কুমিল্লা
ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুবের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ
এনে তাকে অবিলম্বে অপসারণের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়েছে। গতকাল
রোববার দুপুরে ‘নাগরিক কমিটি’ ব্যানারে ইপিজেডের ২নং গেইট এলাকার একটি
রেস্তোরাঁয় এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য রাখেন
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মো. আবুল বাসার।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত
বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ২০০০ সালে কুমিল্লা নগরীর পুরাতন বিমান বন্দর
এলাকায় কুমিল্লা ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এ ইপিজেডে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশের ৪৬টি শিল্প কারখানায় ৫০ হাজার ৪২৮ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী
কর্মরত রয়েছেন। এ ইপিজেডকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় আবাসন, পরিবহন,
রেস্টুরেন্ট, নির্মাণ শিল্প, হাসপাতাল, বিপণি বিতানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান
গড়ে ওঠেছে। এ ইপিজেড দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করছে। কুমিল্লার সকল শ্রেণিপেশার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী
হচ্ছে। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বহিরাগত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি বিএনপির নাম
ভাঙ্গিয়ে ইপিজেডের আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলদারি ও সন্ত্রাসী
কর্মকান্ডে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা হোন্ডা মহড়া দিয়ে ইপিজেডের
উনাইসার-আশ্রাফপুর গেইট এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে। গত ৮ জানুয়ারি ইপিজেড
গেইটে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণসহ সন্ত্রাসী
কর্মকান্ড করে। তারা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালকের সাথে আঁতাত করে তৈরি
পোশাকের বিভিন্ন শিল্প কারখানার ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে অবৈধ প্রভাব
বিস্তার শুরু করে। এতে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ ইপিজেডের বিভিন্ন শিল্প
কারখানার কর্মকর্তাদের আতঙ্কে দিন কাটছে। ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালকের
কার্যালয় ও আবাসিক এলাকার সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করলে বহিরাগতদের সাথে
ওই কর্মকর্তার সখ্যতার প্রমান পাওয়া যাবে বলেও লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়।
এসময় বক্তারা অবিলম্বে নির্বাহী পরিচালকের অপসারণসহ ইপিজেডে শান্তিপূর্ণ
পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে তার অপসারণের দাবিতে
আগামী ১৪ জানুয়ারি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন এবং ১৬
জানুয়ারি প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর আগে একই দাবিতে গত ৯
জানুয়ারি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের
মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমিটির আহ্বায়ক আবদুল ওয়াদুদ, তফাজ্জল হোসেন, মীর
হোসেন মীরু, কামাল হোসেন, দেলোয়ার হোসেন দেলু, আবদুল মতিনসহ স্থানীয় এলাকার
বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কুমিল্লা
ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, ইপিজেডের কোন শিল্প
প্রতিষ্ঠানের ঝুট বা মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বেপজা কর্তৃপক্ষের
কোনো হাত নেই, এগুলো সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান করে থাকে। আমরা শুধু মালামাল
ছাড়ের ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়ে থাকি, কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, ইপিজেডের বাইরে কোনো ঘটনা ঘটলে বা আন্দোলন করলে এসব বিষয়
দেখার এখতিয়ার আমার নেই। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সঠিক নয়।