চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে শ^শুড়ের ধর্ষণে ৭ মাসের অন্তঃস্বত্তা
হয়েছে পুত্রবধু। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মোঃ নাসির বাদি হয়ে শ^শুড় ছেরু
মিয়া, জামাতা মোঃ সাইফুল ও শ্বাশুড়ি আয়েশা বেগমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা
দিয়েছে। মামলার কিছুক্ষণের মধ্যে শ্বশুড় ছেরু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল
উদ্দিন আহমেদ।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সাত মাস আগে মোবাইল ফোনের
মাধ্যমে শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর বাড়ির ছেরু মিয়ার ছেলে ওমান প্রবাসী মোঃ
সাইফুলের সাথে কাশিনগর ইউনিয়নের অশ^দিয়া গ্রামের মোঃ নাসিরের মেয়ে আছমা
আক্তারের(ছদ্মনাম) বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকদিন পর তাঁর শ^শুড় ছেরু মিয়া শ^াশুড়ি
আয়েশা বেগম অসুস্থ্য বলে আছমা আক্তারকে শ^শুড় বাড়িতে নিয়ে যায়। গত ৪ মাস
আগে আছমার জামাই ওমান থেকে ছুটিতে দেশে আসে এবং সংসার করতে থাকে। গত ১৮
মার্চ সাইফুল তার স্ত্রীকে মিয়াবাজারস্থ একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে
আল্ট্রাসনোগ্রাফী করালে ৭ মাসের অন্তঃসত্তা বলে ডাক্তার মতামত দেয়। সাইফুল
তার স্ত্রীকে রিপোর্টসহ বাড়িতে নিয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্তা হওয়ার বিষয়ে জানতে
চাইলে আছমা আক্তার বলে, তাঁর শ^শুড় ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক শয়ন কক্ষে
একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং ঘটনা কাউকে না বলার জন্য নিষেধ করে। যদি কাউকে
বলে, আছমা আক্তারকে মেরে লাশ গুম করিয়া ফেলবে বলে হুমকি দেয়। ভয়ে আছমা
ধর্ষণের ঘটনার বিষয়টি কাউকে বলেনি। বিষয়টি জানার পর মোঃ সাইফুল ও তাঁর মা
আয়েশা বেগম অভিযুক্ত ছেরু মিয়াকে কিছু না বলে উল্টো গত ১৮ মার্চ বিকেলে
আছমা আক্তারকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য
ক্লিনিকে নিতে চায়। কিন্তু আছমা আক্তার রাজি না হওয়ায় তাকে ঘরে আটকে রেখে
বলে, এ ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলবে। আর গর্ভপাত ঘটানো হলে আছমা আক্তারকে ১০
শতক জায়গা রেজিষ্ট্রি করে দিবে বলে প্রস্তাব দেয়। আছমা আক্তার প্রস্তাব
প্রত্যাখ্যান করে কৌশলে বিষয়টি তাঁর মাকে অবহিত করে। পরবর্তীতে ২১ মার্চ
শুক্রবার সাইফুল ও তাঁর পিতা ছেরু মিয়া শ্রীপুরে নাসিরের বাড়িতে গিয়ে আইনের
আশ্রয় নিলে আছমা আক্তারকে মেরে লাশ গুম করার হুমকিসহ নানা ভয়ভীতি প্রদর্শ
করে চলে যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় থানায় মামলা দায়ের করলে কিছুক্ষণের
মধ্যেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ শ^শুড় ছেরু মিয়াকে আটক করে।
ধর্ষিতার পিতা মোঃ নাসির বলেন, ‘মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। বর্তমানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছে’।
এদিকে
আছমা আক্তারের স্বামী ওমনা প্রবাসী মোঃ সাইফুল বলেন, ‘শ^শুড় যে অভিযোগ
দিয়েছে, তা সত্য। মানুষ ভুল করতেই পারে। তবে সামাজিকভাবে শালিশ বৈঠক বসে
সমাধান করে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আমি সংসার করতে চাই। আমার স্ত্রীকে ফিরে
পেতে চাই’।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মফিজুর রহমান ও সর্দার জাহাঙ্গীর হোসেন
বলেন, ‘শ^শুড় কর্তৃক পুত্রবধুকে ধর্ষণের ঘটনা শুনেছি। তবে ভিকটিমের স্বামী
তাকে গ্রহণ করতে আগ্রহী রয়েছে’।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে
দ্রুত ছেরু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। শনিবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ
করা হয়েছে’।