অতিরিক্ত
জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) কুমিল্লা মো: তৌহিদুল
ইসলাম বলেছেন, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে অবাধ প্রবাহ
নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের মাধ্যমে যে
অর্জন তা যেন নষ্ট না হয় সেজন্য সকল দপ্তরকে তথ্য প্রদানে অনেক বেশী
আন্তরিক হতে হবে। তিনি বলেন, স্বপ্রণোদিত হয়ে জনগণকে তথ্য জানাতে সরকারি ও
বেসরকারি সকল দপ্তরকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, এক সময় তথ্য দেয়াটা
ছিল অপরাধ। আর এখন না দেয়াটা হলো অপরাধ। তিনি বলেন, দেশে একটি ইতিবাচক
পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সেই পরিবর্তনে ছাত্র তরুণদের সহায়তা করতে হবে।
আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে দুর্নীতির মুলোৎপাটন। তিনি দুর্নীতি প্রতিরোধে সকল
দপ্তরে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার আহবান জানান। তিনি গতকাল সন্ধ্যায়
তথ্য মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই
কথা বলেন।
‘তথ্যের অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার, তথ্যই শক্তি, দুর্নীতি
থেকে মুক্তি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে নগরীর বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর
মিলনায়ত প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসন, কুমিল্লা এবং সচেতন নাগরিক কমিটি
(সনাক)-কুমিল্লা এর যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সনাক-কুমিল্লার সভাপতি অধ্যাপক নিখিল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত
তথ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সনাক কুমিল্লার সহ সভাপতি
মাহমুদা আক্তার, সদস্য বদরুল হুদা জেনু, তথ্য মেলা উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক
রোকেয়া বেগম শেফালী ও আইরিন মুক্তা অধিকারী।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ
অতিথিবৃন্দ বলেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেক দপ্তরে তথ্য সকলের
জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে তথ্য
প্রদানের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। বক্তরা জুলাই বিপ্লবের অর্জন ধরে রাখতে
সবাইকে একযোগে দেশ গঠনে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান। অংশগ্রহণকারী সকল
দপ্তর এর উদ্দ্যেশ্যে বলেন, মেলার এই আয়োজন তখনই সফল হবে যখন কোন তথ্যসেবা
প্রাপ্তি তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন। বক্তারা মেলার এই শিক্ষাকে
ধরে রাখতে সবাইকে তথ্য প্রদানে ইতিবাচক মনোভাব পোষণের আহ্বান জানান।
দুইদিন
দিনব্যাপী তথ্যমেলার সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান মালায় ‘স্ব-প্রণোদিত তথ্য
প্রকাশ ও তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করনীয়’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে
অনুষ্ঠানে ৮টি সরকারি দপ্তরের জেলা প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। তাদের সাথে
বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ মতবিনিময় করেন, তৎমধ্যে
ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মককর্তা, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন
পেশাজীবী প্রতিনিধিবৃন্দ।
মেলার সমাপনী দিনে ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ
বিনির্মাণ দুর্নীতি একমাত্র অন্তরায়’ শীর্ষক প্রীতি বিতর্ক এ অংশগ্রহণ
করেন কুমিল্লা জিলা স্কুল ও নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
কুমিল্লা। এছাড়াও মেলার সমাপনী দিবসে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে
কুইজ প্রতিযোগিতা ও দুর্নীতিবিরোধী চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
দুইদিন ব্যাপী মেলায় কুমিল্লা নগরীর ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও
শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কয়েক হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন। মেলায়
অংশগ্রহণকারী ৩২টি স্টল থেকে সেবা প্রত্যাশীরা প্রায় তিন হাজার এর অধিক
আবেদনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।