এলইডি
বাল্বের স্টার লেবেলিং করছে সরকার। টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন
কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) স্টার লেবেলিং এর একটি খসড়া নীতিমালা করে ওয়েব সাইটে
প্রকাশ করেছে। স্রেডা বলছে, দক্ষ জ্বালানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ
সাশ্রয় এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এর প্রধান উদ্দেশ্য।
স্টার লেবেলিং হচ্ছে
এমন একটি পদ্ধতি যা দেখে ভোক্তা সহজেই পণ্যটির মান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে
পারবেন। এক্ষেত্রে যে পণ্যের মান ভালো সেই পণ্যের বাইরে তেমন লেবেল সংযুক্ত
থাকে। সাধারণত এক তারকা থেকে তিন তারকা পর্যন্ত মান খচিত পণ্য বাজারে
পাওয়া যায়।
নতুন এই পদ্ধতিতে বাজারের প্রচলিত এলইডি বাল্ব এর
প্রতিষ্ঠানগুলো স্রেডাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের মান পরীক্ষার জন্য জমা দেবে।
স্রেডা পণ্যের মান পরীক্ষা করে স্টার লেবেল নির্দিষ্ট করবে। এই প্রক্রিয়ায়
লাইসেন্স ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা জামা দিতে হবে। একই সঙ্গে বাজারে বিক্রি করা
প্রতিটি বাল্বের বিপরীতে লেবেল নিতে স্রেডাকে ৫০ পয়সা করে দিতে হবে।
নীতিমালার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাজারে বাল্বের মান সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলা। যাতে মানুষ ভালো মানের বাল্প কিনতে পারে।
বাজারে
শূন্য দশমিক ৫ ওয়াট থেকে এলইডি বাল্ব পাওয়া যায়। সাধারণত বাসাবাড়িতে ৪০
থেকে ৬০ ওয়াট পর্যন্ত এলইডি বাল্ব ব্যবহার হয়। তবে এর বাইরে রাস্তা এবং
খোলা জায়গায় আরও বেশি আলো দিতে পারে এমন এলএডি বাল্ব ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের
বাজারে দেশীয় নানা ব্রান্ডের সঙ্গে দেশের বাইরের এলইডি লাইটও পাওয়া যায়।
এর বাইরে সাম্প্রতিক সময়ে মানহীন বাল্বও বিক্রি হচ্ছে যা কিনে ক্রেতারা
ঠকছেন। এসব বাল্ব যদি আগেভাগে পরীক্ষা করে কোনও কর্তৃপক্ষ মান যাচাই বাছাই
করে কোনও সার্টিফিকেট দেয় তাহলে ভোক্তার জন্যও ভালো মানের বাল্ব চেনা সহজ
হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারের মধ্যে প্রায়
সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আলো জ্বালাতে প্রয়োজন হয়।
বাল্বের মানে উন্নয়ন ঘটিয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানো যায়। অনেকেই নিজের
বাসার বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে সাধারণ ইনক্যান্ডিসেন্ট বাল্বের বদলে এলইডি
বাল্ব ব্যবহার করছেন।
সাধারণত তিন ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি এখন ব্যবহার হয়।
এরমধ্যে সর্বশেষ সংযোজন হচ্ছে এলইডি বাতি। এছাড়াও ফ্লুরোসেন্ট এবং
ইনক্যান্ডিসেন্ট বাতি রয়েছে। এরমধ্যে এলইডি বাতি সব চাইতে সাশ্রয়ী।
একটি
এক ওয়াটের এলইডি বাল্ব থেকে যে আলো পাওয়া যায় ফ্লুরোসেন্ট বাল্বে তা পেতে
লাগে ৩ ওয়াট। আর ইনক্যান্ডিসেন্ট বাতিতে প্রয়োজন হয় ১৫ ওয়াট। বিদ্যুৎ
ব্যবহার আবার গাণিতিক হারে বাড়তে পারে। একটি ১৮ ওয়াটের এলইডি বাতি থেকে যে
আলো পাওয়া যায় ফ্লুরোসেন্ট বাল্বে তা পেতে লাগে ৩৬ ওয়াট বিদ্যুৎ আর
ইনক্যান্ডিসেন্ট বাতিতে প্রয়োজন হয় ১৮০ ওয়াট।
সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে
এখন অনেকেই এলইডি বাতি ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। তবে দামের দিক থেকে আবার
ইনক্যান্ডিসেন্ট বাল্ব সাশ্রয়ী। সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা মাথায় রেখে
এলইডি বাল্পের ওপর থেকে কর প্রত্যাহার করলেও বাজারে এর প্রভাব খুব একটা
পড়েনি।
স্রেডার এক কর্মকর্তা বলেন, বাল্বের মান নির্ধারণ করে দিলে
সাধারণ মানুষ সহজেই ভালো মানের বাল্ব চিনে কিনতে পারবে। এতে তিনি যেমন
বাল্ব কিনে প্রতারিত হবেন না। তেমনি তার বিদ্যুৎ বিলও কম আসবে।
পাওয়ার
সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন বলেন, গ্রাহকদের কাছে মানসম্মত বিদ্যুৎ
পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। পাশাপাশি ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যদি
মানসম্মত না হয় তাহলে বিদ্যুতের অপচয় হয়। সেটি থেকে এই উদ্যোগ কার্যকর
ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।