বৃহস্পতিবার ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
১২ পৌষ ১৪৩১
রজনীধোপার গাধা
শান্তিরঞ্জন ভৌমিক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ১২:৩৫ এএম |


 রজনীধোপার গাধা
ধোপাবাড়ির গল্প দিয়েই লেখাটা শুরু করছি। রজনী ধোপা, নদীপাড়ে বাস। মানুষের কাপড়ের ময়লা পরিস্কার করে, ভাজ করে বাবুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দেয়। বছরান্তে নির্ধারিত ধান পায়, নগদ টাকা কমই। দিন এভাবেই কাটে। রজনী ধোপার একটি গাধা আছে, সঙ্গে থাকে একটি কুকুর। গাধাটি খেতে পেলেও সেভাবে কুকুরটিকে খাওয়া দেয়া হয় না। সকালবেলা ভাটি দেয়া (সিদ্ধ) কাপড়ের বোঝাটি গাধার পিঠে তুলে দেয়া হয়, গাধা তা বহন করে নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। রজনীধোপা নদীর জলে কাপড়গুলো ধুয়ে শুকুতে দেয়। গাধাটি তখন নদীর পাড় ও তৎসংলগ্ন জমির আইল থেকে ঘাস খায়। সঙ্গে কুকুরটিও যায়। তার খাওয়া হলো নদীর পাড়ে শুকনো মানুষের মল বা অন্যকিছু। এভাবেই চলছে। একবার নদীর পাড়ে একটি নতুন গাধা। সে কোথা থেকে এলো ? কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে ওঠে। রজনী ধোপার গাধাটি কাছে যায়, নাদুস নুদুস গাধাটি দেখে মনে হলো ভদ্র পরিবেশে লালিত-পালিত। আদাব-নমস্কারের পর জানতে পারল যে বাবুবাজারে সার্কাস দলের সঙ্গে এসেছে। রজনী ধোপার গাধার প্রশ্ন- সেখানে আপনার কী কাজ। খুব অহংকারী ভাব নিয়ে জানাল- সার্কাস পার্টির সঙ্গে আছে। যখন সার্কাস চলে, দুটি সুন্দরী মেয়ে উপরে দড়ি ধরে শারীরিক কসরৎ করে। তখন একজন জোকার তাকে (গাধাটিকে) নিয়ে স্টেজে যায় এবং বলে- ঐ সেমরিরা, ভালো করে খেলা দেখাও, যদি মাটিতে পড়ে যাও, তখন এই গাধার সাথে বিয়ে দিয়ে দিব। দৈবের তো হাত পা নেই যদি একবার একজন খেলা দেখাতে গিয়ে পড়ে যায় তখন তো আমার ভাগ্যে সুন্দরী মেয়েটিকে বৌ হিসেবে পেয়ে যাব। এ আশায়- সার্কাস পার্টির সাথে আছি, আর কি। রজনী ধোপার গাধাটি বলছে- ‘তবে বোঝা বহনের কাম করেন না?’ গাধা হয়ে যদি বোঝাই বহন করা না যায়, তবে গাধার জীবনের সার্থকতা কি ? সার্কাসের গাধা একটু মুচকি হেসে বলছে- শহরে ভদ্রলোকদের সঙ্গে না থাকলে বুঝা যায় না। সকলেরই একটি জীবনের লক্ষ্য থাকে, সুন্দরী মেয়েটি বিয়ে করাই আমার জীবনের এখন Aim in Life। কুকুরটি তাদের আলাপচারিতা শুনতে আগ্রহী ছিল না। ক্ষুদা বলে কথা। এজন্য রজনীধোপার উপর সে ভীষণ বিরক্ত। কারণ, গাধাটিকে যে দৃষ্টিতে দেখে, তাকে নয়। তারপরও রজনীধোপা তার মনিব।
