নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন বিভাগের ২০১৯-২০
শিক্ষাবর্ষের শাকিল আহমেদ সবুজ নামের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হয়েছে।
পরবর্তীতে চার ঘন্টা পর কুমিল্লা শহরের তোয়া হাউজিং এলাকা থেকে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, শিক্ষার্থী ও পুলিশ প্রশাসনের
সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। অপহরণকারীদের একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাত আড়াইটার দিকে শাকিলকে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে
শাকিল আহমেদ সবুজকে অপহরণের ঘটনায় পাঁচজনের নামসহ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩
জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কুমিল্লার
কোতোয়ালি মডেল থানায় ভুক্তভোগী শাকিল নিজে বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার
বিবরণ থেকে জানা যায়, নামসহ বিবাদী পাচঁজন হলেন– কুমিল্লার সাতরা চম্পকনগর
এলাকার আমির হোসেন বাবুর্চি ওরফে আবুল কাশেমের ছেলে মাসুম (২০), বিষ্ণুপুর
এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে জিহাদ (১৯), ঝাউতলার আক্তার মোল্লার ছেলে সাইফুল
(২০), ফৌজদারির নিধু মিয়ার ছেলে শাওন (২০) এবং একই এলাকার শাহিন (২০)।
এরমধ্যে গতরাতেই মাসুমকে (২০) গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী
শাকিলের ভাষ্যমতে, রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টিউশন শেষ করে কুমিল্লা শহর থেকে
ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য সে সিএনজিতে উঠে। অপহরণকারীরা একই সিএনজিতে অবস্থান
করে। পরবর্তীতে দৌলতপুর এলাকায় আসার পর তাকে ভুল রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার
সময় সে সিএনজি থেকে লাফ দেয়। এরপর ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য অটোরিকশা নিলে
এখানেও অপহরণকারীরা তার পিছু নেয়। পরবর্তীতে তার পেটে ছুরি ধরে শহরের
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে তোয়া হাউজিং এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনে আটকে রাখে।
এরপর শাকিলের ফোন দিয়ে পরিবারের কাছে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে
অপহরনকারীরা।
অপহরণকারীদের মধ্যে আটককৃত একজন কুমিল্লার সাতোরা এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ নাহিদ (২০)।
পুলিশের
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করে মোঃ নাহিদ বলেন, তারা পাঁচজন
মিলে শাকিলকে অপহরণ করে। বাকী চারজনের নাম ও পরিচয়ও জানিয়েছে আটককৃত
নাহিদ।
এবিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক
মুহাম্মদ সাকিব হুসাইন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছোটভাইয়ের কাছ থেকে
অপহরণের তথ্যটি পেয়ে শাকিলের (ভুক্তভোগী) নাম্বার সংগ্রহ করে আমরা পুলিশ
প্রশাসনের কাছে পাঠাই। পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসন ট্রেক করে তোয়া হাউজিং
এলাকায় অবস্থান জানতে পারে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ও শহরের কিছু
শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় এবং পুলিশ প্রশাসনের তৎপরতায় শাকিলকে সুস্থভাবে
উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি, অপহরণকারীদের মধ্যে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।'
কুমিল্লা
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, নগরীর তোহা হাউজিং এলাকা
থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে উদ্ধার করি। আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে
উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। অপহরণকারীদের একজনকে আটক করা
হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে।'