কুমিল্লার
মুরাদনগরে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ফাহিমা আক্তার নামের এক কিশোরী বিষপানে
আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফাহিমা
আক্তার (২২) একই গ্রামের কৃষক কামাল মিয়ার মেয়ে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে
সর্বমহলে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় প্রেমিক অলিউল্লাহসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
হয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
খোঁজ
নিয়ে জানা যায়, বিগত ৪ বছর পূর্বে পাশের মাহুতিকান্দা গ্রামের আইয়ুব আলীর
ছেলে প্রবাসী হাবিবুর রহমানের সাথে ফাহিমা আক্তারের পারিবারিক ভাবে বিয়ে
হয়। বিয়ের পর ফাহিমা আক্তার তার নিজ গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে অলিউল্লাহর
সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। অলিউল্লাহ নিজেও বিবাহিত। পরে অলিউল্লাহর
পরামর্শে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফাহিমা আক্তার তার স্বামী হাবিবুর
রহমানকে তালাক দেয়। তাদের ৪ বছরের সংসার জীবনে আড়াই বছরের একটি পুত্র
সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে উভয়ে ঘনিষ্ট সময় পার করার পাশাপাশি বিয়ের প্রলোভন
দেখিয়ে অলিউল্লাহ নগদ এক লক্ষ টাকা ও দেড় ভড়ি স্বর্ণালংকার ফাহিমা আক্তারের
কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ৯ এপ্রিল অলিউল্লার বিরুদ্ধে
গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশ কারীরা অলিউল্লাহকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা
করেন। সালিশের পর অলিউল্লাহ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সেই জরিমানার টাকা দিতে
গড়িমসি করে। ক্ষোভে দুঃখে রোববার রাত আনুমানিক ১২টায় আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে
ফাহিমা আক্তার বিষপান করে। তখন পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুরাদনগর
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য
পার্শ্ববর্তী দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্র্তৃব্যরত
ডাক্তার ফাহিমা আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ফাহিমা আক্তারের মা
জুলেখা বেগম বলেন, আমার মেয়ের আত্মহত্যার জন্য অলিউল্লাহ দায়ী। সে প্রলোভন
দেখিয়ে আমার মেয়েকে স্বামীর ঘর ছাড়া করেছে। তার জন্যই আমার মেয়ে আত্মহত্যা
করেছে। আমি অলিউল্লাহ’র দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
অভিযুক্ত অলিউল্লাহর মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রেমিক অলিউল্লাহর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মুরাদনগর
থানার ওসি জাহিদুর রহমান দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা
বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। পাশাপাশি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা
অব্যাহত আছে।