দেশে
ডলারের সংকট পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। কয়েক মাস ধরে বিদেশি
মুদ্রার রিজার্ভ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে আবারও কমেছে
বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। বর্তমানে রিজার্ভ কমে ফের ২০ বিলিয়ন বা
দুই হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া
গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার (২২ জানুয়ারি) পর্যন্ত
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৯৩ বা ১ হাজার ৯৯৩ কোটি ডলারে
নেমেছে। একই দিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পৃথক হিসাব মতে, মোট রিজার্ভের পরিমাণ
রয়েছে ২ হাজার ৫২২ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
গত ১৫
জানুয়ারি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৩ কোটি
ডলার। ওইদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মতে, মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২
হাজার ৫১৮ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত ৬ দিনে বিপিএম-৬ মান অনুযায়ী রিজার্ভ
কমেছে ২০ কোটি ডলার। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের
আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা প্রকাশ করা হয় না। সেটি শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়, সে
অনুযায়ী রিজার্ভ ১৫ বিলিয়নের ঘরে।
বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের তিনটি
হিসাব সংরক্ষণের মধ্যে প্রথমটি বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট
রিজার্ভ। মোট রিজার্ভের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য
একটি সহজ শর্তের ঋণসহ আরও কয়েকটি তহবিল। দ্বিতীয়টি হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা
তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি। এটি বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত তহবিল বা ঋণের
অর্থ বাদ দিয়ে একটি তহবিল। এর বাইরে হিসাবটি ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ।
এর
আগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়ন ডলারের
নিচে নেমেছিল। ওই সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে
ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। বর্তমান সরকারের সময়ে রিজার্ভ থেকে
ডলার বিক্রি বন্ধ রয়েছে, বিপরীতে বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগ হচ্ছে। এতে
ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে রিজার্ভ।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর
ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে প্রবাসী আয়। এখন পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রতি মাসেই
দুই বিলিয়নের ঘর অতিক্রম করেছে রেমিট্যান্স। গত ডিসেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ের
নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
২০২৪ সালে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের
পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বছরজুড়ে বিশ্বের বিভিন্ন
দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা মোট ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন
ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। এর আগে এত বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স কোনো
বছর আসেনি। সেদিক থেকে একক কোনো বছরের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে ২০২৪
সালে।