কুমিল্লা
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের আয়োজনে গবেষণায় অসামান্য
অবদান রাখায় গুণী শিক্ষকদেরকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এতে বিজ্ঞান অনুষদের ৫
জন, কলা ও মানবিক অনুষদের ১জন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ২ জন, ব্যবসায়
শিক্ষা অনুষদের ৩ জন এবং প্রকৌশল অনুষদের ২ জনসহ সর্বমোট ১৩ জন শিক্ষককে
সম্মাননা স্মারক ও প্রণোদনা দেওয়া হয়।
রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা
১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে গবেষণা
প্রণোদনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক
ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গবেষণা ও সম্প্রসারণ
দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন।
প্রধান অতিথির
বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী বলেন, 'আপনাদের এই প্রণোদনা
মানুষ দেখে দেওয়া হয়নি, অথর দেখে দেওয়া হয়নি, আপনাদের কনটেন্টের দিকে
তাকিয়েই দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী র্যাশিওটা
অনেক বেশি। আপনারা এতো বেশি ক্লাস নিয়েও কিউ ওয়ান জার্নালে রিসার্চ পাবলিশ
করতে পেরেছেন, আপনাদের স্যালুট জানাই। এই প্রণোদনা পেয়ে অন্য শিক্ষকরা
উৎসাহিত হবে, এটাই আজকের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য।'
তিনি আরও বলেন,
'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে পার্থক্য
এখানেই। আপনারা নলেজ ক্রিয়েট করেন। প্রত্যেকটা পাবলিকেশন একটা নিউ
ক্রিয়েশন। এই প্রণোদণা দেওয়ার ধারা প্রতি বছর অব্যাহত থাকবে। আশা করি,
আমাদের শিক্ষকরা অনুপ্রাণিত হয়ে সামনে আরও বেশি গবেষণা করবে।'
উপ-উপাচার্য
অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র জ্ঞান বিতরণের
জায়গা না। এখানে জ্ঞান সৃষ্টি, জ্ঞান চর্চারও একটা জায়গা। এ জ্ঞান সৃষ্টি
করার জন্য চিন্তা, ধ্যাণ, গবেষণা প্রয়োজন। আমাদের সৃষ্টি জগতে এখনো অনেক
জ্ঞান রয়েছে, যেগুলো আমরা উদঘাটন করতে পারি। এজন্য গবেষণার কোনো বিকল্প
নেই। এ গবেষণায় উৎসাহিত করার জন্য আমাদের আজকের এই প্রণোদনা অনুষ্ঠান। আমরা
আশা করবো, আজকে এখানে যতজন প্রণোদণা পাচ্ছেন, আগামী বছর আমরা দ্বিগুণ
শিক্ষকদের এইরকম প্রণোদণা দিতে পারবো।'
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ
সোলায়মান বলেন, 'আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একটি
রেকর্ড এসেছে যে, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটা দেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে বি
ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। যার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে মাস্টার্স
করতে পারে না। এর কারণ হলো, আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যে কাজগুলো করছে সে
অনুযায়ী তাদের প্রোফাইলগুলো আপডেট করছে না। ফলে বিশ্ব র্যাংকিং এ আমাদের
কাজগুলো দেখতেছে না। তাদেরকে আমাদের কাজগুলো জানান দিতে হবে। আমাদের সবার
এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আপনারা যারা এখানে এসেছেন,
নিশ্চয় তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগামী শিক্ষক। আপনাদের মাধ্যমে যদি এই
ম্যাসেজটা প্রত্যেকটা বিভাগ এবং শিক্ষকের কাছে যায় তাহলে এটা খুব অল্প
সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং গবেষণা ও
সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ বেলাল উদ্দিন বলেন, 'আজকে যে
প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে এটা টাকার অঙ্কে বেশি না হলেও, এটা একটা প্রতীকী
সম্মাননা এবং আমরা আশা করি এই প্রণোদনা দেখে আগামীতে অন্য শিক্ষকরাও
উৎসাহিত হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই সম্মাননা দেওয়া হয়ছে ২০২২ সালের ১লা
জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ই জুন পর্যন্ত মোট ২ বছরে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের
ভিত্তিতে। এতে সর্বমোট ২৮ জন শিক্ষক তাদের গবেষণা পত্র জমা দিয়েছিল। তাদের
মধ্য থেকে ১৩ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের
মানদণ্ড ধরা হয়েছে বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল অনুষদের জন্য ছ১ এবং অন্যান্য
অনুষদের জন্য ছ১ ও ছ২ গবেষণা পত্র।'