#২০২৩ সাল থেকে টিকা সংকট দেখা দেয়
#জেলায় ৬ লক্ষাধিক টিকার চাহিদা রয়েছে
#অধিকাংশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নেই ।
কুমিল্লার জেলা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে বর্তমানে টিকা সরবরাহ বন্ধ থাকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরা। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় এসব টিকার সেবা নিতে আসা মাঠ পর্যায়ে ভুক্তভোগীরা টিকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এ নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন এন্ড ইমিনাইশেন (এধার) টিকা সরবরাহ করার কথা থাকলেও বর্তমানে এ সংস্থা থেকে তা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় বিভিন্ন টিকার চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬ লক্ষাধিক। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বিসিজি, পেন্টাভ্যালেন্ট, পিসিভি, ওপিইউ, আইপিভি টিকা জেলা সদরসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর কোথাও সরবরাহ নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে খবর নিয়ে জানা যায়, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম, বরুড়া, মেঘনা, লালমাই, তিতাস, দাউদকান্দি, মুরাদনগর ও দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমআর ও টিডি টিকা স্বল্প পরিমাণ সরবরাহ থাকলেও বিসিজি, পেন্টা, পিসিভি, ওপিইউ ,আইপিভি ভ্যাকসিনের সরবরাহ একেবারেই নেই।
এর মধ্যে হোমনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কোন টিকাই নেই। মনোহরগঞ্জ, দেবিদ্বারসহ কয়েকটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এমআর ও টিডি টিকা পাশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ধার করে এনে শিশুদের দেওয়া হচ্ছে তাও স্বল্প পরিমাণে।
এদিকে টিকা সংকট থাকায় সেবা গ্রহীতারা এসে টিকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। শিশুদের সময়মত টিকা দিতে না পেরে এ নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন অভিভাবকরা। কেউ কেউ সপ্তাহে ২/৩ দিন তিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়েও টিকা না পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, শিশুদের জন্য জরুরী পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন ও রোবেলা টিকা সরবরাহ বন্ধ আছে। হুপিংকাশি, হেপাটাইটস বি, টিটেনাসসহ প্রয়োজনীয় টিকা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেবা প্রত্যাশীরা।
গত বৃহস্পতিবার সকালে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ৩ মাস বয়সী বাচ্চার জন্য টিকা দিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন দাউদকান্দি পৌর এলাকার তাছলিমা আক্তার। তিনি বলেন, গত এক মাসে চার বার এসেও টিকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি। কখন টিকা পাবো তারা বলতে পারছে না। একই বক্তব্য হোমনা কলেজ রোডের বাসিন্দা বীমা কর্মী নুরুন নাহারের। তিনি বলেন, ৪ মাস বয়সী বাচ্চাকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও টিকা সরবরাহ নাই বলে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। কখন টিকা আসবে তাও বলছে না কেউ।
এ বিষয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন রেজা মো.সারোয়ার আকবর বলেন, টিকার সংকট জাতীয় একটি সমস্যা। কুমিল্লায় এমআর ও টিডি ভ্যাকসিন কিছু থাকলেও তা একেবারেই স্বল্প। এছাড়া জেলায় আর কোন ভ্যাকসিন নেই। জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রতিদিনই টিকার সংকটের বিষয়টি অবহিত করা হলেও আমরা কোন সমাধানের পথ খুঁজে পাচ্ছি না। কেন্দ্রীয়ভাবে স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তারা টিকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।