পাঁচ
দিনে বদলে গেল দৃশ্যপট। গত ১১ এপ্রিল স্প্রিন্টার জহির রায়হান বাংলাদেশ
ক্রীড়া লেখক সমিতির ২০২৪ সালের সেরা অ্যাথলেটের পুরস্কার পেয়েছেন। এর
চারদিন পর আজ (বুধবার) রাতে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন তাকে ছয় মাসের
জন্য অ্যাথলেটিক্সের সকল কর্মকাণ্ড থেকে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ফেডারেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় জহির রায়হানকে ফেডারেশন
এই শাস্তি প্রদান করেছে এমন এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন ফেডারেশনের
সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম।
বিশ্ব ইনডোর অ্যাথলেটিক্সে দ্রুততম মানব
ইসমাইলের পরিবর্তে জহির রায়হানকে মনোনয়ন দিয়েছিল ফেডারেশন। সেই জহির রায়হান
চীনে অংশগ্রহণের পর গণমাধ্যমের সামনে হিটে বাদ পড়ার পেছনে নিজ খরচে
অনুশীলন করেছেন বলে মন্তব্য করেন। ফেডারেশনের দাবি– জহির তার সংস্থা
নৌ-বাহিনীর অধীনে অনুশীলনে ছিলেন। মিডিয়ায় তার এমন মন্তব্যে ফেডারেশনের
ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মত কর্তাদের।
সাফ অ্যাথলেটিক্স
চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য জাতীয় দলের ক্যাম্পে ছিলেন জহির। চীন থেকে ফিরে এসে
তিনি ক্যাম্পে যোগদান করলেও ঈদের পর আর আসেননি। জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের
ক্যাম্প আর্মি স্টেডিয়ামে হলেও, তিনি বিকেএসপিতে ক্যাম্প করেছেন। এই বিষয়টি
তার সংস্থাকে অবহিত করেছে ফেডারেশন। এর প্রেক্ষিতে সংস্থা থেকে কোনো উত্তর
পায়নি ফেডারেশন।
ক্যাম্পে যোগদান না করে বিকেএসপিতে অবস্থানের জন্য
ফেডারেশন জহির রায়হানকে শোকজও করেছিল। সেই শোকজের উত্তর দেননি দেশের অন্যতম
সেরা এই অ্যাথলেট। সকল বিষয় পর্যালোচনা করে অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন জহির
রায়হানকে ৬ মাসের জন্য অ্যাথলেটিক্সের সকল কর্মকাণ্ড থেকে নিষেধাজ্ঞা
দিয়েছে। পাশাপাশি তাকে দ্বিতীয়বারের জন্য সর্বোচ্চ সর্তকর্তাও দেওয়া
হয়েছে।
২০২১ সালে স্প্রিন্টার জহির রায়হান টোকিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণ
করেন। সেই জহির পরবর্তীতে ব্যক্তিগত ঘটনায় জেল হাজতেও ছিলেন। নৈতিক স্খলন,
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ায় ফেডারেশন ২০২১ সালের ৯
ডিসেম্বর তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাথলেটিক্স থেকে বহিষ্কার করে। আইনি
প্রক্রিয়ার পর ভবিষ্যতে এরকম কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি না হওয়ারও অঙ্গীকার
করেন জহির। এর প্রেক্ষিতে ফেডারেশন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছিল।
অ্যাথলেটিক্সে
পুনরায় ফিরে জহির তার ৪০০ মিটার ইভেন্টে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছেন। ২০২৪
সালে ইরানে এশিয়ান ইনডোর অ্যাথলেটিক্সে রৌপ্যও জেতেন তিনি। এভাবেই দেশের
অন্যতম শীর্ষ অ্যাথলেটে পরিণত হন স্প্রিন্টার জহির রায়হান। জেল ও
নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে অ্যাথলেটিক্স অঙ্গনে আবার দোর্দন্ড প্রতাপে ফিরেছিলেন।
সেই জহির আবার ফেডারেশনের নিষেধাজ্ঞায় পড়ে আবারও ক্যারিয়ার সংকটে পড়েছেন।
আজ ঘোষিত সাজা নিয়ে জহির কোনো মন্তব্য করতে চাননি। কিছুদিনের মধ্যে
সাংবাদিক সম্মেলন করে তার অবস্থান ও ফেডারেশনের কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত বিষয়
বিস্তারিত ব্যক্ত করবেন বলে জানিয়েছেন।