কুমিল্লার
চান্দিনায় গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত তিন আসামীর একজনকে আটক করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ডাবলমুড়িং এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে
গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া আসামীর নাম হচ্ছে মো: নবীর হোসেন (২০)। সে
জেলার চান্দিনা থানার দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়নের কালিয়ারচর গ্রামের আ:
খালেকের পুত্র।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারী চান্দিনা থানার
কালিয়ারচর এলাকায় জনৈক রবির পরিত্যক্ত গরুর ফার্মে গণধর্ষনের ঘটনা ঘটে। ঐ
ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদীয় হয়ে চান্দিনা থানায় ৩জনের নাম উল্লেখ করে
গণধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। এরই মধ্যে উক্ত ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত ঘটনা কুমিল্লা
র্যাব জানতে পেরে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ৩০
জানুয়ারী চট্টগ্রাম জেলার ডাবলমুড়িং থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে
মামলার ৩নম্বর আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে
জানতে পেরেছে গণধর্ষণ মামলার ১নম্বর আসামী বোরহানের সাথে ভিকটিমের (লামিয়া
) সাথে টিকটকের মাধ্যমে পরিচয় এবং পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে
উঠে। প্রেমের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বোরহান ঘটনার দিন ভিকটিমকে মোবাইল ফোনের
মাধ্যমে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে। ভিকটিম সেখানে গেলে গ্রেফতার হওয়া আসামী নবীর,
ফরহাদসহ তার অন্য একজন সহযোগী ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে
জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে মোবাইলে ধর্ষনের ভিডিও ধারণ করে। বিষয়টি জানাজানি
করলে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করবে বলে হুমকি দেয় ও ভয়ভীতি
দেখায়। এমনকি পরবর্তীতে মুক্তিপন দাবী করে। ভিকটিম সেখান থেকে বাড়ি গিয়ে
পরিবারকে জানালে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে চান্দিনা থানায় ৩জনকে আসামী করে
গণধর্ষণ মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে
আত্মগোপনে চলে যায়। কুমিল্লা র্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় গতকাল
চট্টগ্রাম থেকে একজনকে আটক করে। আটক হওয়া আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা
গ্রহনের জন্য চান্দিনা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব-১১ এর
কোম্পানী অধিনায়ক ও উপ পরিচালক লে: কমান্ডার মাহমুদুল হাসান জানান, র্যাব
প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের
গ্রেফতার, আইন-শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস
নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। জঙ্গি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, মাদক
ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধীকে গ্রেফতারেনিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। র্যাব
গেল বছর ২০২৪ সালে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ১৫৮টি মাদক মামলায় ২৬৪
জন মাদক ব্যবসায়ী’কে গ্রেফতার করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। ।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত অভিযানে ০২ টি বিদেশী পিস্তল, ০২ টি এলজি ও
বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার পূর্বক ০৪ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ১৫ জন
চাঞ্চল্যকর অপরাধী, ০৯ জন ডাকাত, ৪০ জন কিশোর গ্যাং, ১৪ জন মৃত্যুদন্ড ও
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী, ২৮ জন চাঁদাবাজ’সহ বিভিন্ন মামলার সর্বমোট
৪৭৬ জন আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছে।