বাংলাদেশের
ফুটবলপ্রেমীদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। তাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা হামজা
দেওয়ান চৌধুরি বাংলাদেশের জার্সিতে খেলবেন। ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে খেলতে
আগামীকাল বাংলাদেশে আসছেন হামজা। ম্যানচেস্টার থেকে তিনি সরাসরি সিলেট
নামবেন। সেখান থেকে তার শেকড় হবিগঞ্জের বাহুবল গ্রামে যাবেন।
হামজার সফর
উপলক্ষ্যে বাফুফের চার জন সদস্য ইকবাল হোসেন, গোলাম গাউস, কামরুল ইসলাম
হিল্টন ও সাখওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহীন আজ সিলেট ও হবিগঞ্জ পরির্দশন করেছেন।
সিলেট বিমানবন্দরের নানা আনুষ্ঠানিকতা নিশ্চিতের পর তারা হামজার বাড়িতে যান
তারা। দুই জেলার প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর সাথে বাফুফে কর্তারা
সাক্ষাত করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। সকালে সিলেট পৌঁছে
বিকেলে হবিগঞ্জ ঘুরে রাতে সিলেটে ফিরছে বাফুফের প্রতিনিধি দল।
বাফুফে
সদস্য সাখওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহীন সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে বলেন, 'আমরা
সিলেট বিমানবন্দরে নেমেই বিমানবন্দরের পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তিনি
সর্বাত্নক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। ইমিগ্রেশন অতিক্রম করার পরই আমরা তাকে
ফুল দিয়ে রিসিভ করতে পারব। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে
রওনার জন্য গাড়ি থাকবে। সিলেটের ডিআইজি হবিগঞ্জ পর্যন্ত পুলিশি সহায়তা
প্রদান করব।'
প্রতিনিধি দলের আরেক সদস্য সাবেক জাতীয় ফুটবলার ও বাফুফের
নির্বাহী সদস্য গোলাম গাউস গাড়ির বিবরণ দিয়ে বলেন, 'হামজার জন্য সমর্থকরা
মুখিয়ে আছে। এ জন্য আমরা ছাদখোলা গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। যাতে সমর্থকরা
হামজাকে সরাসরি দেখার সুযোগ পান।'
হামজা আগামীকাল রাতে নিজ বাড়িতেই
থাকবেন। এর পরের দিন রাতে ঢাকায় টিম হোটেলে যোগদান করার কথা। প্রায় ৩৬
ঘন্টা হবিগঞ্জে অবস্থান করায় সেখানকার নিরাপত্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ,
'হবিগঞ্জের এসপি (পুলিশ সুপার) আমাদের নিশ্চিত করেছেন, ৬ জন পুলিশ সদস্য
হামজাকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদান করবে। আমরা হামজার বাড়িতে গিয়ে তার
বাবার সঙ্গে সামগ্রিক বিষয় অবহিত করেছি। তিনিও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।'
হামজার
সঙ্গে তার স্ত্রী, মা, তিন সন্তানও আসছেন। হামজা এর আগে কয়েকবার বাংলাদেশে
আসলেও এবার বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন। তাই সিলেট ও হবিগঞ্জ উভয় জেলায় বাড়তি
উন্মাদনা। স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীরা হামজাকে বরণের জন্য মুখিয়ে আছেন। বিগত
সময়ের চেয়ে এবার হামজার বাড়ি থাকার সময় একটু বিশেষই। এ নিয়ে বাফুফে
প্রতিনিধি দলের পর্যবেক্ষণ, 'আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী
উভয়ের সঙ্গে হামজার নিরাপত্তা-সুযোগ-সুবিধার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি এবং
দুই জেলায় আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে আশ্বস্ত করেছে।'
বাফুফের চাওয়া ১৮
মার্চ রাতে ঢাকায় ক্যাম্পে যোগদান করুক হামজা। তার মায়ের চাওয়া আরো একটি
রাত সে হবিগঞ্জে নিজের বাড়িতে কাটাক। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল এই বিষয়টি
নিয়ে এখনো কাজ করছেন। প্রবাসী ফুটবলারদের বাংলাদেশের জার্সিতে খেলানোর
পেছনে ফেডারেশনের ব্যয়ও রয়েছে। হামজার এই সফরে ইউসিবি ব্যাংকের সহায়তা
পেয়েছে বাফুফে এমন মন্তব্য করেছেন আজ বাফুফে ও ইউসিবির মধ্যকার চুক্তি
স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে।
১৯ মার্চ বাংলাদেশ দলের টিম ফটোসেশন রয়েছে। এরপরই
সংবাদ সম্মেলন। বুধবার দলীয় অনুশীলন হবে নাকি জিম এটি কোচ হ্যাভিয়ের এসে
সিদ্ধান্ত নেবেন। 'অনুশীলন সেশনের বিষয়টি নির্ভর করছে কোচের উপর। সে কীভাবে
পরিকল্পনা করছে। আমরা কোচের মতামতের পর বিষয়টি চূড়ান্ত করতে পারব', বলেন
বাফুফে সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম।
হামজার আগমন নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের মতো
বাফুফে কর্তারাও বেশ উচ্ছ্বসিত। হামজাকে বরণ নিয়ে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান
আমিরুল ইসলাম বাবু সর্বপ্রথম বলেছিলেন বিশাল আকারে তাকে সংবর্ধনা প্রদান
করা হবে। বাস্তবিক অর্থে এখন সেই আকারে বাফুফে কিছুই করতে পারছে না সময়
স্বল্পতা ও কোচের নির্দেশনার জন্য। বাফুফে কর্মকর্তাদের অগ্রিম মন্তব্য
সংগঠনটির অপেশাদারিত্ব ও সমন্বয়হীনতা ফুটিয়ে তুলে বারবার। হামজা আগামাকীল
আসছে গণমাধ্যমগুলো নিজ উদ্যোগে ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আপডেট
সংগ্রহ করছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাফুফে হামজা আগমন উপলক্ষ্যে
আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দিতে পারেনি।