একদিন রাত্রে রজনীধোপার বাড়িতে চোর ঢুকেছে, কুকুর ও গাধা দেখেছে। তারা গোয়ালঘরের বারান্দায় থাকে। কুকুরটি নির্বিকার, শুয়ে আছে। গাধা বলছে- চোর এসেছে, চীৎকার করে মনিবকে জাগাও। কুকুরটি চুপ। চোর রজনীধোপার ঘরের বেড়া কাটছে। অনন্যোপায় হয়ে গাধা চীৎকার করতে থাকে, ধোপার ঘুম ভেঙ্গে যায়, বের হতেই চোর পালায়, বাতি জ্বালিয়ে বাড়ি তন্ন তন্ন করে দেখে, কোথাও কেউ নেই। মিছেমিছি গাধাটা চীৎকার করে পরিশ্রান্ত অবস্থায় ঘুমাচ্ছিল, ঘুম ভেঙ্গে দিল। তাই রজনী ধোপা রাগে লাঠি দিয়ে গাধাকে পেটাল, গালিগালাজ করল এবং ঘরের ভিতরে চলে গেলো। কুকুরটি কিন্তু সেভাবেই শুয়ে আছে, চোর এসেছে, তাকে তাড়ানোর দায়িত্ব তো তার (কুকুরের)। যেহেতু তাকে তেমনভাবে খেতে দেয় না, অভিমানে চুপ থেকেছে। মনিব ঘরে যাওয়ার পর কুকুর গাধাটিকে বলছে- কি বুঝলে। গাধা তো মার খেয়ে রেগে আছে। কথাটি বা গল্পটি এখানেই শেষ করতে পারতাম, কিন্তু কিছু কথা যে মনে থেকে গেছে।
২০০১ সালে বিএনপি সরকার। কুমিল্লায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে নজরুল-জয়ন্তী হচ্ছে। আমরা বক্তা হিসেবে উপস্থিত। প্রথম আমার নাম ছিল না। কিন্তু প্রশাসন দেখল, নজরুল- অনুষ্ঠানে আমাকে না আমন্ত্রণ জানালে প্রশ্ন উঠতে পারে। পরে শুনেছি। সঙ্গে ডিসি-এসপি ও বিএনপির স্থানীয় নেতারা আছেন তাঁরা নজরুল বিশেষজ্ঞ হিসেবে বক্তব্য রাখবেন, রাখছেন। সভায় জেলা কমিটি সম্পাদক, তিনি বিশেষ অতিথি। বক্তৃতা দিতে উঠেই বললেন- ‘নজরুল আমাদের জাতীয় কবি। তিনি যদি এই কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ না করতেন, তাহলে আমরা এতটা গৌরববোধ করতাম না এবং.... শ্রোতারা বিস্মিত, মঞ্চে আমরা হতাশ, জাতীয় অনুষ্ঠান ঝুলে পড়ার অবস্থা।’ একেবারে গাধার চোর তাড়ানোর অবস্থা।
এই সংস্কৃতি থেকে কী আমাদের উত্তরণ ঘটেছে ? যার কাজ যেটি, তা যদি অন্যে দাম্ভিকতায় করতে চায়, তখন অবস্থাটা কি দাঁড়ায় ?
ক্ষমতায় থাকলেই যে সব জায়গায় তাঁকে মানায় না, তা বুঝায় কে ? পত্রপত্রিকায় দেখি- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, উপজেলার চেয়ারম্যানের নাম নেই। তাকে প্রধান বা বিশেষ অতিথি করা হয়নি। সুতরাং অনুষ্ঠান বন্ধ। সর্বক্ষেত্রে দখলদারিত্ব, তা যে যোগ্যতার প্রয়োজন পড়ে, একথা ভাবতেই চায় না। মনে পড়ে বঙ্গবন্ধুর কথা।
১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির পরিচালক পদটি উন্নত করে মহাপরিচালক করা হয়। এবং প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে ড. মাযহারুল ইসলামকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ছিলেন। মহাপরিচালক হয়ে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। দেশ বিদেশের কবি-সাহিত্যিকদের আমন্ত্রণ জানানোর আয়োজন হয়। সাত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। সিদ্ধান্ত হয় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তিনি জাতির পিতা। এ প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর অনুমতি, উদ্বোধক হিসেবে সম্মতি আদায় এবং সামগ্রিক অনুষ্ঠানের কর্মসূচি অবহিতকরণ ইত্যাদি জন্য মহাপরিচালকের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বঙ্গবন্ধু সবকিছু শুনে খুবই আনন্দিত হলেন। কিন্তু একটি