কুমিল্লার
চান্দিনায় পাওয়ার গ্রীডের ১৩২ কেভির বৈদ্যুতিক লাইনের তার বেয়ে ঘুড়ি আনতে
যায় এক যুবক। প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার বৈদ্যুতিক টাওয়ারে উঠে ওই লাইনের তারে
ঝুলে ঘুড়ি আনার দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেন শতশত উৎসুক জনতা। অনেকে ওই ভিডিও
ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে মুহুর্তে সেটি ভাইরাল
হয়।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) বিকাল পৌঁনে ৫টার দিকে চান্দিনা পৌরসভার
হারং এলাকায় ওই ঘটনা দেখে স্থানীয়রা। ঘুড়ি আনতে যাওয়া ওই ব্যক্তিকে প্রথমে
মানসিক ভারসাম্যহীন ভেবে আতংকিত হয় স্থানীয়রা। এখনি বুঝি বৈদ্যুতিক সকে
পুড়ে মাটিতে পড়বে এমন আশঙ্কা নিয়ে রীতিমতো তাদের মধ্যে চিৎকার চেচামেচি
করতে শোনা যায়।
স্থানীয়রা জড়ো হয়ে যখন এ দৃশ্য দেখছিল ঠিক তখন
চান্দিনা-রামমোহন সড়কে চলাচলরত অনেক যানবাহন থামিয়ে যাত্রীরাও দেখতে থাকেন।
বলতে থাকেন, এটা কিভাবে সম্ভব? এই ছেলে এত উঁচুতে তার বেয়ে কিভাবে উঠল?
যেখানে বিদ্যুতের সাধারণ লাইন স্পর্শ করলে মানুষ মুহুর্তেই মারা যায়, আর
এমন উচ্চ ভোল্টের তারে কিভাবে উঠল? জীবনের চেয়ে কি ঘুড়ির মূল্য বেশি? এমন
নানা কথা বলছেন আর মহান সৃষ্টি কর্তাকে প্রাণ ভরে ডাকছেন যেন ছেলেটি সুস্থ
অবস্থায় মাটিতে নেমে আসতে পারে।
প্রায় ৪০ মিনিট পর সন্ধ্যা ছুঁই ছুই
অবস্থায় আবারও তার বেয়ে মাটিতে নেমে আসার পর উৎসুক জনতা তাকে ঘিরে ফেলে।
অতঃপর জানা যায়, ওই ছেলে বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের কাজ করেন। গত এক বছর
যাবৎ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছয়ঘড়িয়া এলাকায় পাওয়ার গ্রীডের নির্মাণ
কাজ হয়। ওই কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। ১৩২ কেভি ক্ষমতা সম্পন্ন ওই পাওয়ার গ্রীড
খুব শীঘ্রই চালু হওয়ার কথা রয়েছে। বৈদ্যুতিক ওই লাইনের হারং এলাকায় একটি
ঘুড়ি আটকে থাকায় প্রায় ২৫ বছর বয়সী ওই শ্রমিক তার থেকে ঘুড়ি সরাতে সেখানে
উঠে। কাঁধে সেফটি বেল্ট থাকা ওই বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ শ্রমিক তার নাম ও
পরিচয় দেয়নি। শুধু বলছেন পল্লী বিদ্যুতের সামনে আমরা ভাড়া থেকে কাজ করি।
স্থানীয়
মোটরসাইকেল মেকানিক আসিফ জানান, আমরা দোকানে কাজ করা অবস্থায় হঠাৎ মানুষের
চিৎকার শুনতে পেয়ে বের হয়ে দেখি, একটি লোক গ্রীডের তারে ঝুলে আছে। আমরাও
প্রথম ভেবেছিলাম হয়তো পাগল হবে। এতোই উঁচুতে ছিল নিচ থেকে মানুষটিকে
ভালভাবে কিছুই বুঝা যাচ্ছিল না। এমন দৃশ্য দেখে স্থানীয় নারী-পুরুষ আতংকিত
হয়ে পড়ে। ওই লোক নেমে আসার পর জানতে পারি তিনি বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের
শ্রমিক।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জুনিয়র
ইঞ্জিনিয়ার দীপক দেবনাথ জানান, ওই লাইনটি ছয়ঘড়িয়া পাওয়ার গ্রীডের। ২/১
দিনের মধ্যেই চালু হওয়ার কথা। লাইনে বিদ্যুত না থাকায় রক্ষণাবেক্ষণের কাজে
ওই শ্রমিক সেখানে উঠে, না হয় সেখানে কোন মানুষ উঠারই কথা নয়।