আন্তর্জাতিক
ক্রিকেট ক্যারিয়ারে পাকিস্তানের জার্সিতে বৈষম্যের শিকার হওয়ার অভিযোগ
করেছিলেন দেশটির সাবেক তারকা স্পিনার দানিশ কানেরিয়া। এবার ভারতের জম্মু ও
কাশ্মিরে সংঘটিত বন্দুক হামলার ঘটনায় তিনি স্বদেশি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ
শরীফের দিকেই আঙুল তুলেছেন। পাক রাষ্ট্রপ্রধান এই হামলা নিয়ে সরাসরি মুখ
খুলছেন না এমন দাবিতে তিনি জঙ্গীদের আশ্রয় ও লালন করছেন বলে অভিযোগ
কানেরিয়ার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) দেওয়া
এক টুইটে তিনি অভিযোগ করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলে
কানেরিয়া প্রশ্ন করেন, ‘যদি পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের
ভূমিকা না থাকে, তবে কেন প্রধানমন্ত্রী নিন্দা জানাচ্ছে না?’ পাক প্রধান
শাহবাজ শরীফ নিজে বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুললেও দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই
সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এরপর সাবেক
পাক ক্রিকেটার কানেরিয়া আরও তুলোধুনো করে লিখেছেন, ‘কেন পেহেলগামের ঘটনার
পর দেশজুড়ে বিভিন্ন বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে? কারণটা
গভীরে রয়েছে, তোমরা সত্যিটা জানো। তোমরা জঙ্গিদের আশ্রয় দাও এবং তাদের লালন
করছ। সেজন্য তোমাদের জন্য সত্যিই লজ্জা হয়।’
পাকিস্তান ক্রিকেটের
ইতিহাসে এখন পর্যন্ত দুজন হিন্দু ক্রিকেটার খেলেছেন। তাদের একজন দানিশ
কানেরিয়া ও অপরজন অনিল দলপত। কানেরিয়া পাক জাতীয় দলে খেলেছেন ওয়াসিম আকরাম ও
ইউনুস খানদের সময়ে। সেই সময় তিনি ছিলেন পাকিস্তান টেস্ট দলের অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ স্পিনার। কানেরিয়া পাকিস্তানের হয়ে ৬১টি টেস্টে পেয়েছেন ২৬১
উইকেট। এ ছাড়া ১৮টি ওয়ানডেতে তার শিকার ১৫ উইকেট।
তাজাল নুর নামে এক
সংবাদকর্মী কানেরিয়ার সেই টুইটের নিন্দা জানালে, আরেক পোস্টে এই ক্রিকেটার
লেখেন, ‘আমি পাকিস্তান কিংবা এখানকার মানুষের বিপক্ষে কথা বলছি না।
সন্ত্রাসবাদের কারণে পাকিস্তানই সবচেয়ে চেশি ভুগছে। তারা এমন নেতা প্রাপ্য
তারা শান্তির জন্য তাদের পাশে দাঁড়াবে, সন্ত্রাসীদের পক্ষে নয় কিংবা তারা
যখন নিষ্পাপ মানুষকে হত্যা করে তখন নীরব থাকবে না।’
তিনি আরও লিখেছেন,
‘পাকিস্তানের জার্সি আমি গর্বের সঙ্গে গায়ে জড়িয়েছিলাম। আমার ঘাম ও রক্ত
দিয়েছি ক্রিকেট মাঠে। কিন্তু পেহেলগামের ভুক্তভোগীদের মতোই আমিও ভিন্নরকম
আচরণ পেয়েছি– লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে কেবল হিন্দু বলে। যারা সন্ত্রাসবাদকে
সঠিক প্রমাণ করতে চায় তাদের জন্য লজ্জা। আমি সত্যের সঙ্গেই আছি, মানবতার
পক্ষে আছি। আশা করি পাকিস্তানের সকল মানুষ একই কাজ করবে। তাদের ভুল পথে
চালিত করবেন না। শয়তানের পক্ষে থাকবেন না।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুর
দেড়টার দিকে জম্মু ও কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর কয়েকজ বন্দুকধারী হামলা
চালায়। পেহেলগামের সেই সশস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর বেশ উত্তপ্ত হয়ে
উঠেছে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক। ভারতের অভিযোগ– পরোক্ষভাবে এ হামলায়
পাকিস্তান জড়িত। এসবের মধ্যেই উভয় দেশ পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি
ব্যবস্থা নিচ্ছে।