দুই সপ্তাহ আগেও খোলা
সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৮০ টাকা লিটার। গত সপ্তাহে রাজধানীর বাজারগুলোতে
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ১৬৭ টাকা লিটার। এই সপ্তাহে এই সয়াবিন ফের
বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা লিটার দরে। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে আগের দামে
ফিরলো সয়াবিন তেলের দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘এখনও নতুন দরের তেল
বাজারে ছাড়েনি কোম্পানিগুলো। তাছাড়া শীত বেড়ে যাওয়ার কারণে খোলা সয়াবিনের
দাম বেড়ে গেছে।’
এদিকে ১ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০
টাকা। গত সপ্তাহে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটার ১৭৮ টাকাতেও বিক্রি করছেন
অনেকে। অবশ্য গত সপ্তাহের মতো ব্যবসায়ীরা পাঁচ লিটার বোতল জাত সয়াবিন তেল
বিক্রি করছেন ৯১০ টাকা দরে।
সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, প্রতি লিটার
খোলা পাম তেল বিক্রি হওয়ার কথা ১১৭ টাকায়, যা ১২০ থেকে ১২২ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে। তবে বাজারে আগের সপ্তাহে যে সুপার পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকা
লিটার দরে, সেগুলো এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা দরে। একইভাবে ১৪২ টাকা
দরে বিক্রি হওয়া পাম অয়েল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা লিটার।
এদিকে
মোটা চালের দাম কমেছে। স্বর্ণা ও পাইজাম জাতের চালের দাম কমেছে কেজিতে ৩
থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। তবে এখনও অপরিবর্তিত সরু চালের দাম।
শুক্রবার (৩০
ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মানিক নগর, গোপীবাগ, রামপুরা, হাজিপাড়া, মালিবাগ
ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন,
আমনের মোটা চাল বাজারে এসেছে। ফলে এখন চালের সরবরাহ ভালো। এ কারণে মোটা
চালের দাম কমেছে। স্বর্ণা জাতের চাল আগে প্রতিকেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতো।
সেটা এখন ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশি কমেছে পাইজাম জাতের চালের দাম। আগে
৫৮-৬০ টাকার চাল এখন ৫৫-৫৭ টাকায় নেমেছে। অনেকেই সাধারণ মানের বিআর-২৮
চালের কেজি ৬৪-৬৬ টাকা, মিনিকেট ৭০-৭৪ টাকা এবং ভালো মানের নাজিরশাইল ৭৫-৮০
টাকা দরে বিক্রি করছেন।
একই সঙ্গে বাজারে নতুন পেঁয়াজ ওঠায় দাম কমেছে।
নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। তাতে কমে এসেছে আমদানি
ও পুরোনো দেশি পেঁয়াজের দামও। সেগুলো এখন কেজিতে ৫ টাকা কমে ৪০ থেকে ৪৫
টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আদা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা এবং রসুন ৮০-১০০
টাকা।
আগের সপ্তাহের মতো প্রতিকেজি ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার
মুরগি। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এই মুরগির
দাম ছিল ৬০০ টাকা কেজি। এদিকে খাসির মাংসের দাম কমেছে। কত সপ্তাহে এক হাজার
টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া খাসির মাংস শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকা
কেজি।
ফার্মের মুরগির ডিমের দাম কমেছে। কত সপ্তাহে ৩৬ টাকা হালি বিক্রি
হওয়া ডিম ৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা
ডজন। পাইকারি বাজার থেকে কিনলে আরও ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। চিনির দাম
১১৫-১২০ টাকা কেজি। কমেনি মসুর ডালের দাম।
গত সপ্তাহে ১০৫ টাকা কেজি দরে
বিক্রি হওয়া তুরস্ক ও কানাডা থেকে আমদানি করা মসুর ডাল এই সপ্তাহে বিক্রি
হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া চিকন মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা কেজি
দরে। শীতের প্রচুর সবজি বাজারে, সরবরাহ বাড়ায় কমেছে টমেটো, শিম, ফুলকপি,
বাঁধাকপি, নতুন আলু ও গাজরের দাম।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, মাঝারি আকারের
প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো বিক্রি
হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি কেজি শিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ২০
টাকা, লম্বা বেগুনের কেজি ৩০ টাকা, গোল বেগুন বা তাল বেগুনের কেজি ৪০ টাকা,
নতুন আলুর কেজি ২০ টাকা। লাউয়ের পিস ৪০ টাকা, করলার কেজি মানভেদে ৬০ টাকা,
কাঁচকলার হালি ৩০ টাকা, দেশি গাজর কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, চিচিঙ্গা ও
ধুন্দুলের কেজি ৫০ টাকা, শালগমের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
এদিকে দাম
কমেছে মাছের। চাষের কই, তেলাপিয়া, পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
রুই, কাতলা কার্পজাতীয় চাষের মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
তবে খুব একটা হেরফের হয়নি দেশি জাতের মাছের দামে।