তালেবান
সরকার ক্ষমতায় আসিন হওয়ার পর থেকেই আফগানিস্তানে নারীদের বিভিন্ন অধিকার
থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে। মেয়েদের মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ
করে তারা। এরপর তাদের ‘নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইভস’ ট্রেনিং ইন্সটিটিউট বন্ধ
ঘোষণা করা নিয়ে সরব ছিলেন মোহাম্মদ নবি ও রশিদদের মতো তারকা ক্রিকেটাররা।
আগে থেকেই নির্বাসিত আছেন নারী ক্রিকেটাররা। যা নিয়ে এবার সক্রিয় হচ্ছে
আইসিসির পাশাপাশি তিন দেশের ক্রিকেট বোর্ড।
নির্বাসিত আফগান নারী
ক্রিকেটারদের আবারও ক্রিকেটে ফেরাতে আইসিসি, বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট
বোর্ড), ইসিবি (ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) ও সিএ (ক্রিকেট
অস্ট্রেলিয়া) আর্থিক সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার জন্য তারা কোনো অর্থ
নেবে না আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) কাছ থেকে। আইসিসির এক
মুখপাত্র ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা
বলছেন, ‘আইসিসি এখনও আফগানিস্তান (নারী) দলকে গণনায় নিচ্ছে না। পরিবর্তে
আমরা আইসিসির আইনগত ও সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকে এই জটিল ইস্যু নিয়ে
আলোচনা এবং সমাধান খুঁজে পাওয়ার প্রক্রিয়া অনুসরণ করব।’ তবে আফগানিস্তান
থেকে অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাসিত ১৯ নারী ক্রিকেটারই কেবল আইসিসির বিবেচনাধীন
নয় বলেও জানান তিনি, ‘যে যেখানেই বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আফগানিস্তান থেকে
নির্বাসনে আছেন, তাদের সবাইকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’
আফগান নারী
ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে আইসিসি। যার অধীনে
আর্থিক সাহায্য থেকে প্রশিক্ষণসহ সব রকম সাহায্য করা হবে তাদের। ভারত,
ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ড আইসিসির এই উদ্যোগের সহযোগী
হিসেবে থাকছে। একটি তহবিল গড়ে তোলা হবে আফগান নারী ক্রিকেটারদের জন্য। সেই
তহবিল থেকে ক্রিকেটারদের আর্থিক সাহায্যও করা হবে। এ ছাড়া আধুনিক উচ্চমানের
প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা এবং মেন্টরের ব্যবস্থা করা
হবে।
এর আগে ২০২০ সালের করোনাকালে ২৫ নারী ক্রিকেটারকে কেন্দ্রীয়
চুক্তিতে এনেছিল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু এক বছরেরও কম সময়ের
মধ্যে তালেবান ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতি বদলে যায়। তালেবানের লক্ষ্যবস্তুতে
পরিণত হয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ও তাদের পরিবার। কয়েকজন নারী ক্রিকেটার ভয়ে
ক্রিকেটসামগ্রী পুড়িয়ে ফেলেন, কেউ কেউ পালিয়ে যান বিদেশে। ফিরোজা আমিরি,
বেনাফশা হাশিমিসহ অনেক নারী ক্রিকেটার বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থী
হিসেবে বসবাস করছেন। তাদের কেউ মেলবোর্নে অবার কেউ আছেন ক্যানবেরায়।
ক্রিকেটের
কারণে স্বদেশ থেকে নির্বাসিত ফিরোজা আমিরি কিছুদিন আগে ক্রিকইনফোকে
বলেছিলেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেটে এই মুহূর্তে আফগান পুরুষ দল ভালো অবস্থানে আছে।
যদি তারা (রশিদ-নবি) আমাদের সমর্থন করতে শুরু করেন, তাহলে তারা আমাদের দলে
বড় প্রভাব ফেলবেন। তারা আমাদের জন্য, সব নারীর জন্য খুবই, খুবই সহায়ক হয়ে
উঠতে পারেন। মেয়েরা যদি খেলাধুলা শুরু করতে পারে, তাহলে লেখাপড়াও করতে
পারবে। এটি একটি উপায় হতে পারে। দয়া করে আপনারা মেয়েদের কণ্ঠস্বর হোন।
আমাদের জন্য আরও কিছু করুন। আপনারাই আফগানিস্তানের কণ্ঠস্বর। আপনারাই এই
মুহূর্তে (দেশের) সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ।’