মাহি
এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। বরুড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি ডিগ্রি কলেজ
থেকে। মেধাবী ছাত্র মাহী (১৯) জানবে না আর তার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের
কথা। গত ১০ নভেম্বর রাত ২ টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
গিয়েছিলো এক বন্ধুর আত্মীয় সিজারিয়ান অপারেশনের রোগীকে রক্ত দিতে। রক্ত দান
করে রাতে মাহি ও আদি নামে দুই বন্ধু এবং শিফাত ও পিন্টু নামে অপর দুই
বন্ধু দুটো মোটরসাইকেল দিয়ে বরুড়া বাড়ির উদ্দেশ্য চলে আসে। একেবারে বাড়ির
কাছাকাছি লতিফপুর নামক স্হানে এসে আদি মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের
সাথে ধাক্কা মেরে দু'জনই মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যায়। পেছনে
মোটরসাইকেলে থাকা শিফাত ও পিন্টু নামে দু বন্ধু তাদের কে উদ্বার করে বরুড়া
সরকারি হসপিটাল নিয়ে আসে। পরে অপারেশনের জন্য প্রথমে কুমিল্লা ট্রমা
হসপিটাল ও পরে নিউ ভিশন হসপিটাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাতে আইসিওতে মাহির
মৃত্যু হয়।
শিফাত জানান, দুটো মোটরসাইকেল করে আমরা ৪ বন্ধু রোগী কে রক্ত
দিয়ে রাতে বাড়িতে আসছি লাম। লতিফপুর গ্রামের এসে হঠাৎ আদির মোটরসাইকেল টি
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে দুজনে ছিটকে পড়ে যায়। আমি ও
পিন্টু মাহি ও আদি কে উদ্বার করে বরুড়া সরকারী হসপিটাল নিয়ে আসি। মাহির পা
দুটো ভেঙ্গে যায়। আদির মুখে সেলাই লাগে ও চোখে আঘাত পেয়েছে। মাহির পরিবার
মাহি কে অপারেশন করার জন্য প্রথমে ট্রমা হসপিটাল নিয়ে যায়। সেখানে অপারেশন
ফি বেশী মনে হওয়ায় পরে ভিশন হসপিটাল ট্রমা ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে
মাহির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে আইসিওতে।নেওয়া হয়। রাতে মৃত্যুর
কবলে চলে যায় মাহি।
জিসান ( আদি) মুখে ও চোখে আঘাত লেগেছে। মুখে কয়েকটি সেলাই লেগেছে। সে বাসায় চিকিৎসারত অবস্থায় আছে।
মাহির
মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে বরুড়ায় ১৩ নভেম্বর
সকাল ১০ টায় বরুড়া পুরাতন মাদরাসায় প্রথম জানাজা ও দুপর ১২ টায় দ্বিতীয়
জানাজা শেষে পৈত্রিক বাড়ি উপজেলার ভাউকসার স্কুল মাঠে জানাজা শেষে
পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে তাঁকে।