নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া এলাকায় সার্কাস থেকে একটি এশিয়ান ব্ল্যাক
বিয়ার ভাল্লুক ও দুইটি বানর উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। শনিবার (২৬ এপ্রিল)
দুপুরে ঢাকা থেকে আসা বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও কুমিল্লা বন বিভাগের
সমন্বয়ে ওই সার্কাস পার্টি থেকে ভাল্লুক ও বানর উদ্ধারউদ্ধার করা হয়। পরে
বিকালে এগুলোকে গাজীপুরের উদ্দ্যেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণী
গুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের
রেঞ্জার মাজহারুল ইসলাম।রেঞ্জার মাজারুল ইসলাম জানান, সার্কাসে ভাল্লুক ও
বানরের মতো বন্যপ্রাণীর ব্যবহার হচ্ছে এরকম পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরবর্তীতে বন সংরক্ষক হোসেন মাহমুদ নিশাত ওই সার্কাসে
ভাল্লুক, হাতি, বানর দিয়ে খেলা দেখানো হচ্ছে বলে তথ্য সংগ্রহ করেন এবং
আমাদের কাছে দেন। যেহেতু কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের কাছে বন্যপ্রাণী
সংরক্ষণের কোন সুযোগ নেই সেই কারণে আমরা ঢাকার ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম ইউনিট
এর সহযোগিতা নিয়ে তাদেরকে ওই সার্কাস থেকে উদ্ধার করি। মাজহারুল ইসলাম আরো
জানান, সার্কাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মুচলেখা গ্রহণ করা হয়েছে যে- তারা আর
বন্যপ্রাণী দিয়ে খেলা দেখাবেন না। ধারণা করছি কালো রংয়ের এই ভাল্লুকটিকে
পার্বত্য চট্টগ্রামের আলীকদম এলাকা থেকে খুব ছোট্ট বয়সে সংগ্রহ করে
সার্কাসের কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১৫ বছর ধরে ভাল্লুকটিকে বন্দী করে এভাবে
সার্কাসের খেলা দেখানো হচ্ছে বলে ধারণা করছি। কুমিল্লায় বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও
সংরক্ষন নিয়ে কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন জানান,
শুধুমাত্র খাবারের লোভ দেখিয়ে বছরের পর বছর একটি বন্যপ্রাণীকে এভাবে লোহার
খাঁচায় বন্দী রেখে সার্কাসের ব্যবহার করা একটি অপরাধ। আমার ধারণা
ভাল্লুকটিকে অন্তত ১২ বছর এভাবে খাঁচা বন্দি রেখে সার্কাসে ব্যবহার করা
হয়েছে। ভাল্লুকটি মুক্ত হচ্ছে দেখে ভালো লাগছে।ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন
আরো বলেন, আমাদের দেশে এ ধরনের এশিয়ান কালো ভাল্লুক প্রায় বিপন্ন। যেকোনো
ধরনের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করে তার নিজ পরিবেশে ফেরত দেয়া উচিত। বন্যপ্রাণী
অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা বলেন, ওই মেলা থেকে দি রাজমনি
সার্কাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা গ্রহণ করা হয়েছে যে, তারা আর
ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী ব্যবহার করবে না। যদি আবারও এমন অভিযোগ আসে তাহলে
তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণী গুলোকে গাজীপুর
সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।