সহজ-সরল মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে
যাওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের খবর মাঝেমধ্যেই আসে গণমাধ্যমে। শোনা যায়, চাকরি
দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ। বর্তমানে দেশের শিক্ষিত তরুণদের একটি বড়
অংশ বেকার। এই তরুণদের চাওয়া একটি মানসম্মত চাকরি।
কর্মসংস্থানের সুযোগ
সবাই খোঁজে। সেই সুযোগটি নিয়েই প্রতারকচক্র বিভিন্ন সময়ে মানুষের টাকা
হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। এ ধরনের প্রতারকচক্র থেকে সব সময় সাবধান থাকার
কথা বলা হয়। কিন্তু তার পরও দেখা যায়, প্রতারকচক্র অনেককে ক্ষতিগ্রস্ত
করেছে।
এমনই এক প্রতারকচক্রের চার সদস্যকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করেছে
র্যাব। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার
অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে। তাঁদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া নগদ এক লাখ ৩৮ হাজার
৫০০ টাকা, প্রতারণায় ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মনিটর, বিপুল পরিমাণ চাকরির
আবেদনপত্রসহ মালপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, রাজধানীর ভাটারায়
বিদেশি বিমান সংস্থার নামে জাঁকজমকপূর্ণ অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে
প্রতারণার ফাঁদ পাতেন চক্রের সদস্যরা।
পত্রিকায় বিদেশি বিমান সংস্থার
এয়ার হোস্টেজসহ বিভিন্ন পদে লোভনীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দেন। বিজ্ঞাপন
দেখে অন্তত ২০০ জন চাকরিপ্রার্থী এতে আবেদন করেন। এর মধ্যে বাছাই করে ১৭০
জনকে চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। ইন্টারভিউয়ে বসার ক্ষেত্রে অগ্রিম
দিতে হয় এক থেকে দুই লাখ টাকা। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে আরো পাঁচ
হাজার টাকা আদায় করা হয়।
প্রতারকচক্রটি মাত্র এক মাসে শুধু ইন্টারভিউয়ের
নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, চক্রের টার্গেট ছিল আগামী
ছয় মাস চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ইন্টারভিউ ও প্রশিক্ষণের নামে অন্তত ৩০ কোটি
টাকা হাতিয়ে নেওয়া।
প্রতারকচক্রের প্রধান নিজেকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা
হিসেবে পরিচয় দিতেন। কখনো পরিচয় ছিল বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা, কখনো দুদক
কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতে সন্তান
সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-এমন পরিচয় দিতেও দ্বিধা করেননি তিনি।
র্যাবের কাছেও তিনি বলেছেন যে ১৮-১৯ বছর ধরে দুদকের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ
করেছেন।
চাকরিপ্রত্যাশীদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি
প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে একাধিক
চক্র সক্রিয়। সমাজে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। এসব
চক্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।