আসন্ন
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কট করার জন্য
ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটিশ
রাজনীতিবিদদের একটি দল। আফগানিস্তানে তালেবান শাসনে নারীদের প্রতি
বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে এই দাবি তুলেছেন তারা। তবে সেই দাবি
প্রত্যাখ্যান করে ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গুল্ড বলেছেন, এই বিষয়ে
তাদের এককভাবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে আইসিসির নেতৃত্বে সম্মিলিতভাবে
কিছু করা উচিত।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামী ২৬
ফেব্রুয়ারি লাহোরে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। এই ম্যাচ না
খেলার আহ্বান জানিয়ে ইসিবির কাছে চিঠি লিখেছেন ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার
পার্টির এমপি টোনিয়া অ্যান্টোনিয়াজি। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বিভিন্ন
রাজনৈতিক দলের ১৬০ জনের বেশি সদস্য।
চিঠিতে আফগানিস্তানে তালেবান শাসনে
নারীদের প্রতি বৈষম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২১ সালের অগাস্টে
তালেবানরা ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই আফগান নারীদের রুদ্ধ করে রাখার পদক্ষেপ
এসেছে একের পর এক। নারীদের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা নিষিদ্ধ
করা হয়েছে অনেক আগেই। সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা ক্ষেত্রেও নারীদের অংশগ্রহণ
একদম সীমিত করা হয়েছে।
খেলাধুলায় নারীদের অংশগ্রহণ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেখানে। তাতে থমকে গেছে আফগানিস্তান নারী ক্রিকেট দল গঠনের প্রক্রিয়াও।
এই
সময়ে আফগানিস্তানের ছেলেদের দলের বিপক্ষে ইংল্যান্ড ম্যাচ খেলেছে কেবল
দুটি, আর দুটিই আইসিসি ইভেন্টে। এর মধ্যে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংলিশদের
বিপক্ষে স্মরণীয় এক জয় পায় আফগানরা।
ইসিবির প্রধান নির্বাহী গুল্ডকে
উদ্দেশ্য করে চিঠিতে বলা হয়েছে, “তালেবান শাসনে আফগানিস্তানে নারী ও
কন্যাশিশুদের ওপর জঘন্য আচরণ নিয়ে কথা বলতে ইংল্যান্ড পুরুষ দলের খেলোয়াড় ও
কর্মকর্তাদের প্রতি দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।”
“আফগানিস্তানের
বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচটি বয়কট করার কথা বিবেচনা করার জন্যও ইসিবিকে অনুরোধ
করছি আমরা। এর মাধ্যমে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে হবে যে, (ক্ষমতার) এই
ধরনের জঘন্য অপব্যবহার সহ্য করা হবে না। আমাদের অবশ্যই লিঙ্গ বর্ণবৈষম্যের
বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা ইসিবিকে ঐক্যর দৃঢ় বার্তা দেওয়ার জন্য
অনুরোধ করছি এবং আশা করছি, আফগান নারী ও কন্যাশিশুদের ভোগান্তি উপেক্ষা করা
হবে না।”
ওই চিঠির প্রেক্ষিতে গুল্ডের উত্তর নিশ্চিত করেছে যে, তালেবান
ক্ষমতায় থাকাকালীন আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নেওয়ার
কোনো ভাবনা ইসিবির নেই। তবে আইসিসি ইভেন্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা
না-খেলার সিদ্ধান্ত তাদের এককভাবে নেওয়ার বিষয় নয় বলে মনে করেন তিনি।
“ইসিবি
অবশ্যই তালেবান শাসনে আফগান নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি আচরণের তীব্র
নিন্দা জানায়। আইসিসির সংবিধানে বলা হয়েছে, সব সদস্য দেশ নারী ক্রিকেটের
প্রসার ও উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে
আফগানিস্তানের বিপক্ষে কোনো দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট ম্যাচ না খেলার অবস্থান
ইসিবি বজায় রেখেছে।”
“ইসিবি এই ধরনের পদক্ষেপের জন্য সক্রিয়ভাবে সমর্থন
অব্যাহত রাখবে। কোনো একটি দেশের এককভাবে কিছু করার চেয়ে আইসিসি
সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিলে তা বেশি কার্যকর হবে।”