৌল
প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রশক্তি এবং দলীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ থেকে
মুক্ত না করে নতুন করে নতুন সমাজ সংগঠনের পথে বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যাবে
না।
যে নতুন জীবন ও সমাজদর্শন আমাদের আজ প্রয়োজন এদেশে তার অনেকটাই
পাওয়া যেতে পারে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও কর্ম থেকে। এঁদের ভিতর
কিছুটা বৈপরীত্য ছিল। সেটা স্বাস্থ্যকর, অস্তিত্বের গভীরতর দ্বন্দ্বের
দ্যোতক। এখন চাই মুক্ত আলোচনা এবং তলা থেকে গঠনের কাজ। সংকটমোচন অনেক দূর;
একটি সঠিক পদক্ষেপও মূল্যবান।
এপথে কিছু মানুষ নিজ নিজ সাধ্য অনুযায়ী
কাজ শুরু করেছেন। তাঁদের সংখ্যা এখনও অল্প, তবু বেড়ে চলেছে। একদিন পুরানো
বিপ্লববাদের একটা দুর্নিবার আকর্ষণ ছিল। বাংলার বহু তরুণ-তরুণী সেদিকে
আকৃষ্ট হয়েছিলেন। সেই আকর্ষণ এতই আদিম ও প্রবল যে পুরানো বিপ্লববাদের
বিশ্বব্যাপী ব্যর্থতার পরও তাকে বিপথ বলে মানতে মন চায় না। তবু সেটা বিপথই।
গঠনমূলক কাজ ও অহিংস প্রতিরোয়ধ কমিলে যে নতুন পথ, অভিজ্ঞতাই ধীরে ধীরে
আদর্শবাদী মানুষকে সেদিকে টানছে, এদেশে এবং বিশ্বময়। নানাদেশে তার নানা
নাম, নানা রূপ, তবু উদ্দেশ্যের মিল আছে। মানবমুক্তির এই নতুন প্রবক্তারা
সমাজের মৌল পরিবর্তন চান। সেই অর্থে এই দৃষ্টিভঙ্গি বিপ্লবী অথবা সদর্থে
মৌলবাদী। পুরানো বিপ্লববাদীরা রাজনীতির প্রাথমিকতায় আস্থা স্থাপন করেছিলেন।
সেই আস্থা এখন ভেঙে পড়েছে। আজ যাঁরা সমাজের আমূল পরিবর্তন চাইছেন তাঁরা
সেই পরিবর্তন হঠাৎ আসবে এমন আশা করেন না, দলীয় রাজনীতির ওপর একান্তভাবে
নির্ভর করেন না। বরং তাঁদের আন্দোলন বহুমুখী ও বহুমাত্রিম, কোনো কেন্দ্রীয়
দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, তবু নানা দিক থেকে একটি মূল লক্ষ্যের দিকে ধাবিত।
এই
বৃহৎ স্রোতের সঙ্গে এ যুগের বিভিন্ন প্রতিবাদী আন্দোলনের শাখা-প্রশাখা,
যেমন নারী ও যুব আন্দোলন, যত বেশি করে যুক্ত হবে ততই তারাও একটা মহত্তর
দিগ্বোধ ও সার্থক গতি লাভ করবে। এরই বি¯ৃÍত ধারার মধ্যে পাওয়া যাবে নানা
বিচিত্র প্রয়াসের ঐক্যের সন্ধান, সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্প্রদায়ের সামঞ্জস্য
বিধানের প্রচেষ্টা, অর্থনীতি ও প্রযুক্তি নিয়ে পুনর্বিচার, মৌল গণতন্ত্র
নিয়ে ভূমিস্পর্শী পরীক্ষানিরীক্ষা, শিক্ষা-ধর্ম-দর্শন সবকিছুর আগ্রহী
পুনর্বিবেচনা।
নাম নিয়ে বিবাদ থাকতে পারে। তবু সংকট যে আজ বহুমুখী ও
বিশ্বময়, তার ভিত্তি যে একই সঙ্গে বাস্তব ও আত্মিক, তা থেকে উদ্ধার পাওয়ার
উপায়ের ভিতরও যে সংকটের এই সার্বিক চরিত্রের প্রতিফলন চাই, এ নিয়ে সন্দেহ
নেই। আরও নিশ্চিতভাবে, ব্যাপারটা দীর্ঘ সমাধান সাপেক্ষ তবুও জরুরি। কারণ
প্রশ্নটা মানুষের অস্তিত্বের সামগ্রিক বিপন্নতা নিয়ে। সেই বিপন্নতা
বিশ্বসংসারের ভিত্তিস্বরূপ জড়প্রকৃতিতে ও পরিবেশে প্রবিষ্ট, অতএব ‘বাস্তব’
নিঃসন্দেহে, আবার আর্ত মানুষের মানসিক ও আধ্যত্মিক জীবনে পরিব্যাপ্ত। আজকের
সংকট কাল্পনিক নয়, অবাস্তব নয়, তবু সম্পূর্ণ বস্তুমুখী বা বস্তুসর্বস্বও
নয়। একদিকে সমাজ সংগঠনের পরিবর্তন চাই; অন্যদিকে সমাজের বহিরঙ্গে পরিবর্তন
ঘটালেই যে মানবমনের কাক্সিক্ষত পরিবর্তন ঘটবেই, এই ধারণা ভ্রান্ত। চেতনা ও
নৈতিকতার গুণগত পরিবর্তন, জীবনদর্শনে নবদিগন্তের উন্মোচন, মানুষের বিবর্ণের
পথে আজ এমন এক অতি অপেক্ষিত পদক্ষেপ, যার আবশ্যকতা স্বকীয় গুরুত্বে ও মৌল
মর্যাদায় স্বীকার্য। ইতিহাসের দ্বান্দ্বিকতা আজ এক নতুন মাত্রা লাভ করেছে।
এই পরিবর্তনকে আমাদের বিশ্বচিন্তার অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে।
লেখক: গবেষক ও অনুবাদক