২৫
মার্চ কাল রাতে গণহত্যার শিকার সকল শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে
আত্মত্যাগকারী বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যে দিয়ে কুমিল্লায়
পালিত হয়েছে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ ও
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুখী সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের
প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে পুরো দিবসের নানান অনুষ্ঠানে।
২৬ মার্চ ভোরে
কুমিল্লা টাউন হল মাঠে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহান স্বাধীনতা
দিবসের কর্মসূচি। পরে টাউন হল মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, নগর উদ্যানে
বঙ্গবন্ধুর মুরাল, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে শহীদ জেলা প্রশাসক এ কে এম
শামসুল হক খান স্মৃতি ভাস্কর্য ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে, পুলিশ
সুপার কার্যালয়ে শহীদ পুলিশ সুপার মুন্সী কবীর উদ্দিন আহমদ স্মৃতি ভাস্কর্য
ও পুলিশ লাইন শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে অর্পণ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায়
স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, বঙ্গবন্ধু মুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ কর্মসূচি পালন
করা হয়।
টাউন হল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে অংশ নেন
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার
আব্দুল মান্নান, সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম
বাহাউদ্দিন বাহারের প্রতিনিধি ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত
সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম
টুটুল। এসময় প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সুশীল
সমাজের প্রতিনিধি সহ সাধারন মানুষ অংশ গ্রহন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পৃথক
কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এছাড়া অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও যথাযোগ্য
মর্যাদায় পালন করা হয় মহান স্বাধীনতা দিবস।
শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে ভাষা
সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জাতীয়
পতাকা উত্তোলন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার
সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বিএনসিসির কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহন করেন
জেলা ও দায়রা জজ, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ সুপার।
এ
সময় জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, শান্তি ও
সম্প্রীতির এই কুমিল্লার মাটি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের অসংখ্য স্মৃতি বহন
করে চলছে। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ জাতির পিতার আহবানে স্বাধীনতার যুদ্ধ শপথ
নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাদের বীরত্ব গাঁথার স্মৃতি বহন করে আছে
রসুলপুর, আমড়াতলী, রাম মালা, বেতিয়ারা বধ্যভূমি সহ অসংখ্য স্থান। গণহত্যায়
প্রিয় জন হারানো কষ্টের স্মৃতি আজও নীরবে বহন করে চলছে জেলার অসংখ্য
প্রবীণ। গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি সকল বীরদের কথা।
তিনি আরো বলেন,
পুরো দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে কুমিল্লাতেও বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে
অবকাঠামোগত উন্নয়ন স্বাস্থ্যশিক্ষা ও যোগাযোগ খাতে নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প
বাস্তবায?িত হচ্ছে। মুজিব বর্ষে উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার
হিসেবে গৃহীনদের জন্য ৫৬৩৭ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ১৭ টি উপজেলায় বীর
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত ১২৫৪ টি বীর নিবাস তৈরীর কাজ চলছে।
পরে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লেতে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।
স্বাধীনতা
দিবসের দিন বিকেলে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে শহীদ দিসি একেএম শামসুল হক খান
মঞ্চে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
মহান স্বাধীনতা দিবস
উপলক্ষে জাতির শান্তি সমৃদ্ধি ও দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কামনা করে সকল
ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। হাসপাতাল,
জেলখানা, শিশু পরিবার, পথ শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ
কেন্দ্র বৃদ্ধাশ্রম ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান এবং দিবা যতœ কেন্দ্র সমূহে উন্নত
খাবার পরিবেশন করা হয়।