নিজস্ব
প্রতিবেদক: অনেকটা জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্তের মতো;কুকুরের অনুকরণে হাটা ও
চলাফেরা। এমন অদ্ভূত রোগাক্রান্ত ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে অজ্ঞাত পরিচয়ে
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করানো হয়। শিশুটিকে
রাস্তায় পেয়ে লাকসাম উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পাঠিয়ে দেন কুমিল্লা
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করা ওই শিশুটি
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না । ওয়ার্ডের নার্স ও আয়া থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন
সদস্য তন্ন তন্ন করে খুঁজেন, কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি রোগীর সন্ধান।
লাকসাম
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, জলাতঙ্কের মতো অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত
অজ্ঞাত শিশুটি লাকসাম জগন্নাথ দিঘির পাড়ে কুকুরের মত আচরণ করতে দেখা যায়।
একইসঙ্গে শব্দচয়নও ছিল কুকুরের মত। শিশুটির অদ্ভুত আচরণে আতঙ্কে ছিলেন
স্থানীয় ও পথচারীরা। তার এই ধরনের কুকুর সুলভ আচরণের ভিডিও ফেসবুকসহ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর লাকসাম উপজেলার স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম শিশুটিকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্স এ ভর্তি করানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন তিনি।
লাকসাম উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের
কর্মকর্তা নাজিয়া বিনতে আলম জানান, ছেলেটি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত নয়। আমরা
যখন তাকে পেয়েছি- সে কথা বলতে পারে নি। যতটুকু ধারনা করা যাচ্ছে, সে মানসিক
নির্যাতনের শিকার। লাকসামে চিকিৎসা সম্ভব নয় বিধায় আমরা তাকে কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে শিশুটির সন্ধান চাইতে গেলে কর্তব্যরত নার্স এবং চিকিৎসকরা
জানান-‘জলাতঙ্ক রোগে’ আক্রান্ত শিশুটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে চলে
গেছেন। তবে আশপাশের ভর্তিরত রোগীরা জানান, শিশুটিকে ভর্তি করানোর পরে দেয়া
হয়নি কোন বেড। সারারাত ছিল ফ্লোরে। দুপুর পর্যন্ত শিশুটিকে মেডিসিন বিভাগে
দেখা গেলেও এরপর থেকে আর দেখা যায়নি। খোঁজও নেয়নি কোন চিকিৎসক কিংবা
নার্স।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক
ডা. মোঃ মাসুদ পারভেজ বলেন, আচরণ কুকুর সুলভ হলেও জলাতঙ্ক রোগে লক্ষণ পাওয়া
যায়নি। সোমবার রাতে ছেলেটিকে অজ্ঞাত পরিচয়ে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালে
অতিরিক্ত রোগের চাপ থাকার কারণে অজ্ঞাত ছেলেটি কোন একটি সময় হাসপাতাল ত্যাগ
করে। আমরা বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজ নিচ্ছি তার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার
জন্য।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় কুকুরের
কামড়ে শিশুসহ অন্তত ৩০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। সে সময় জলাতংক ছড়িয়ে
পড়ারও আতঙ্ক দেখা দেয় মানুষের মাঝে। তবে জলাতঙ্কের সিম্পটম থাকা শিশুটিকে
কুকুরে কামড়েছিলো কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চিকিৎসকরা বলছেন- জলাতঙ্ক
রোগে আক্রান্তদের মাঝে পানি-ভীতি দেখা যায়। যা এ শিশুটির মধ্যে ছিলো না।
তাকে পানি খেতে দেখা গিয়েছে।