বিষয়ে তিনি তীব্র আপত্তি জানালেন। বললেন, তিনি অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন না। তিনি কবি বা সাহিত্যিক নন। এমন একজন ব্যক্তি নির্বাচিত হোক, যাঁকে দিয়ে অনুষ্ঠানটিকে উদ্বোধন করা যায়। সাক্ষাৎপ্রার্থীরা তো তা মানতে রাজী নন। কারণ দেশের প্রধানমন্ত্রী, তিনি জাতির পিতা, প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন হচ্ছে, এখানে অন্যকে মানায় না। ইত্যাদি। বঙ্গবন্ধু তাঁর সিদ্ধান্ত অনড়। যেখানে যাঁদের মানায়, সেখানে যাঁদের অবস্থান ও স্বীকৃতি, যেখানে যাঁদের সম্মান প্রাপ্তির স্থান ও অধিকার- সেখানে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দেশের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা ইত্যাদি হলেও তা মানায় না। তিনি বলেন- আমন্ত্রিত হলে দর্শক সারিতে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন, উপস্থিত থাকবেন। এ নিয়ে অনুরোধ-উপরোধ ভেস্তে যাবার অবস্থা। অবশেষে বঙ্গবন্ধু সাক্ষাৎপ্রার্থীদের মনের অবস্থা উপলব্ধি করতে পেরে বললেন- ‘আমি একটি শর্তে উদ্বোধন করতে রাজী আছি, যদি আমার পাশে দু’জন গুণি-খ্যাতিমান কবি-শিল্পী আসন গ্রহণ করেন।’ দেখা গেলো অনুষ্ঠান উদ্বোধনের দিন মঞ্চে বঙ্গবন্ধুর এক পাশে কবি জসিমউদ্দীন এবং অপর পাশে শিল্পাচার্য জয়নাল আবেদীন বসে আছেন।
বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে তাঁর অনুসৃত নীতি-আদর্শ আজ কোথায় ? রবীন্দ্র জয়ন্তী হচ্ছে, নজরুল জয়ন্তী হচ্ছে- মঞ্চে যাঁরা বসে আছেন, আলোচনা করছেন, তাঁরা কেউ পড়াশোনা করছে কীনা জানি না। বক্তা বলছেন- রবীন্দ্র-কলা হলো সাহিত্যের একটি আধুনিক চেতনাবোধের ধারা। পাশের লোক বলছে- অনেক কলা খেয়েছি, রবীন্দ্রকলার নাম এই প্রথম শুনলাম। কোথায় পাওয়া যায়, স্বাদ কেমন এনিয়ে পারস্পরিক কিছু কথাবার্তা হয় নি¤œকন্ঠে। নানা ক্ষেত্রেই পচন ধরেছে। ব্যাপকভাবে উদাহরণ দিচ্ছি না। একটি ক্ষেত্রের কথা জানিবলেই বলছি। বেসরকারি কলেজের কোনো কোনো অধ্যক্ষ নিজেদের সবজান্তা ভাব পোষণ করেন, তিনি হতে পারেন অধ্যক্ষ, কোনো না কোনো বিষয়ে মাস্টার্স পাশ করেছেন, যখন কলেজে শিক্ষকদের সঙ্গে কথাবার্তা বা আচরণ করেন, মনে হয় অন্য বিষয়গুলোও তাঁর অধীত বিষয়। একবার কলেজের সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপন হবে। কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পদাধিকার বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অধ্যক্ষের চেয়ে বয়স কম হলেও মেধাবী, পড়াশোনা জানেন। অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানমালার একটি ছক নির্ধারণ করা হয়েছে, বাংলা বিভাগের সিনিয়র ম্যাডামকে চিঠির খসড়া তৈরি করতে বলা হলো। ম্যাডাম তা লিখে অধ্যক্ষের কাছে গিয়ে জমা দিলেন। অধ্যক্ষ তো প্রায় ক্ষেপেই গেলেন। বললেন- ‘আপনি বাংলার অধ্যাপিকা, চিঠির সম্বোধনে ‘সুধী’ লিখেছেন, সম্বোধনে তো ‘সুধি’ হয়, তাও জানেন না। বলেই নিজ হাতে ‘সুধী’ বানান কেটে ‘সুধি’ করে দেন। ম্যাডাম কিছু বলেন নি। অধ্যক্ষের মুখের উপর কথা বলা ধৃষ্টতা। চিঠি ছাপা হলো। প্রথম চিঠি নিয়ে অধ্যক্ষ সভাপতিকে দিতে গেলেন। সভাপতি অর্থাৎ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিঠির সম্বোধন দেখে বললেন- ‘অধ্যক্ষ সাব, এটা তো ভুল। ‘সুধি’ নয় ‘সুধী’। আমি এ চিঠি গ্রহণ করব না। নতুন করে চিঠি ছেপে তারপর বিলি করবেন। অধ্যক্ষ তখন বলছেন- ‘দেখেন স্যার দেশের শিক্ষার হাল অবস্থা। বাংলার ম্যাডামকে চিঠির খসড়া তৈরি করতে বললাম, তিনি এ ভুলটা করেছেন, আমি তেমনভাবে নজর দিইনি। কারণ বাঙলার অধ্যাপিকা লিখেছেন। আমি ঠিক করে চিঠি ছাপার ব্যবস্থা করছি।’ যথারীতি তাই হলো। কিন্তু বাংলার ম্যাডাম চিঠি দেখে অধ্যক্ষকে বললেন, ‘সুধি’ গেল কই। অধ্যক্ষ বললেন, আপনি চলে যাওয়ার পর অভিধান দেখে ‘সুধী’ বানানটিই ঠিক, তাই এভাবে চিঠি ছাপানো হয়েছে। ম্যাডাম ছাড়বার পাত্রী নন, তিনি বললেন, ‘এখানে যে ‘সুধি’ লেখা চিঠির বান্ডেল পড়ে আছে।’ লা জবাব, রজনীধোপার গাধা তো সেখানেই ভুল করেছিল এবং মার খেয়েছিল। ঠিক ব্যক্তিটিকে যদি মূল্যায়ন না করা হয়, যথাস্থানে যদি সম্মান বা মর্যাদা দেয়া না হয়, তবে কী অবস্থা হতে পারে তা সর্বক্ষেত্রেই বিরাজিত। আর ঠিক ব্যক্তিটিকে চিহ্নিত করতে যে যোগ্যতা লাগে সে ব্যক্তিও যেন এখন হারিয়ে গেছে। অপ্রাসঙ্গিক হলেও গল্পটি বলছি (ফেইসবুকের কল্যাণে)-
রাজা মৎস্য শিকারে যাবেন। জ্যোতিষকে ডেকে বললেন, আবহাওয়া কেমন থাকবে। জ্যোতিষ হিসাবনিকেশ করে জানাল- প্রকৃতির অবস্থা ভালো। কোনো ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাজা লোকজন নিয়ে মৎস্য শিকারে যাচ্ছেন। রাস্তায় এক কৃষক একটি ছাগল নিয়ে যাচ্ছে। রাজাকে মৎস্য শিকারে যেতে দেখে বলল- ‘রাজা, কিছুক্ষণের মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হবে, আপনি বিপদে পড়বেন।’ রাজা বলছেন- ‘আমার জ্যোতিষ বলেছে দিন ভালো যাবে।’ কিছুক্ষণের মধ্যে আকাশে কালো মেঘ দেখা দিল, ঝড়-সৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। কোনোপ্রকারে রাজা মৎস্য শিকার না করে চলে এলেন এবং জ্যোতিষকে গালিগালাজ করে পদচ্যুত করে কৃষককে ডেকে এনে এ পদে বসিয়ে দিলেন। রাজা কৃষককে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘তুমি কি করে জানলে ঝড়-বৃষ্টি হবে ?’ কৃষক বলল, ‘যখন ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখন আমার ছাগলটি ঘন ঘন প্র¯্রাব করতে থাকে, তখন বুঝতে পারি।’ রাজা তখন কৃষককে জ্যোতিষের পদ থেকে চ্যুত করে ছাগলকে ঐ পদে বসিয়ে দিল।
যদিও ক্ষোভের থেকে গল্পটি উল্লেখ করলাম, বর্তমানে বাংলাদেশের কোনো কোনো ক্ষেত্রে অযোগ্যতার ধারাটা প্রায় একরূপ। আগ বাড়িয়ে আর লিখছি না। আবার সহ্যও করতে পারছি না। নিজের মাংস নিজেই খেতে ইচ্ছে করছে। বিশেষত শিক্ষা ও সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে এক অরাজকতা চলছে। বলতে গেলেই তেড়ে আসবে।
