দ্বাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। তফসিল অনুযায়ী ভোট আগামী ৭
জানুয়ারি। নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে ৩০০টি সংসদীয় আসনে অনুসন্ধান কমিটি
গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের সব অপরাধ,
নির্বাচনী আচরণবিধি এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বা
পরিচালনায় বাধাগ্রস্ত বা ব্যাহত করে এমন ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত
বিষয়াদির অনুসন্ধান করে আমলে নিতে এ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে কমিটি।
বৃহস্পতিবার
(১৬ নভেম্বর) ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব (আইন-১) সাবিনা ইয়াসমিনের সই করা এ
সংক্রান্ত নির্দেশনা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর)
ইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কমিশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে
অনুসন্ধান কমিটি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইন ও বিচার বিভাগের
সচিবকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
প্রতিটি আসনের জন্য গঠিত এ কমিটিতে যুগ্ম জেলা জজ এবং প্রয়োজনে সিনিয়র
সহকারী জজ দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে,
গণপ্রতিনিধিত্ব আইনে ১১ (১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ
নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল
অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী
জাতীয় সংসদের সাধারণ আসনের নির্বাচনে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ প্রতিরোধ ও
নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নির্বাচনী
অনুসন্ধান কমিটি (ঊষবপঃড়ৎধষ ঊহয়ঁরৎু ঈড়সসরঃঃবব) গঠন করার বিধান রয়েছে।
এই
অনুসন্ধান কমিটিসমূহ ‘নির্বাচন-পূর্ব সময়’ অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের
তারিখ পর্যন্ত সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার বিধি
১৭-এর বিধান অনুযায়ী নির্বাচনী অপরাধ, নির্বাচনী আচরণবিধি এবং অবাধ ও
নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বা পরিচালনায় বাধাগ্রস্ত বা ব্যাহত
করে এমন ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ সংক্রান্ত বিষয়াদির অনুসন্ধান করে
নির্বাচন কমিশনকে অনুসন্ধানের পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে অবহিত করবে।
নির্বাচনের
তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের সময়
পর্যন্ত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নির্বাচনী
দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে নির্বাচন কমিশন থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ
অবস্থায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ৩০০টি সংসদীয় আসনে ০১ (এক) জন যুগ্ম জেলা
জজ বা প্রয়োজনে সিনিয়র সহকারী জজ বিশিষ্ট ৩০০টি নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি
(ঊষবপঃড়ৎধষ ঊহয়ঁরৎু ঈড়সসরঃঃবব) গঠন করা প্রয়োজন।
গত বুধবার (১৫
নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবন থেকে জাতির উদ্দেশে
দেওয়া ভাষণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান
নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী,
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের ৭ তারিখ রোজ রোববার ৩০০ আসনে দ্বাদশ জাতীয়
সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার এবং ৫৯২ জন
সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এছাড়া
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ আগামী ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই আগামী ১
থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও
নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭
ডিসেম্বর। রিটার্নিং অফিসাররা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী
প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।