কুমিল্লার নাঙ্গলকোটেবিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হয়েছেন। তার নাম মোঃ সেলিম ভূঁইয়া। তিনি উপজেলার হেঁসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ছিলেন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বাংঙ্গড্ডা বাজারে এঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার বিকেলে বাংগড্ডা এলাকায় নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ওই সময় সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়া সমর্থিতরা একটি গাড়িবহর নিয়ে বাঙ্গড্ডা বাজার অতিক্রম করার সময় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় সংঘর্ষে হেঁসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সেলিম ভূইয়া নিহত হন।
মারা যাওয়া সেলিম ভুঁইয়া সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়া গ্রুপের সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে।
নিহতের ভাই আব্দুর রহিম বলেন, আমার ভাই সেলিম ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। সে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়ার সাথে রাজনীতি করে আসছে। শনিবার বিকেলে গফুর ভূঁইয়ার একটি সভায় যাওয়ার পথে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার লোকজন অর্তকিত হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। আমি আমি ভাইয়ের হত্যা চাই। বিএনপি হয়ে বিএনপির নেতাকে কিভাবে হত্যা করলো, কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে আমি এ বিষয়ে জবাব চাই।
সেলিম ভাইয়াকে নিজের কর্মী দাবি করে সাবেক সংসদ আলহাজ্ব আব্দুল গফুর ভুঁইয়ার বলেন, সেলিম হেঁশাখাল ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ছিলো। তার উপর হামলার সময় ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না, তবে শুনেছি মোবাশ্বেরের লোকেরা হামলা চালিয়েছে। যুবদলের সভাপতি মনির, সাধারণ সম্পাদক টিপু, লিটনসহ আরো কয়েকজন ছিলো সেখানে। তাদের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নাই। তারা কাগজ-কলমে নেতা হইছে। তারা যেখানে যায় গুন্ডাবাহিনীদের সঙ্গে রাখে। তারা সব সময় স্বশস্ত্র অবস্থায় থাকে। আমরা ন্যায় বিচারের জন্য ব্যবস্থা নেব।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি'র উপজেলা সভাপতি মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার মুঠোফোনে জানান, আমি বিকালে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিলাম। যেখানে ঘটনা সেখানে পাল্টাপাল্টি কোন কর্মসূচিও ছিলো না। কখন কিভাবে কি হলো, আমি কিছুই জানি না।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক জানান, দুই গ্রুপের মারামারিতে সেলিম ভুইয়া নামে একজন নিহত হয়েছে। তার মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে , তার শরীরে বড় ধরনের কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নি। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনেই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। এই ঘটনায় রাত ৮টা পর্যন্ত কোন মামলা হয় নি।
এদিকে, সেলিম ভূঁইয়া হত্যার বিচারের দাবিতে নাঙ্গলকোট উপজেলা সদরে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল করে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া গ্রুপ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তরা সেলিম ভূঁইয়ার হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।