কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুরে শৈবাল মৎস চাষ প্রকল্পের কৃষকদের লিজের ৬৫ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন আওয়ামীলীগের এক ইউপি চেয়ারম্যান। পলাতক ইউপি চেয়ারম্যানের নাম লোকমান হোসেন, তিনি ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং শৈবাল মৎস চাষ প্রকল্পের কৃষকদের কমিটির সভাপতি ছিলেন।
এদিকে লিজের টাকা নিয়ে প্রকল্পের মালিকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে জমির মালিক ও কৃষকরা। পরে বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ২৩৭ জন কৃষকের মাঝে প্রকল্পের মালিক ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর রহমান আসিফ স্থানীয়দের সহযোগিতায় সিংগুলা ইদগাহ মাঠ সংলগ্ন স্থানীয় পুনরায় লভ্যাংশের টাকা পরিশোধ করেন। তার দাবি দুইবার টাকা পরিশোধ করায় লোকসানের মুখে পড়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানিয়েন তিনি।
জানা গেছে, কৃষকদের কাছ থেকে লিজকৃত জমির ২৩৭ জন কৃষকের মোট ৯৫ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রকল্পের সমিতির সভাপতি চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন ৬৫ লক্ষ বিতরণের উদ্দেশ্যে নেন। কিন্তু ওই টাকা কৃষকদের মাঝে বিতরণ না করে ৫ আগষ্টর পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। দীর্ঘ সময়েও লিজের টাকা না পেয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে জমির কৃষকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন শৈবাল মৎস চাষ প্রকল্পের কৃষকদের বিতরণের ৬৫ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর কৃষকরা প্রকল্পের মালিকদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি বিক্ষোভ করে। পরে মালিকপক্ষ কৃষকদের মাঝে লিজের টাকা পরিশোধ করেছেন। কৃষকরা তাদের ন্যায্য টাকা পেয়েছে। তারা মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়ানোর কারণে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ন্যায্য টাকা পেয়ে খুশি হয়েছেন কৃষকরা।
প্রকল্পের জমির মালিক কৃষক হযরত আলী মাস্টার বলেন, প্রকল্পর জমির টাকা আমরা বুঝে পেয়েছি। যারা জমি লিজ নিয়েছে মালিক পক্ষের সাথে আমাদের একটি ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল, এটি এখন শেষ হয়েছে। মালিকপক্ষ আমাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করেছেন। আমরা তাদের প্রতি সন্তুষ্ট।
প্রকল্পের পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের জমি লিজের টাকা পরিশোধ করার জন্য শৈবাল মালিক পক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান লোকমানকে ৬৫ লক্ষ টাকা দেন। কিন্তু তিনি ওই টাকা না দিয়ে ৫ আগস্টের পর পালিয়ে যান। এতে কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তারা টাকা ফেরত পেতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। পরে মালিকপক্ষ পুনরায় টাকা দেয়ায় কৃষকরা যে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছিল তার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান হোসেনের ফোন নম্বরে কল করে তাকে পাওয়া যায়নি।