গত
১৯/০৩/২০২৫ইং তারিখের কুমিল্লার প্রসিদ্ধ স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক কুমিল্লার
কাগজে ঈমান ও আমল সংক্রান্ত কিছু আলোচনা করা হয়েছিল। ঐ লেখায় ঈমান
সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারনা আমরা পেয়েছি। ঈমানের পর আমলের ব্যাপারেও গুরুত্ব
সহকারে আলোচনা করা হয়েছে। আমলের ব্যাপারে আরও কিছু কথা এখানে আলোচনা করব
ইনশা আল্লাহ। ঈমানের কোন নির্দিষ্ট সময় ও স্থান নেই। আমার মন চাইল আমি ঈমান
আনলাম মন চাইলনা ঈমান থেকে সরে গেলাম। অমুক স্থানে গেলাম ঈমান ঠিক রাখলাম
আবার পরবর্তীতে ঈমান থেকে বেরিয়ে গেলাম। বুঝে আসলে ঈমান আনলাম আবার নিজের
বুঝ মত হয়নাই ঈমান আনলাম না। এগুলো করার সুগোগ নাই। ঠিক আমলের ক্ষেত্রেও
এমন। আমার পছন্দমত হলে আমল করলাম নয়ত ছেড়ে দিলাম। আমার মন চাইলে আমল করলাম
নয়ত করলামনা এমনটি করার সুযোগ নেই। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর হাবিব
দঃ এর মাধ্যমে যে আমল যেভাবে, যে সময়ে করার বিধান দিয়ে দিয়েছেন সেভাবেই তা
মেনে নিয়ে করতে হবে। এরমধ্যে হেরফের করা যাবেনা। যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ।
এই ফরজ নামাজের ব্যপারে যে সময় ও নিয়ম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে সে সময়ে ও
নিয়মেই তা আদায় করতে হবে এর বিন্দুমাত্র এদিক সেদিক করা যাবেনা। আমার নিজ
খেয়াল খুশিমত আদায় করা যাবেনা। ফজরের নামাজ ফজরের নির্দিষ্ট সময়, জোহরের
নামাজ জোহরের নির্দিষ্ট সময়ে এভাবে প্রতিটি ওয়াক্ত নামাজের সময় মহান আল্লাহ
কর্তৃক নির্ধারীত। মহান আল্লাহর বানী- নিশ্চয়ই নামাজ নির্দিষ্ট সময়ের
মধ্যে ফরজ মুমিনদের উপর। সুরা নিসা, আয়াত-১০৩। ঠিক তেমনিভাবে রোজা। দিনের
ছোট বড় হিসাব করে আমার ইচ্ছামত ফরজ রোজা রাখা যাবেনা। যেই মাসকে নির্ধারণ
করে দেওয়া হয়েছে সে মাসেই রাখতে হবে। দিন ঘন্টার হিসাবে ছোট হোক বা বড়।
আবার হজ্জের ব্যাপারটাও তদ্রুপ। মোটকথা শরিয়তের প্রত্যেকটি আমল করতে হবে
আমার খেয়াল খুমি মত নয় বরং যা করার করতে হবে কুরআন ও সুন্নাহর বিধান
অনুসারে এবং রাসুল করিম দঃ এর দেখানো পথে। যা তিনি দঃ নিয়ে এসেছেন তা আঁকড়ে
ধরতে হবে এবং যা নিষেধ করেছেন তা বাদ দিতে হবে। এটাই সর্বক্ষেত্রে আমলের
মূল সূত্র। মহান আল্লাহর বানী-রাসুল করিম দঃ যা দেন তা গ্রহণ কর এবং যা
নিষধ করেন তা থেকে বিরত থাক। সুরা হাশর, আয়াত নং-০৭। অন্যত্র মহান আল্লাহ
বলেন- হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহ তায়ালা ও রাসুল করিম দঃ এর আদেশ মান্য কর।
সুরা নিসা, আয়াত নং-৫৯। আর প্রতিটি আমল হতে হবে একাগ্রতা, নিয়্যতের
বিশুদ্ধতা ও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। এই তিনের অনুপস্থিত হলে আমল হবে
ঠিকই তবে তা কবুল হবেনা। আখেরাতে এর বিন্দুমাত্র ফলাফল পাওয়া যাবেনা। তাই
আমাদের সকলেরই সচেতন হওয়া উচিত। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই এই ধারা অব্যাহত
রাখতে হবে তবেই ইহকাল ও পরকালে আমরা সফলকাম হতে পারব। আরেকটি জিনিস না
বললেই নয়। কোন অবস্থাথেই বান্দার হক নষ্ট করা যাবেনা। নামাজ, রোজা, হজ্জ,
যাকাত ঠিক থাকার পর যদি বান্দার হক্ব নষ্ট করা হয়ে থাকে তাহলে কিয়ামতের
ময়দানে আটকে থাকতে হবে ঐ বান্দার হজ্বের জন্য। এ ব্যাপারে ইনশা আল্লাহ পরে
এক সময় লেখব। আমাদের সকল আমাদের সকল আমলগুলো মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয়
হাবিব দঃ এর দেখানো পথে করার তৌফিক দিন। আমিন।
প্রধান ইমাম ও খতীব, কান্দিরপাড় কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ ও কেন্দ্রিয় ঈদগাহ, কুমিল্লা।