প্রকাশ: শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩, ৭:৩০ পিএম |
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া চার শতাধিক পর্যটক দুইদিন পর কক্সবাজারের টেকনাফে ফিরেছেন।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সেন্টমার্টিন থেকে দুটি জাহাজে টেকনাফের দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছান পর্যটকরা।
সকালে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে কেয়ারি সিন্দবাদ ও বারো আউলিয়া নামের দুটি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং সন্ধ্যায় পর্যটক নিয়ে ফিরে আসে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী।
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ায় সমুদ্র বন্দর থেকে সর্তক সংকেত প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে কেয়ারি সিন্দবাদ ও বারো আউলিয়া নামের দুটি পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিন উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
ইউএনও আরও বলেন, জাহাজ দুটি দুপুরে দ্বীপে পৌঁছায়। পরবর্তীতে বিকেল ৪টার দিকে আটকা পড়া পর্যটকদের নিয়ে রওয়ানা দেয়। সন্ধ্যায় দমদমিয়া জেটিঘাট ফিরে আসে।
ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সেন্টমার্টিন-টেকনাফে নৌপথে বৃহস্পতিবার থেকে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও এ রুটে চলাচল শুরু করেছে জাহাজ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের ট্রাফিক সুপারভাইজার মো. জহির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আবহাওয়ার সতর্ক সংকেতের বার্তায় বৃহস্পতিবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। বুধবার দমদমিয়া জেটিঘাট দিয়ে সকালে কেয়ারি সিন্দাবাদে ১৩২ জন, আটল্যান্টিকে ৮৯ ও এমভি বার আউলিয়া করে ২৯৮ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যান। পরে জাহাজে করে বিকেল ৩টায় তিন শতাধিক পর্যটক ফেরত এলেও অন্যরা দ্বীপে রয়ে যান। আগের দিন মঙ্গলবার বেড়াতে গিয়ে রাত যাপনের জন্য ছিলেন দুশতাধিক পর্যটক। ফলে দ্বীপে চার শতাধিক পর্যটক ঘূর্ণিঝড় মিধিলি চলাকালে দ্বীপে আটকা পড়ে।
জহির উদ্দিন আরও বলেন, শনিবার থেকে সমুদ্র বন্দর থেকে সর্তক সংকেত প্রত্যাহার হলে সকাল ১০টার দিকে দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে ৬২ জন পর্যটক নিয়ে কেয়ারি সিন্দবাদ ও কোনো পর্যটক ছাড়া বারো আউলিয়া জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ জাহাজ দুটি দ্বীপে আটকা পড়া চার শতাধিক পর্যটক নিয়ে সন্ধ্যায় দমদমিয়া জেটিঘাট ফিরে আসে।
দুদিন অতিরিক্ত থেকে স্থলে ফেরা পর্যটক দম্পতি ফেনী সদরের ইমতিয়াজ সুমেল ও রিয়া ইমতিয়াজ বলেন, আমাদের বৃহস্পতিবার টেকনাফ ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় জাহাজ বন্ধ হওয়ার কথা জেনে প্রথমে শঙ্কিত হয়ে পড়ি। কিন্তু সকাল-বিকাল ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষে যোগাযোগ রেখে অভয় দেওয়ার পর দুর্যোগের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। তবে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কথা বলে স্বজনরা বার বার যোগাযোগ করেছে এবং চিন্তা করেছেন। তাদের আমরা ভালো থাকার কথা বলে অভয় দিয়েছি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, হঠাৎ আবহাওয়া বৈরী হলে সতর্ক সংকেত জারির পর বৃহস্পতিবার থেকে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকে। দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকদের খোঁজ নেওয়া হয় নিয়মিত। দুপুরে টেকনাফ থেকে দুটি জাহাজ আসে। বিকেলে সব যাত্রী নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশ্যে জাহাজ দুটি ছেড়ে যায়।