কুমিল্লার
লাকসামে বিভিন্ন ব্রেন্ডের নকল কোমল পানীয়, চিপসসহ শিশুদের মুখোরোচক খাবার
তৈরির একটি অবৈধ কারখানায় গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) অভিযান চালিয়েছেন
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার হামিদ।
ভ্রাম্যমান
আদালতের মাধ্যমে ওই কারখানা মালিককে নগদ ২লাখ টাকা জরিমানা ও দুই মাসের
বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। একইসঙ্গে ওইসব ভেজাল পণ্য জব্দ ও
কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে। অবৈধ ওই কারখানার মালিকের নাম মো. রেজাউল
করিম রতন। তিনি উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আঙ্গারিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
ওইদিন
বিকেলে লাকসাম পৌর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার এই অভিযান পরিচালনা
করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার
হামিদ। সেনাবাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত যৌথ অভিযানে জব্দকৃত বিপুল
পরিমাণ ওইসব ভেজাল খাবারপণ্য ধ্বংস করা হয়।
এ সময় লাকসাম সেনাক্যাম্পের
দায়িত্বরত কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন সৈকত, লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
নাজনীন সুলতানাসহ সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্য এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী
উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, লাকসাম পৌর শহরের
পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে লাকসাম-মনোহরগঞ্জ সিএনজি ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন সড়কের পাশে
অবস্থিত 'এসএস অটো ওয়ার্কসপ' নামে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা গ্যারেজ'র
আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কারখানায় শিশুদের মুখোরোচক ভেজাল খাবার,
বিভিন্ন ব্রেন্ডের চিপস, আচার, জুসসহ নানাহ রকম ভেজাল কোমল পানীয় তৈরিসহ
বাজারজাত করে আসছেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও
লাকসাম থানা পুলিশ ওই কারখানায় যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময়
বিপুল পরিমাণ ওইসব অস্বাস্থ্যকর ও ভেজাল পণ্য, পন্য উৎপাদনের উৎপাদন,
ক্ষতিকারক কেমিক্যাল, রংসহ নানাহ রকম সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অভিযানে
জব্দকৃত খাবার পণ্যের মধ্যে রয়েছে নকল ‘ডিঙ্কো’, ‘ম্যাংগো’, ‘আনিসা’,
‘ফ্রুটু’সহ বিভিন্ন নামের জুস, ফুড আচার, চাটনি, ‘শাহজালাল চাটনি’,
‘লেক্সাস বিস্কুট। এ ছাড়া, নকল ‘দুপ মশার কয়েলও ছিলো। এসব খাবার পণ্যে
বিষাক্ত রং ও কেমিক্যাল ব্যবহৃত হতো। এ ছাড়া, ওই কারখানার মালিক প্রতারণার
মাধ্যমে ওইসব পণ্যের মোড়কে বিএসটিআই'র ভূয়া অনুমোদিত সীল ব্যবহার করতেন।
ভ্রাম্যমান
আদালতের বিচারক লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউছার হামিদ
জানান, কারখানার মালিক রেজাউল করিম রতন রাজধানী ঢাকার চকবাজার থেকে নকল
মোড়ক এনে উৎপাদিত এসব পণ্যে ব্যবহার ও বাজারজাত করতেন।
তিনি জানান,
অভিযান চলাকালে অবৈধ ওই কারখানার মালিক নিজের অপরাধ স্বীকার করেছেন। অবৈধ এ
কারখানাটি সিলগালা করাসহ কারখানার মালিক রেজাউল করিম রতনকে লাকসাম থানা
পুলিশের.মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ইউএনও আরও জানান, জব্দকৃত এসব
ভেজাল পণ্েযর অধিকাংশই শিশুদের খাবার। অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমাণ
ওইসব ভেজাল পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে।