অনূর্ধ্ব-১৯
বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এর আগে কখনোই এত কম রানের সংগ্রহ নিয়ে জেতেনি কোনো
দল। বেনোনিতে এবারের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সেই ১৭৯ রানের সম্বল
নিয়েই পাকিস্তান চলে গিয়েছিল জয়ের খুব কাছে। সেই পাকিস্তান, যারা সুপার
সিক্সে ১৫৫ রান করেও বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ৫ রানে। আজ নবম উইকেট পড়ার পর ২৪
বলে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১৬ রান, ম্যাচের প্রেক্ষাপটে যেটি ছিল কঠিন
সমীকরণই।
তবে রাফায়েল ম্যাকমিলান ও ক্যালাম ভিডলারের শেষ উইকেট জুটি
অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছে রোমাঞ্চকর জয়। শেষ ওভার করতে এসেছিলেন মোহাম্মদ
জিশান, তাঁর প্রথম বলে রাফায়েল ম্যাকমিলানের চারে জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি নিয়েছে বলে শেষ ওভারে বৃত্তের মধ্যে বাড়তি একজন
ফিল্ডারকে রাখতে হয়েছিল পাকিস্তানকে, ম্যাকমিলানের ইনসাইড এজ আর নাগাল
পাননি থার্ডম্যানে থাকে ফিল্ডার। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার
প্রতিপক্ষ ভারত।
টম স্ট্রাকারের রেকর্ড গড়া ৬ উইকেটে ১৭৯ রানেই আটকে
গিয়েছিল পাকিস্তান। তবে উইকেটে পেসারদের জন্য সহায়তা আছে, পাকিস্তানকে
লড়াইয়ে উজ্জীবিত করার কথা ছিল সেটিই। তা-ই হয়েছে। প্রথম ১০ ওভারে ৩৩ রান
তুললেও অবশ্য কোনো উইকেট হারায়নি অস্ট্রেলিয়া। প্রথম পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের
বলেই প্রথম ব্রেকথ্রু পায় পাকিস্তান। আলী রেজার বলে বোল্ড হন স্যাম
কনস্টাস। ২৪ রান তুলতে অস্ট্রেলিয়া হারায় আরও ৩ উইকেট।
অবশ্য অলিভার
পিকের সঙ্গে হ্যারি ডিক্সন ও টম ক্যাম্পবেলের ৪০-পেরোনো দুটি জুটিতে
অনেকটাই এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দুটি জুটিই ভাঙেন আরাফাত মিনহাস।
অস্ট্রেলিয়ার পরের বড় ক্ষতিটি করেন রেজা। ৪৯ রান করা পিকের পর স্ট্রাকার ও
মালি বিয়ার্ডম্যানকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে জয়ের কাছে নিয়ে যান এ পেসার।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে আর আটকাতে পারেননি তাঁরা।
এর আগে
পাকিস্তানকে যা লড়াই করার সম্বল, তা এনে দিয়েছেন তিনে নামা আজান আওয়াইস ও
সাতে নামা আরাফাত। দুজন মিলে করেছেন ১০৪ রান, পাকিস্তানের বাকি ৯
ব্যাটসম্যান মিলে করেছেন ৫৫ রান। আওয়াইস ও আরাফাত দুজনই করেছেন ৫২ রান করে।
২৮তম
ওভারে ৭৯ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান। আজান ও আরাফাত এরপর
ষষ্ঠ উইকেটে জুটিতে যোগ করেন ৫৪ রান। ৯১ বলে ৫২ রান করে আজান ফিরলেও আরাফাত
ছিলেন আরও কিছুক্ষণ। মিনহাস ৫২ করেছেন ৬১ বলে। ৭ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে
যায় পাকিস্তান।
টপ অর্ডারের পর পাকিস্তানের টেল-এন্ডও এলোমেলো করে দেন
স্ট্রাকার। তাঁর ২৪ রানে ৬ উইকেটই এখন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের
সেরা বোলিং ফিগার। পরে তিনিই হয়েছেন ম্যাচসেরা।