কুমিল্লার
লালমাইয়ে মিথ্যা মামলা ও আর্থিক হয়রানী থেকে বাঁচতে অহিদুর রহমান মজুমদার
নামের একজন আইনজীবি সহকারির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলার ভুলইন
উত্তর ইউনিয়নের বড়তুলা গ্রামবাসী।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বড়তুলা গ্রামের
আনন্দ বাজারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের দুই শতাধিক নারী পুরুষ
উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগীদের হয়ে লিখিত বক্তব্য
পাঠ করেন আরিফুর রহমান মজুমদার।।
লিখিত বক্তব্যে আরিফুর রহমান মজুমদার
বলেন, অহিদুর রহমান মজুমদার খোকন একজন আইনজীবী সহকারী। বিগত কয়েক বছরে সে
কখনো নিজেকে এডভোকেট কখনো বিচারকের একান্ত সচিব পরিচয় দিয়ে এলাকার অসহায়
দরিদ্র মানুষদেরকে জিম্মি করে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে আবার সেই মামলা
শেষ করার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে। যে কেউ তার এসব
অন্যায়ের প্রতিবাদ জানালে তাকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয়। গ্রামের
প্রায় প্রতিটি পরিবারই তার মিথ্যা মামলা ও আর্থিক হয়রানীতে ভুক্তভোগী। তার
এসব হয়রানীর বিরুদ্ধে বড়তুলা গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ গণস্বাক্ষর
করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী জাহিদ মজুমদার বলেন, অহিদুর রহমান
গংদের মিথ্যা মামলায় আমার বাবা মরহুম মুজিবুর রহমান মজুমদার মৃত্যুর পূর্ব
পর্যন্ত মামলার আসামী ছিলেন। এই অহিদুর রহমান আ.লীগের রাজনীতি করতেন। তার
ভগ্নীপতি লোকমান হোসেন জঙ্গির ডোনার। লোকমানের ছেলে জঙ্গি মামলার আসামি হয়ে
জেল খেটেছে দীর্ঘদিন।
ভুক্তভোগী মাজেদা আক্তার বলেন, কিছুদিন আগে আমাকে
ও আমার ছেলেকে অহিদুর রহমান খোকন ও তার স্ত্রী প্রচুর মারধর করে। এর
প্রেক্ষিতে আমরা মামলা করি। এতে তারা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমাদের ও মামলার
স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। এই মামলায় আমার ছেলে দুই মাস জেলে
ছিল।
অহিদুর রহমান খোকনের চাচাতো ভাই মনির হোসেন বলেন, সে আমার আপন
চাচাতো ভাই হওয়া সত্ত্বেও আমি ও আমার স্ত্রীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল
খাটিয়েছে। এই আক্ষেপে কিছুদিন পর আমার স্ত্রী মারা যায়। চাচাতো বোনের
মামলায় স্বাক্ষী হওয়াই আমার অপরাধ।
ভুক্তভোগী সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, মামলাবাজ অহিদুর রহমান খোকনের সাথে
আমার কো-অপারেটিভ সংক্রান্ত কিছু লেনদেন ছিলো। তার পাওনা গ্রামবাসীর
উপস্থিতিতে পরিশোধ করলেও মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানী করেছে। তার মামলার
কারনে আমাকে ৭ বছর বিনা বেতনে চাকরি করতে হয়েছে।
ভুলইন উত্তর ইউনিয়ন
পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ভুক্তভোগী আবুল কালাম বলেন, অহিদুর রহমান
খোকনের সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই৷ সে পরপর দুইবার আমার সাথে ইউপি
নির্বাচনে মেম্বার পদে প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছে। এতে
ইর্ষান্বিত হয়ে আমার নামে মিথ্যা মামলা করে। মামলাটি ডিবি পুলিশ ও
ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পায়নি।
স্কুল
শিক্ষক মঞ্জুরুল হক বলেন, অহিদুর রহমান খোকন ও তার ভগ্নীপতি লোকমানের
দেওয়া বিভিন্ন মামলায় আমি বাদী পক্ষের একজন। কিন্তু গ্রামে মামলার যে জট
সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক ভাবে শান্তির লক্ষ্যে আমি তা নিরসন করার চেষ্টা করি।
কিন্তু অহিদুর রহমানরা আমাদের ডাকে সাড়া দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে
অহিদুর রহমান মজুমদারের আইনজীবী সহকারী সনদ বাতিলসহ তার সহযোগীদের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে আনন্দ বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে বড়তুলা
গ্রামবাসী।