লালমাই প্রতিনিধি:
কুমিল্লার
লালমাইয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সালিশি বৈঠকের বাদী হাবিবুর
রহমান (৬০) কে দিনদুপুরে শত শত মানুষের সামনে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনায় পুলিশ সালিশি বৈঠকের বিবাদীর ছেলে ও কুষ্টিয়া ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার করেছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর
আগে সোমবার বিকেল ৩টায় উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের হাতিলোটা গ্রামে
সালিশি বৈঠকে হামলার ঘটনা ঘটে। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় কুমিল্লা মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ হাবিবুর রহমানের মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার ভোর রাতে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশ হামলাকারী আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেফতার করে।
নিহত
হাবিবুর রহমান উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের হাতিলোটা গ্রামের মৃত শরাফত
আলীর ছেলে। কর্মজীবনে তিনি স্থানীয় শংকুরপাড় দিঘীর নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব
পালন করতেন।
আহতরা হলেন হাবিবুর রহমানের ভাই মিজানুর রহমান ও হাছান আলী।
গুরুতর আহত মিজানুর রহমান কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
রয়েছেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,
দীর্ঘদিন ধরে হাতিলোটা গ্রামের হাবিবুর রহমানের সাথে আবদুল জলিলদের জমি
সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সোমবার সকাল ১০ টায়
আবদুল জলিলদের উঠোনে সালিশি বৈঠকে বসে স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল হোসেন খোকন
ও গ্রাম সর্দার ছালামত উল্যাহসহ উভয় পক্ষের সালিশদাররা। বৈঠকে কথা
কাটাকাটির জেরে দুপুর ৩ টায় আবদুল জলিলের ছেলে কুষ্টিয়া ইসলামি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন (২৩) লাঠি দিয়ে প্রতিপক্ষের
লোকজনদের পিটাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আবদুল্লাহর লাঠির পিটুনিতে মাথায়
আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাবিবুর রহমান অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং মিজানুর
রহমান গুরুতর আহত হন। হামলা করতে গিয়ে আবদুল্লাহও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন।
উভয় পক্ষের সমর্থকরা আহতদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে
ভর্তি করলে বিকেল সাড়ে ৫টায় হাবিবুর রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ
করেন।
নিহতের মেয়ে মায়া আক্তার বলেন, তারা আমাদের জমি দলিল করে নিয়ে
গেছে। সেই জমি ফেরত আনতে সালিশি বৈঠক বসেছে। শত শত মানুষের সামনে আমার
বাবারে আবদুল্লাহ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। আমি তার ফাঁসি চাই।
লালমাই
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, খবর পেয়ে আমি
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ কুমিল্লা
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের ছেলে শাকিল হোসাইন
বাদী হয়ে ৬জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রধান আসামী
আবদুল্লাহ আল মামুনকে সোমবার গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুমিল্লা শহর
থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।