রেফারির
শেষ বাঁশি বাজতেই ডাগআউট থেকে মাঠে ছুটে গেলেন জর্ডানের ফুটবলাররা। শুয়ে
পড়া এক সতীর্থের ওপর একে একে লাফিয়ে পড়লেন তারা। সেই যে শুরু হলো, তাদের
আনন্দ-উল্লাস যেন থামেই না! এমন দিন যে দেশটির ফুটবল ইতিহাসে আগে কখনও
আসেনি। এশিয়ান কাপের দুইবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে
প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে উঠল জর্ডান।
কাতারের আল রাইয়ানে মঙ্গলবার প্রথম সেমি-ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছে জর্ডান।
এবারের আগে জর্ডান কখনও এশিয়ান কাপের সেমি-ফাইনালেই খেলতে পারেনি। সেই দলই এখন শিরোপা থেকে স্রেফ এক জয় দূরে।
এই
ম্যাচে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে তাদের
অবস্থান ২৩ নম্বরে। টানা ১৩ ম্যাচে অপরাজিত থেকে এ দিন মাঠে নামে তারা।
অন্যদিকে,
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে জর্ডানের অবস্থান ৮৭ নম্বরে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে
আগের ছয়বারের দেখায় কখনও তারা জিততে পারেনি। সেই তারাই এবার দুর্দান্ত
পারফরম্যান্সে ঘুচিয়ে দিল সব ব্যবধান।
স্মরণীয় এই জয়ের নায়ক মুসা আল-তামারি। সতীর্থকে দিয়ে দলের প্রথম গোলটি করান তিনি, পরে নিজে করেন দুর্দান্ত এক গোল।
ম্যাচজুড়েই
আক্রমণে আধিপত্য করে জর্ডান। স্রেফ ৩০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য
মোট ১৭টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার ৮ শটের একটিও
লক্ষ্যে ছিল না! তাদের সবচেয়ে বড় তারকা সন হিউং-মিন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে।
আহমাদ
বিন আলি স্টেডিয়ামে গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ৫৩তম মিনিটে এগিয়ে যায়
জর্ডান। মুসার দারুণ পাস বক্সে পেয়ে চিপ শটে আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে বল
জালে পাঠান ইয়াজান আল নাইমাত।
৬৪তম মিনিটে মুসার বাঁ পায়ের একটি শট
দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক। দুই মিনিট পরই নজরকাড়া এক
গোলে ব্যবধান বাড়ান মুসা।
নিজেদের অর্ধ থেকে তিনি বল নিয়ে ডান দিক দিয়ে
এগিয়ে যান। তার সামনে ছিল প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডার। তাদের একজনকে কাটিয়ে
আড়াআড়ি আরেকটু এগিয়ে যান, তখন সামনে প্রতিপক্ষের আরও দুজন, জায়গা বানিয়ে
বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন ২৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়
সেমি-ফাইনালে বুধবার এশিয়ান কাপের তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ইরানের মুখোমুখি
হবে স্বাগতিক ও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কাতার। জয়ী দলের বিপক্ষে আগামী শনিবার
শিরোপা লড়াইয়ে নামবে জর্ডান।