শেষের
বাঁশি বাজতেই মাঠে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন ডেভিড ইফেগুই। প্রার্থনা ভঙ্গিতে
ধরা পড়লেন ক্যামেরায়। যে ছবিতে মিশে থাকল চলতি প্রিমিয়ার লিগে চট্টগ্রাম
আবাহনীর প্রথম জয় পাওয়ার স্বস্তির পরশ।
গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি
স্টেডিয়ামে শনিবার শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবকে ২-০ গোলে হারায় চট্টগ্রাম
আবাহনী। দ্বিতীয়ার্ধে মান্নাফ রাব্বি দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর শেষ দিকে
ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইফেগুই।
চলতি লিগে নিজেদের প্রথম ৫ ম্যাচে ২টিতে
হেরেছিল চট্টগ্রাম আবাহনী, ড্র করেছিল ৩টি। এবার জয়ের স্বাদ দিয়ে ৬ পয়েন্ট
নিয়ে টেবিলে অষ্টম স্থানে আছে তারা।
২০১৪-১৫ মৌসুমে লিগ জয়ী শেখ জামাল
পেল চতুর্থ হারের তেতো স্বাদ। ৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে চট্টগ্রাম
আবাহনীর পেছনে তারা। ১০ দলের মধ্যে তারা রয়েছে নবম স্থানে।
এবারের লিগে
পারফরম্যান্সের বিবর্ণতায় ধুঁকছে দুই দলই। এই ম্যাচের শুরুটাও ছিল
সাদামাটা। তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে প্রাণ ফিরতে
থাকে ম্যাচে।
প্রথম ভালো আক্রমণটি শাণায় শেখ জামাল। ২৭তম মিনিটে
সতীর্থের লং পাস বক্সে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কাট ব্যাক করেন ইগর লেইতে।
ভ্লাদিমির দিয়াজ বলের নাগাল পাওয়ার আগে দ্রুত ক্লিয়ার করেন ইয়াসিন খান। দুই
মিনিট পর ডান দিক দিয়ে একক প্রচেষ্টায় আক্রমণে ওঠেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।
কিন্তু পরে ভারসাম্য হারিয়ে শটই নিতে পারেননি এই ফরোয়ার্ড।
একটু পর রাব্বির শট যায় দূরের পোস্ট দিয়ে বাইরে। বিরতির আগে এটাই ছিল চট্টগ্রাম আবাহনীর প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণ।
৪২তম
মিনিটে সতীর্থের পাস বুক দিয়ে নামিয়ে নিয়ে নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নিয়েছিলেন
ফাহিম, কিন্তু আগেই ফাউলের হওয়ায় গোল পায়নি শেখ জামাল। হতাশা প্রকাশ করতে
দেখা যায় এই ফরোয়ার্ডকে।
দ্বিতীয়ার্ধে চট্টগ্রাম আবাহনী আধিপত্য বাড়াতে
থাকে। ৫২তম মিনিটে গোল মুখে বল পেয়ে পোস্টের বাইরে শট নিয়ে হতাশ করেন রিয়াজ
উদ্দিন সাগর।
পরের মিনিটেই হতাশা দূর করে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী।
একে একে তিনজনকে কাটিয়ে একক প্রচেষ্টায় বক্সে ঢুকে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ
করেন রাব্বি। নিজের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল বলেই হয়তো উদযাপনে বাঁধনহারা
দেখা যায়নি তাকে।
৬৭তম মিনিটে সমতার দারুণ সুযোগ নষ্ট হয় শেখ জামালের।
ফাহিমের আড়াআড়ি ক্রসে দূরের পোস্টে থাকা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ পারেননি
ঠিকঠাক ভলি নিতে। বল চলে যায় বক্সেই সাজ্জাদ হোসেনের কাছে। তিনি বাড়িয়ে দেন
লেইতেকে। কিন্তু তার শট আটকে দিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর ত্রাতা গোলরক্ষক।
৭১তম
মিনিটে আব্দুল্লাহর আড়াআড়ি ক্রসে সাজ্জাদ টোকা দেওয়ার আগেই স্লাইডে
ক্লিয়ার করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার রায়হান। দশ মিনিট পর লেইতের ফ্রি
কিক ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ
করা সময়ে ইফেগুইয়ের বাঁকানো ফ্রি কিক লাফিয়ে ওঠা গোলরক্ষক মাহফুজ হাসান
প্রীতমকে ফাঁকি দিয়ে জালে লুটোপুটি খেলে নিশ্চিত হয়ে যায় চট্টগ্রাম আবাহনীর
জয়।
দিনের অন্য ম্যাচে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ফর্টিস এফসির বিপক্ষে দুই দফা এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
ছয়
ম্যাচে জয়হীন থাকা ব্রাদার্সের এটি তৃতীয় ড্র। ৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের
তলানিতেই আছে গোপীবাগের দলটি। টানা তৃতীয় ড্র করা ফর্টিস ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে
ষষ্ঠ স্থানে।