আমরা তো বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি দেশ স্বাধীন করলেন। দেশের শাসনভার গ্রহণ করে যথামর্যাদায় যোগ্যব্যক্তিদের সম্মানিত স্থানে বসিয়ে ছিলেন- অধ্যাপক আবুল ফজল স্যারকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিজ্ঞানী ড. আবদুল মতিন স্যারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ড. জিল্লুর রহমানকে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ড. মাযহারুল ইসলামকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, ড. মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরীকে শিক্ষামন্ত্রী, অধ্যাপক কবীর চৌধুরীকে শিক্ষা সচিব, ডা. টি হোসেনকে স্বাস্থ্য সচিব, ড. এ আর মল্লিককে অর্থমন্ত্রী- কত বলব।
আগেও উল্লেখ করেছি- বঙ্গবন্ধু বলেছেন- ‘আমি কবি-সাহিত্যিক নই, আমি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন উদ্বোধন করতে পারি না। এ অঙ্গনের যথাব্যক্তির এ কাজ।’ অথচ আমরা তাঁর আদর্শের সৈনিক হিসেবে নিজেদের দাবী করি, কিন্তু অনুসরণ করি না। পোস্টারের কোণায় বঙ্গবন্ধু উঁকি মেরে চেয়ে দেখেন এ পোস্টারে তাঁর আদর্শিক সৈনিকের ছবিটি আকাশছোঁয়া।
জানি, আমার এ লেখায় অনেকেই মনে মনে গালমন্দ করবেন, সুযোগ বুঝে অপমান করবেন, কিন্তু আমি বলবই। কারণ, আমি বঙ্গবন্ধুর তথাকথিত আদর্শের সৈনিক হতে না পারলেও শ্রদ্ধায়-কৃতজ্ঞতায়-অহংকারে বঙ্গবন্ধু আমার হৃদয়ে ধারিত অমলিন মহাজন। যে দেশে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা অনুসরণ করা হয় না, যারা অনধিকারবশত দখলদারিত্বে অপসংস্কৃতি ও অপকর্মে লিপ্ত, তাদেরকে ঘৃণা করব না কেন ?
সময় শেষ হয়ে যায় না। বোধোদয় হওয়ার যথেষ্ট সময় আছে। আসুন, আমরা সঠিক পথে চলি, সঠিক কাজটি করি, সঠিক ব্যক্তিটিকে যথামর্যাদায় সম্মান জানাই, এতে নিজের লাভ, জাতির গৌরব বাড়বে বৈ কমবে না।
বলছিলাম-রজনীধোপার গাধার দোষটা কোথায় ছিল? চোর তাড়ানোর দায়িত্ব তার নয়, কুকুরও কি তার দায়িত্ব পালন করেছে ? সেও কাজটি ভালো করেনি।














সর্বশেষ সংবাদ
এক দফা দাবি আদায়ে কুমিল্লা মেডিকেলে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডাক্তারদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি
কেএফসি এখন রাজশাহী ও কুমিল্লা তে
কুমিল্লা আসছেন সিইসি
৭ দিনের রিমান্ডে আকাশ মণ্ডল
মাস্টারের প্রতি ক্ষোভের জের ধরেই জাহাজে সাত খুন
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
ডাকাতদের টার্গেট প্রবাসীর বাড়ি
কুমিল্লার লাকসামে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ; ককটেল বিস্ফোরণ
শত কোটি টাকার মানহানির মামলা
কুমিল্লা আসছেন সিইসি
দীর্ঘ তের বছর পর ২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২