নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি:
কুমিল্লার
নাঙ্গলকোট উপজেলায় আবারও বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এবার
উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোবাশ্বর আলম ভুইয়া গ্রুপের ওপর আরেক বিএনপি
নেতা সাবেক সংসদ সদস্য গফুর ভূঁইয়া গ্রুপের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে নাঙ্গলকোট মধ্য বাজারে মোবাশ্বের আলম ভাইয়ার সমর্থনে
একটি মিছিলে অতর্কিত হামলা করে বেশ কয়েকজনকে রক্তাক্ত আহত করা হয়েছে বলে
অভিযোগ করেছে মোবাশ্বের গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় অন্তত চার জনকে
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরো
অন্তত ছয় জন বলে দাবী করেছে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সভাপতি নুরুল
আমিন জসিম।
সংঘর্ষে ওমর সাদী, নোমান, জিয়াউর রহমান, আকরাম ও ফারাবি
নামে পাঁচজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কথা জানিয়েছে আহত সাদীর বাবা
নাঙ্গলকোট পৌরসভা বিএনপি সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন জসিম।
এর আগে গত ১
ফেব্রুয়ারী মোবাশ্বের আলম গ্রুপের হামলায় সেলিম ভাইয়া নামে এক স্বেচ্ছাসেবক
দল নেতার মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে মোবাশ্বের আলম ভাইয়া গ্রুপের বিরুদ্ধে। এই
ঘটনায় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সহ তার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
দায়ের করা হয়। এরই প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে নাঙ্গলকোটে প্রতিবাদ
মিছিল বের করে মোবাশ্বের আলম গ্রুপ। সেখানেই হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে ২৯ জানুয়ারি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নজির আহমেদ গ্রুপ এবং গফুর ভুইয়া গ্রুপের একই স্থানে সভা করা নিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
বৃহষ্পতিবার
হামলার বিষয়ে নাঙ্গলকোট পৌরসভা বিএনপি সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন জসিম বলেন,
আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হঠাৎই হামলা চালায় আবদুল গফুর ভূঁইয়ার গ্রুপের
লোকজন। এসময় তাদের নিক্ষেপিত ককটেল, গুলি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ১০
নেতাকর্মীকে আহত করার দাবি করেন এ নেতা। তিনি আরো বলেন বৃহস্পতিবার বিকেল
৫টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া ও
নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার মৃত্যুকে হত্যায় রুপান্তর
করে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদে নাঙ্গলকোট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করি।
বিক্ষোভ মিছিলটি ব্যাংক চত্ত্বরে আসলে চর্তুদিক থেকে ককটেল, ইটপাটকেল
নিক্ষেপ, আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা শুরু হয়।
তিনি
জানান, আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় আমার ছেলে ওমর সাদী ও উপজেলার বাইয়ারা
গ্রামের ছাত্রদল নেতা নোমান কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা
হয়েছে। আহত অন্যান্যরা হলেন, পৌরসভা ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান, ঢালুয়া
ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা আকরাম, ফারাবি, অন্যদের নাম এখনো জানতে পারিনি। আহতরা
নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে
চিকিৎসাধীন।
নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.কে ফজলুল হক বলেন,
খবর শুনে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়েছি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে
পরিস্থিতি শান্ত আছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোবাশ্বের
আলম ভাইয়া বলেন, আমার নেতাকর্মীদের মিছিলের উপর আকস্মিকভাবে উঁচু ভবনের
উপর থেকে ককটেল ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে
সেটার প্রতিবাদ জানাতে এসেছিলো নেতা কর্মীরা। এখন আমার নেতা কর্মীদের উপর
আবার হামলা করেছে। অন্তত ১০ জন নেতা কর্মী আহত হয়েছে। বিএনপি কেন বিএনপির
উপর হমলা করবে? এটাই আমার প্রশ্ন।
এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি
নেতা গফুর ভূঁইয়া অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে জনসভায় ছিলাম। এর সাথে
আমার কোন নেতাকর্মী জড়িত নয়। এমন হতে পারে হত্যা মামলার আসামির পক্ষ নিয়ে
মিছিল করায় জনগণ ক্ষেপে গিয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নজির
আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ৫ ই আগস্ট এর পর অনেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠ
হতে চেষ্টা করছে। তাতে আমাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সেজন্য যে মারামারি
করে তারা ইমেজ সংকটে ফেলছে তা কোন ভাবেই কাম্য নয়। আমি স্থানীয়
নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে সেটি মহাসচিব বরাবর জানাবো।